পরিবেশ ও জলবায়ু উন্নয়নে আমাদের করণীয়
ফাতেমা আক্তার মুন্নী
৯ম শ্রেণী
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমি
বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। এই রাষ্ট্রের জাতির পিতা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশ হলো বঙ্গবন্ধুর দেশ। আর পৃথিবীর মানুষেরা পরিবেশ ও জলবায়ু নিয়ে চিন্তা করার পূর্বেই তিনি এদেশের পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ে চিন্তা করেছেন।
তাইতো তিনি জেলখানায় বসে তার লেখা “অসমাপত আত্বজীবনী” তে তিনি পরিবেশ ও গাছপালাকে ভালবাসার কথা জানিয়েছেন। স্বাধীনতার পর তিনি এদেশের ক্ষমতা গ্রহনের পর পর তি নিজ হাতে বঙ্গভবনে গাছ লাগিয়েছেন এবং বাড়ীর আঙ্গিনায় দেশের সকল মানুষকে গাছ লাগানোর অনুরোধ করেছেন।
তিনিই ঘূর্ণিঝড় ও জ্বলোচ্ছ্বাস হতে উপকূলবাসীকে রক্ষার জন্য বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলে গাছ লাগানোর মাধ্যমে “উপকূলীয় সবুজ বেষ্টণী” তৈয়ার করার নির্শ প্রদান করেন, যার সুফল বর্তমানে আমরা পাচ্ছি।
সভ্যতারঅগ্রগতির সঙ্গেসঙ্গে আমাদের চারপাশের পরিবেশ পরিবর্তন হচ্ছে। মানুষ তার প্রয়োজনে পরিবেশকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করছে। যার ফলে পরিবেশে বিভিন্ন ধরনের দূষণ দেখা দিচ্ছে।
যা মানুষসহ পরিবেশের নানা ধরনের ক্ষতি সাধন করে। আর এ ধরনের দূষণ থেকে আমাদের দেশকে মুক্ত করে কিভাবে উন্নয়ন করা যায় সে কাজ শুরু করা এখনি উচিৎ।
পরিবেশ উন্নয়ন করতে হলে প্রথমে প্রয়োজন একটি সুস্থ্য পরিবেশ। সুস্থ্য পরিবেশের জন্য মাটি, পনি ও বায়ু দূষণ যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বাড়ি-ঘর, স্কুল ও রাস্তার পাশে গাছপালা লাগাতে হবে।
খোলা জায়গায় যেখানে সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করা বন্ধ করতে হবে। শিল্প কারখানা থেকে ধোয়া বের হয়ে যেন দূষণ না ঘটে সেজন্যে ধোয়া বায়ুতে ছড়িয়ে পড়ার আগেই আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে একে দূষণমুক্ত করতে হবে।
প্লাস্টিক, পলিথিন ইত্যাদিও ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং এসবের পরিবর্তে পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার বাড়াতে হবে। কীটনাসক, রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমাতে হবে এবং প্রাকৃতিক উপায়ে পোকা মাকড় দমন করতে হবে।
ঘর বাড়ি ময়লা আবর্জনা ও খাদ্য দ্রব্যের উচ্ছিষ্ট যেখানে সেখানে না ফেলে কোন নির্দিষ্ট স্থানে গর্তে ফেলে মাটি চাপা দিতে হবে। বন সংরক্ষণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, এগুলো জীবের আবাস্থল।
এছাড়াও জনগণকে দূষণের ক্ষতিকারক দিক এবং পরিবেশ সংরক্ষণের উপায় সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। আর এভাবে গড়ে উঠবে একটি সুস্থ্য পরিবেশের উন্নয়ন। কারন, সুস্থ্য পরিবেশ ছাড়া কোন পরিবেশে উন্নয়ন সম্ভব নয়।
আর পরিবেশের উন্নয়নের অন্যতম উপায় হলো পরিবেশের ভারসাম্য ও পরিবেশ সংরক্ষণের উপায় সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা।
পরিবেশ দূষণে বায়ুমন্ডলে গ্রীণহাউজ গ্যাস যেমন ক্লোফ্লোরো কার্বণ, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড, কার্বণ ডাই অক্সাইড, ভূমিতলের ওজন ইত্যাদি গ্যাসের পরিমান বেড়ে যায়। আর সূর্য রশ্মি পৃথিবীতে যে তাপ উৎপন্ন করে এ সকল গ্রীণহাউজ গ্যাস সে তাপ মহাশূণ্যে যেতে বাধা প্রদান করে বায়ুমন্ডলকে উত্তপ্ত করছে।
ফলে পৃথিবীর জলবায়ুর পরিবর্তণ ঘটছে এবং এর ক্ষতিকর প্রভাবে বিশ্বে ঘূর্ণীঝড়, জ্বলোছ্বাস, ভয়াবহ বন্যা, খরা, দাবাদাহ, বনদাহ মারাত্বকভাবে বেড়ে যাচ্ছে।
তাই দূষণ কমিয়ে জলবায়ুর উন্নয়ন আমাদের দেশের জন্যে অধিক গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের জলবায়ু উষ্ণ ও আর্দ্র। আমাদের দেশেও বিভিন্ন ধরনের শিল্প বিপ্লব, গাছপালা উচ্ছেদ ও বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে পরিবেশে বিভিন্ন ধরনের দূর্যোগ দেখা দিচ্ছে।
আমাদের উচিত অধিক পরিমাণে গাছপালা লাগানো এবং বিভিন্ন করাখানার ধোয়া যাতে বায়ু মিশতে না পারে তা আধুনিক পসার্য়ের মাধ্যমে পরিশোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। যার ফলে বায়ুমন্ডলে দূষণ হবে না এবং বড় বড় প্রাকৃতিক দূর্যোগ কমানো সম্ভব হবে। ফলে ক্ষয়ক্ষতি কম হবে এবং জলবায়ুতে ভারসাম্য সঠিকভাবে বজায় থাকবে।
আমরা ছাত্রছাত্রীগণ স্কুল পর্যায় হতে পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ করে জলবায়ুর উন্নয়নের কার্ক্রম গ্রহণ করলে এ দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনে সম্ভব হবে।
আপনারা চাইলে আপনাদের স্কুল-কলেজের সন্তানদের লেখা পাঠাতে পারেন।
লেখা পাঠানোর ঠিকানা –
info@greenpage.com.bd
greenpagenewsportal@gmail.com