ঢাকায় আর্ন্তজাতিক পরিবার দিবস-২০২৪ পালিত
গত ১৫ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার ছিল আর্ন্তজাতিক পরিবার দিবস। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট (WBBT)সহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এনজিও, ক্রিড়া সংগঠন ও পরিবেশবাদী সংগঠন, নিউজ মিডিয়া এ উপলক্ষ্যে গত ১৬ মে, ২০২৪ খ্রি: তারিখ ঢাকায় এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। (খবর-প্রেস রিলিজ)।

পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন প্রতিষ্ঠান হলো পরিবার। বিশ্বব্যাপী পরিবর্তিত অবস্থার সাথে পরিবারগুলো যেনো খাপ খাওয়াতে পারে সে লক্ষ্যে প্রতিবছর পরিবার দিবস পালন করা হয় এবং এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিপাদ্য নির্ধারন করা হয়। এ বছর জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর ফলে পরিবারের উপর প্রভাবের বিষয়টিতে গুরুতারোপ করে পরিবার দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ÒFamilies and Climate ChangeÓ বাংলায় প্রতিপাদ্য “পরিবার এবং জলবায়ু”।
গত ১৬ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, সকাল ১১.০০ টায় দিবসটিকে প্রাধান্য দিয়ে “ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট” সংস্থার কৈবর্ত সভাকক্ষে “পরিবারের স্বাস্থ্য নিশ্চিতে হেল্থ প্রমোশন ফাউন্ডেশন চাই” শীর্ষক একটি সভার আয়োজন করা হয়। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা ডা. মো.মিঠুনে সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটিতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় কন্যা শিশু এডভোকেসি ফোরামের যুগ্ম সচিব নাসিমা আক্তার জলি, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার বিশেষ প্রতিনিধি মাহফুজা জেসমিন, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের কোষাধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম সুজন এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের কর্মসূচি প্রধান সৈয়দা অনন্যা রহমান। উক্ত সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির কমিউনিকেশন অফিসার শানজিদা আক্তার।
মূল প্রবন্ধে শানজিদা আক্তার বলেন, বর্তমানে সারা বিশ্বেই জলবায়ুর দ্রুত পরিবর্তন বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলবায়ুর এই দ্রুত পরিবর্তনের জন্য পরিবেশ, জনস্বাস্থ্যের পাশাপাশি পরিবারগুলোও নানাভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। জলবায়ুর দ্রুত পরিবর্তনের জন্য পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধি, খাদ্য ও পুষ্টির অভাব এবং অর্থনৈতিক সমস্যাসহ নানা ধরণের নতুন নতুন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এ বাস্তবতায় একটি পরিকল্পিত ও সুসংগঠিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সম্মিলিতভাবে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করে কার্যকর সমাধানের পথে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ উন্নয়নে হেল্থ প্রমোশন ফাউন্ডেশন বিশ্বের ১১টি দেশে গবেষণা, এডভোকেসি, নেটওয়ার্কিংসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে সফলতার পরিচয় দিয়েছে। পরিবারের সদস্যদের ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে এবং দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে পরিত্রাণ পেতে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রয়োজন।
বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্য একটি ব্যাপক বিষয়। অবশ্যই স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসাকে আলাদা করতে হবে। সমাজের নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ সকল শ্রেনীর মানুষের সু-স্বাস্থ্য নিশ্চিতে শুধুমাত্র ঔষধ বা চিকিৎসা নির্ভরতা নয় বরং রোগ প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পণ্যেসমুহের উপর করারোপ করে এই ব্যবস্থায় অর্থায়ন করা সম্ভব। এতে করে একদিকে ক্ষতিকর পণ্যর ব্যবহার কমবে অপরদিকে জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন ঘটবে।
বক্তারা আরো বলেন, বর্তমানে জলবায়ু বিপর্যয় বড় সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ আকার ধারন করতে পারে। অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে জলবায়ু বিপর্যয় ঘটছে যা তাপদাহের অন্যতম কারণ। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে কৃষি জমির উর্বরতা কমার কারনে ভবিষ্যতে খাদ্যের দাম ৩০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। মানুষের অভ্যাসের যে পরিবর্তন হচ্ছে সেটা যেন নেতিবাচক না হয় এবং স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে সে দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। এক্ষেত্রে হেঁটে যাতায়াতের জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি, মাঠ-পার্ক ও উন্মুক্ত স্থান বৃদ্ধিসহ পরিবেশ বান্ধব জীবন যাপন ও নিরাপদ খাদ্য গ্রহনের পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন। এসকল বিষয়গুলো নিশ্চিতে সহায়ক হবে হেল্থ প্রমোশন ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি এবং ব্যক্তিগত সংগঠনগুলোকে সমন্বয় করে সার্বিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
উক্ত সভায় রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়, ধানমন্ডি কচিকন্ঠ হাই স্কুল, ঢাকা আইডিয়ার ক্যাডেট স্কুল, বেঙ্গলী মিডিয়াম হাই স্কুল, কনফিডেন্ট মেমরিয়াল হাই স্কুল, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ছায়াতল বাংলাদশ, চুপড়িয়া মহিলা সংস্থা, সৌহার্দ নারী কল্যান সংস্থা, সূচনা ফাউন্ডেশন, কেরানীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্স ডেভলপমেন্ট সোস্যাইটি, শিশুদের মুক্ত বায়ু সেবন সংস্থা, হেল্প ফাউন্ডেশন, মানবিক সাহায্য সংস্থা (এমএসএস), ডিইপি, ক্রিয়েটিভ সোসাইটি ডেভলপমেন্ট সেন্টার, নবনীতা, হিড বাংলাদেশ, ডিআইসিএস, তেতুলতলা মাঠ আন্দোলন পরিষদ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, দীপ্ত ফাউন্ডেশন, এইড ফাউন্ডেশন, টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল, পূর্নিমা মহিলা সংস্থা, কমিউনিটি গ্রীন হেরিটেক এন্ড ডেভলপমেন্ট সোসাইটি, ভিলেজ ইনটিগ্রেটেড ডেভলপমেন্ট এসোসিয়েশন, ডিএসকে, লাভ দি নেইবারহুড, দৈনিক সোনালী খবর, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ এর প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।