টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় দীর্ঘস্থায়ী বন্যার পর জমিতে এবার কচুরিপানার বিস্তার ঘটেছে। এতে চাষিদের ফসলের আবাদ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে শর্ষের আবাদ কম হতে পারে বলে চাষিদের আশঙ্কা। কারণ, নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় শর্ষের রোপণ শেষ করতে হয়।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে শর্ষের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় এ বছর উপজেলার কৃষিজমি থেকে দেরিতে পানি সরছে। পাশাপাশি যেসব জমি থেকে পানি সরেছে, সেখানে প্রচুর পরিমাণে কচুরিপানা রয়েছে। ফলে জমি থেকে কচুরিপানা ও আগাছা পরিষ্কার করে চাষিরা এখনো জমি চাষের উপযোগী করতে পারেননি। এতে ভরা মৌসুমেও মির্জাপুরে শর্ষের আবাদ শুরু হয়নি।
উপজেলার ফতেপুর, ভাতগ্রাম ও ভাওড়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে দেখা গেছে, চাষিরা শর্ষে আবাদের উপযোগী করতে খেত থেকে কচুরিপানা অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। পাশাপাশি আগাছাও পরিষ্কার করছেন। পরিবারের সবাই মাঠে নেমে পড়েছেন। অনেকে শ্রমিক দিয়ে কাজ করাচ্ছেন।
ফতেপুর ইউনিয়নের থলপাড়া গ্রামের কায়েস খান বলেন, ‘দীর্ঘ বন্যায় কস্তুরিপানা (কচুরিপানা) আইসা আমার ৩০ শতাংশ জমিতে ভইর্যা যায়। অহন দুদিন ধইর্যা জনপ্রতি ৩৫০ টাকা কইর্যা চারজন কামলা (শ্রমিক) নিয়্যা খ্যাত পরিষ্কার করতাছি। এইবার অহনও সরষা আবাদ করা পারলাম না। কস্তুরিপানার জন্য কামলা নিয়াতে বাড়তি টাকা যাইতাছে। না জানি এইবার কেমন আবাদ অয়।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মশিউর রহমান বলেন, দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় চাষিরা এ বছর আগাম সবজির আবাদ করতে পারেননি। এখনো অনেক জমিতে হাঁটুপানি। পাশাপাশি জমিতে কচুরিপানার কারণে চাষিরা শর্ষে আবাদের উপযোগী করতে পারছেন না। সাধারণত ১৫ নভেম্বরের মধ্যে শর্ষের আবাদ শেষ করতে হয়। কিন্তু এ বছর তা করা যাবে না। এতে শর্ষের আবাদের লক্ষ্যমাত্র অর্জন না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।