ধাপে ধাপে বন্ধ করা হবে পলিথিনের ব্যবহার
রাজধানীতে সুপারশপে প্রাথমিকভাবে পলিথিন ও পলিপ্রপাইলিন ব্যাগ ব্যবহার নিষেদ্ধের পর ধাপে ধাপে ক্ষতিকর পলিথিন ব্যাগের উপর বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হবে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বৃহস্পতিবার এ কথা বলেছেন।
সকালে মোহাম্মদপুর টাউন হল উত্তর সিটি করপোরেশন কাঁচা বাজারে পলিথিন ও পলিপ্রপাইলিন ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ বাস্তবায়নে ক্লিন-আপ কার্যক্রম উদ্বোধন ও বিকল্প সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘পলিথিন নতুন করে নিষেধ করার কিছু নেই। ২০০২ সালের আইন থেকেই এটি নিষিদ্ধ করা আছে। তবে এখনই সারা দেশে পলিথিন ব্যবহার বন্ধ হবে না।’
পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে তিন ধাপের পরিকল্পনার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘প্রথম ধাপে ১ অক্টোবর থেকে ঢাকা কেন্দ্রিক সুপারশপগুলোয় এই ব্যাগ বন্ধ করা হয়েছে। তবে এটি সরকারের একক সিদ্ধান্ত নয়।
দ্বিতীয় ধাপে ১ নভেম্বর থেকে কাঁচা বাজারগুলোতে পলিথিন ও পলিপ্রপাইলিন ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং পলিথিন উৎপাদনকারী কারখানায় অভিযান পরিচালনা করা হবে। তখন আইনের প্রয়োগও হবে।
‘রিসাইকেল হলো শেষ ধাপ, যখন আর কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশে রিসাইকেল হচ্ছে খুবই প্রাথমিক পর্যায়ে। কেমিক্যাল ম্যানেজমেন্ট করে রিসাইকেল হচ্ছে না। তাপ দিয়ে গলিয়ে আবার নতুন ভাবে তৈরি হচ্ছে। এটিকে রিসাইকেল শিল্প বলা যায় না।’
এখনই সব ধরনের প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘শুধু আইইএ নিষিদ্ধ প্লাস্টিক পলিথিন ও পলিপ্রপাইলিনের উপর আমাদের কার্যক্রম চলছে।’
অভিযানে পলিথিন উৎপাদানকারীদের শাস্তি দেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘পলিথিন ব্যবহার বন্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে কারণ সতর্ক করা এবং কঠোর হওয়ার সময় পার হয়ে গেছে। তবে শাস্তি দেওয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়। ক্ষতিকর এই ব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। তবে ভোক্তা পর্যায়েও সচেতনতা দরকার।’
পলিথিনের বিকল্প নতুন করে আবিষ্কারের প্রয়োজন নেই মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, ‘পলিথিনের বিকল্প প্রথাগতভাবেই আছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোশিয়েশন ছাড়াও আরও ২০টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা করা হয়েছে যারা বিকল্প নিয়ে কাজ করছে।
এছাড়া সুপারশপ কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ব্যাগের সংখ্যার তালিকা দেওয়া হয়েছে এবং যোগানের ব্যবস্থাও হয়েছে। তাই বিকল্প নেই এই তর্ক শুরুর সুযোগ নেই। চাহিদা থাকলে সরবারাহও আসবে।’
২০০৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সফলভাবেই পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার ও উৎপাদন নিয়ন্ত্রণের উদাহরণ দিয়ে অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এরপর শুধু উৎপাদনকারীর জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে। বাজারে আর অভিযান চালানো হয়নি। ফলে বাজারে পলিথিন ব্যবহার বেড়েছে।
মোহাম্মদপুর টাউন হল উত্তর সিটি করপোরেশন কাঁচা বাজারে ৩১১টি দোকানের মধ্যে ১০টি দোকান পলিথিন ব্যাগ ও পলিথিনের অন্যান্য সামগ্রী সরবারহ করে। তাদের বিরুদ্ধে দোকান মালিক সভাপতি ও অন্যান্য ব্যবস্থা নেবে বলেও জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে কাঁচা বাজার সমিতির সভাপতি লুৎফর রহমানের হাতে বিকল্প পাট, কাপড় ও কাগজের ব্যাগ তুলে দেওয়া হয়।