31 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
সকাল ১১:১৩ | ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
দূষণে নাকাল গাজীপুরের ৫০ পরিবার
জীবনধারা পরিবেশ দূষণ

দূষণে নাকাল গাজীপুরের ৫০ পরিবার

দূষণে নাকাল গাজীপুরের ৫০ পরিবার

গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি পোশাক কারখানার পরিবেশগত দূষণের শিকার হচ্ছেন অর্ধশত পরিবারের সদস্যরা। গত আট বছর ধরে পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসনসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে এ ব্যাপারে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না পরিবারগুলো।

প্রতিনিয়ত দূষণের শিকার হচ্ছে পরিবারগুলোর শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী, বয়স্ক নারী-পুরুষ, শিক্ষার্থী এবং সাধারণ বাসিন্দারা। দূষণের কারণে অনেকের বাসাবাড়ির দরজা-জানালা দিন-রাত বন্ধ রাখতে হয়। এ ছাড়া জেনারেটরের বিকট শব্দেও অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে এলাকার বাসিন্দারা।

ভুক্তভোগীদের একজন ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের মোগরখাল এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন সরকার। তার বাসার পাশের কারখানাটির দূষণ থেকে রক্ষা পেতে ২০১৬ সাল থেকে শুরু করে এ বছরের ২৩ মে পর্যন্ত কয়েক দফায় পরিবেশ অধিদপ্তর ও গাজীপুর জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন।

তার ওইসব আবেদনপত্রে উল্লিখিত তথ্য এবং এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মোগরখাল এলাকার ফার্দার গার্মেন্টসের পূর্বপাশে বহু বছর আগে থেকে জনবসতি রয়েছে। বাসাবাড়ির দেয়াল ঘেঁষে গড়ে তোলা হয়েছে ওই গার্মেন্টস।

সেখানে কাটা কাপড়ের ক্ষুদ্র কণা, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তুলার কণা, দূষিত বায়ু, ধোঁয়া ও ধুলাবালি বাতাসে উড়ে এসে বাড়িঘরে প্রবেশ করছে। রাত-দিন বাতাসের সঙ্গে ভেসে আসা এসব দূষিত কণা আশপাশের বাসাবাড়ির মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে দেহের ভেতর ঢুকে পড়ায় অ্যাজমা ও এলার্জির মতো বিভিন্ন রোগ দেখা দিচ্ছে।



কারখানার জেনারেটরের উচ্চৈঃশব্দের কারণে শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিকভাবে লেখাপড়া করতে পারছে না আর বয়স্কদের হৃদযন্ত্রের সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

জসিম উদ্দিন সরকারের দাবি, এ দূষণের শিকার হয়ে দীর্ঘদিন রোগে ভুগে তার বাবা সাহাজউদ্দিন সরকার দুই বছর আগে মারা যান। সব মিলিয়ে দুর্ভোগের কারণে বাপ-দাদার ভিটামাটি ছাড়ার উপক্রম হয়েছে বেশ কিছু পরিবারের।

জসিম উদ্দিন সরকার বলেন, নানা দপ্তরে আবেদন নিবেদন করেও কোনো ফল পাননি। বরং বর্তমানে নতুন করে বয়লার বসিয়ে এলাকার পরিবেশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে।

আশপাশের গাছপালাও মরে যাচ্ছে। এসবের প্রতিকার চেয়ে গাজীপুরের পরিবেশ অধিদপ্তরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে, ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে এবং ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে আবেদন করেন তিনি। অভিযোগের পর পরিবেশ অধিদপ্তরের তদন্ত টিম বিভিন্ন সময়ে ঘটনাস্থলে তদন্তে যায়।

কিন্তু এলাকাবাসী কোনো প্রতিকার পায়নি। উল্টো গার্মেন্টস কর্র্তৃপক্ষ ও ভবন মালিকরা আশপাশের লোকজনকে পৈতৃক ভিটা থেকে উচ্ছেদ করতে নানা ষড়যন্ত্র করছে।

তিনি আরো বলেন, তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ঢাকা কার্যালয় থেকে ফার্দার গার্মেন্টসকে একটি নোটিস দেয়। তাতে কারখানার শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ করে পরিবেশগত ছাড়পত্র নবায়ন গ্রহণ না করা পর্যন্ত কারখানার কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরও স্থানীয় প্রশাসন কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

এমন পরিস্থিতিতে গত মাসে জেলা প্রশাসক বরাবর নতুন করে অভিযোগ দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ভুক্তভোগী জসিম উদ্দিন সরকারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের গাজীপুর কার্যালয়ের উপপরিচালক নয়ন মিয়া বলেন, ‘অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নিয়ম অনুযায়ী কারখানার বিরুদ্ধে এ বিষয়ে মামলা করা হচ্ছে। আইনি প্রক্রিয়ায় এর সুরাহা হবে।’

এ বিষয়ে ফার্দার গার্মেন্টসের ব্যবস্থাপক মো. সোহেল রানা বলেন, বিরোধপূর্ণ এ বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর যেসব পর্যবেক্ষণ দিয়েছে তা কারখানার পক্ষ থেকে পূরণ করা হয়েছে। কারও ক্ষতি করা তাদের উদ্দেশ্য নয়। কতৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত