দূষণ নিয়ন্ত্রণে পড়শি রাজ্যে গাছ লাগানো হবে
পড়শি রাজ্য নিয়ম মানছে না। চলছে দূষণ পরীক্ষায় পাশ না করা বহু গাড়ি। সে হাওয়া ঢুকছে বাংলায়। তাতেই দূষিত হচ্ছে বঙ্গের বাতাস। কল্পনা নয়, প্রমাণিত সত্য। সবার আগে বলেছিল আইআইটি দিল্লি।
এবার বলল বিশ্ব ব্যাংক। সম্প্রতি কাঠমাণ্ডুতে পরিবেশ সংক্রান্ত সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছিলেন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান, রাজ্য পরিবেশ দপ্তরের প্রধান সচিব। বিশ্ব ব্যাংক প্রতিনিধিরা সেখানে মডেল করে দেখিয়ে দেয় কীভাবে বিহার, ঝাড়খণ্ড এমনকী, দিল্লির দূষিত হাওয়া ঢুকছে বাংলায়।
বঙ্গের দূষণের ৩০ শতাংশই পড়শি রাজ্য থেকে। সেখানকার ফসল পোড়ানো দূষিত বাতাস, গাড়ির ধোঁয়া, কলকারখানার বিষবাষ্প ঢুকছে বাংলায়। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যার কল্যাণ রুদ্র জানিয়েছেন, জুন মাসের মধ্যে ২৭০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে লাগানো হবে গাছ।
পরিবেশ দপ্তরের প্রধান সচিব রোশনি সেনের কথায়, পশ্চিমবঙ্গে পশ্চিম প্রান্তে যে ধরনের গাছ তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে সেগুলোই লাগানো হবে। বড় পাতার সে সমস্ত গাছে আটকাবে বাতাসের কার্বন। ভিন রাজ্য থেকে ছড়ানো এ দূষণের পোশাকি নাম ‘ট্রান্স বাউন্ডারি পলিউশন’।
কাঠমাণ্ডুর রিপোর্ট দেখে মন্ত্রী মানস ভুইঁয়া জানিয়েছেন, আমাদের কথা কেউ বিশ্বাস করত না। এবার সেটাই হাতেকলমে দেখাল বিশ্ব ব্যাংক। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে ঝাড়গ্রাম থেকে বীরভূম পর্যন্ত বাংলার ২৭০ কিলোমিটার সীমান্ত জুড়ে লাগানো হবে গাছ।
মন্ত্রীর কথায় এখানে গাছের পাতায় যে ধরণের ধুলো থাকে ঝাড়গ্রামের দিকে গেলে দেখা যায় সেখানকার গাছের পাতায় দ্বিগুণ ধুলো। নিকষ কালো সে ধুলো আদতে কার্বনের গুড়ো। প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশের আগেই আটকে দিয়েছে গাছ। নিউ ইয়র্ক শহরের মতো শহুরে বাগান হবে কলকাতায়।
পরিবেশ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জানিয়েছেন, ‘আমরা পুরসভার কাছে জায়গা চেয়েছি। প্রতিটি জায়গায় মহিরূহ লাগানো হবে। গাছ লাগানোর আগে পড়শি রাজ্যগুলোর সঙ্গে বৈঠক করা হবে।’
মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জানিয়েছেন, সে বৈঠক পরিচালনা করার জন্য অনুরোধ করা হবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সঙ্গে বৈঠক হবে পড়শি রাজ্যগুলোর। ইতিমধ্যেই প্রাথমিক রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের মতে দূষণের জন্য দায়ী ভারতীয় গাঙ্গেয় সমভূমির ১১ টি রাজ্য ।
তার মধ্যে দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ডকে সবচেয়ে বড় দোষী ঠাওরেছেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান। পরিবেশবিদরা আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল, এই শতাব্দীতে যেন তিলোত্তমার তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের বেশি না বাড়ে।
ইতিমধ্যেই কলকাতার তাপমাত্রা ২.৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছে। দূষণ ঠেকাতে আর দেরি করতে চাইছে না পরিবেশ দপ্তর।