প্রতিনিয়ত ধ্বংস হচ্ছে আমাদের বৃষ্টিবন
প্রকৃতিপ্রেমী ভ্রমণপিপাসুদের কাছে বনজঙ্গল অনেকটা তীর্থের মতো। একটু অবসর পেলেই গাট্টিবোঁচকা বেঁধে জঙ্গলের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েন।
সেই জঙ্গলে যত বৈচিত্র্য, ভ্রমণে ততই সুখ, আর তা যদি হয় কোনো ‘বৃষ্টিবন’ বা চিরহরিৎ অরণ্য! গাছের নিশ্ছিদ্র শামিয়ানায় ঢাকা বন। দিনরাত্রি অদ্ভুত গাঢ় এক অন্ধকার। তাতে বিচিত্র সব প্রাণীর বাস।
সবুজ পাতায় মেঘমল্লার আর পশুপাখির অপার্থিব সুরের গান। এক কথায় স্বর্গোদ্যান। এ তো গেল ঘুরে বেড়ানোর সুখ, প্রাকৃতিক গুরুত্বের কথাটা একবার ভাবুন তো! পৃথিবীর প্রাণ হলো বৃষ্টিবন। আমাদের এই গ্রহকে বাঁচিয়েই রেখেছে এই বন।
ভূভাগের ৬ শতাংশ বৃষ্টিবন, অথচ ৪০ শতাংশ অক্সিজেনের উৎস। তাহলেই বুঝুন! পৃথিবীর অর্ধেক প্রাণীর আবাসস্থল এসব বন। বিশুদ্ধ বাতাস আর পানির অন্যতম প্রধান উৎস।
জলবায়ুর স্থিতিশীলতার প্রধান অনুঘটক। আধুনিক ওষুধশিল্পের বিশাল একটি অংশ দাঁড়িয়ে আছে বৃষ্টিবনকে কেন্দ্র করে। জ্বালানি, খাবার বা আসবাবের কথা বলাই বাহুল্য।
ওয়ানট্রিপ্ল্যান্টেড ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, ১২০ কোটি মানুষ খাদ্যনিরাপত্তা, নির্মাণসামগ্রী, পানীয় জল ও শক্তির উৎসের জন্য বৃষ্টিবনের ওপর নির্ভরশীল।
কিন্তু প্রতিনিয়তই আমরা ধ্বংস করছি বৃষ্টিবন। প্রতি সেকেন্ডে ধ্বংস হচ্ছে দেড় হেক্টর বনভূমি। এক বছরে ৭৮ মিলিয়ন হেক্টর। এই বননিধন প্রতিরোধ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়া হ্রাস এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য সুন্দর পৃথিবী নিশ্চিত করে।
পৃথিবীর সর্ববৃহৎ বৃষ্টিবন আমাজন। পার্বত্য চট্টগ্রাম কিংবা লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান আমাদের বৃষ্টিবন। এসব বনাঞ্চলে বিলাসী ভ্রমণ করলেই শুধু হবে না, এগুলো রক্ষায় সম্মিলিতভাবে কাজ করাটাও জরুরি। এই বর্ষায় ঘুরতে যেতেই পারেন কোনো বৃষ্টিবনে। কিন্তু সেই সঙ্গে বন রক্ষার দায়িত্বটিও মাথায় রাখবেন।