পরিবেশ রক্ষায় বায়োব্যাটারির ব্যবহার বাড়াতে হবে
বর্তমানে বিজ্ঞানীরা ঝুঁকছেন বায়োব্যাটারির দিকে। বায়োব্যাটারির মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে নেমেছেন তারা। আশা করছেন, বায়োব্যাটারি পরিবেশ রক্ষার জন্য ভালো হাতিয়ার হতে পারে।
কী এই বায়োব্যাটারি? এগুলো হলো এমন শক্তি উৎপাদনে সক্ষম বস্তু, যা জৈবশক্তিকে ব্যবহার করে। খুব বেশি শক্তি উৎপাদন করতে না পারলেও পরিবেশ রক্ষার জন্য এগুলো ভালো।
শক্তি উৎপাদনে এখন এমন উপাদান ব্যবহার করার কথা বলা হচ্ছে যা পরিচ্ছন্ন, কার্যকর এবং পরিবেশ দূষণ করবে না, অথবা কম করবে। তবে এখন এমন এক বায়োব্যাটারি তৈরি করতে পারা গেছে, যা একই সঙ্গে হালকা এবং তৈরি করতে পারে উলেস্নখযোগ্য পরিমাণে শক্তি। এগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে আমাদের নিত্যদিনের ব্যবহার্য সেলফোনগুলোতেই। আর এই ব্যাটারির শক্তি জোগাবে চিনি!
ভার্জিনিয়া টেকের গবেষক পার্সিভাল ঝ্যাং এবং ঝিগুয়াং ঝু এই নতুন বায়োব্যাটারি তৈরি করেছেন, যা সাধারণ লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারিকে টেক্কা দিতে সক্ষম হবে। শরীরে মেটাবলিজম বা বিপাক ক্রিয়ার মাধ্যমে চিনি থেকে শক্তি উৎপাদন হয়। সেখানে চিনি থেকে তৈরি হয় কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং পানি, আরও তৈরি হয় ইলেকট্রন।
বায়োব্যাটারিতেও সেই একই প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় তৈরি হওয়া ইলেকট্রন জোগাবে ব্যাটারির শক্তি। এই ব্যাটারি যেহেতু তৈরি হচ্ছে সম্পূর্ণ জৈবিক উপাদান থেকে, সুতরাং এগুলো হবে একেবারেই নিরাপদ ও নবায়নযোগ্য।
সাধারণত আমরা যে সব ব্যাটারি ব্যবহার করি, সেগুলো তৈরি করতে এবং সচল রাখতে ব্যবহার করতে হয় বিভিন্ন ধাতু ও কৃত্রিম রাসায়নিক, যা পরিবেশ এবং মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাদের তুলনায় বায়োব্যাটারি অনেক ভালো শক্তির উৎস।
শুধু তাই নয়, এসব ব্যাটারির চার্জও থাকবে সাধারণ লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির চেয়ে বেশি সময় ধরে। আপনার বর্তমান ফোনের ব্যাটারি যদি রিচার্জ করার পর একদিন চলে, তবে এই বায়োব্যাটারি ব্যবহারে ফোন ১০ দিন চলবে অনায়াসে!
কী করে এতটা কার্যকর হয়ে উঠতে পারে একটি বায়োব্যাটারি? এ ক্ষেত্রে কাজে আসছে আরও একটি জৈবিক প্রক্রিয়া। বিভিন্ন ধরনের ১২টি এনজাইম ব্যবহার করে এই ব্যাটারির বিক্রিয়া স্থিতিশীল ও কার্যকর রাখা হয়।
আর মানবশরীরের চেয়ে অনেক কম পরিমাণে এনজাইম এখানে ব্যবহৃত হয় বলে এই প্রক্রিয়াটি আরও বেশি শক্তিশালী। বড় দুটি বাধা অতিক্রম করতে হতে পারে বিজ্ঞানীদের।
এক হলো- এই ব্যাটারির আয়ু অনেক কম, দ্বিতীয়ত, কিছু কিছু যন্ত্রে ব্যবহারের জন্য এগুলো এখনো উপযুক্ত নয়। এসব বাধা অতিক্রম করে উঠতে পারলেই চিনি দিয়ে চালিত এই ব্যাটারি আমরা ব্যবহার করতে পারব দৈনন্দিন জীবনেই।