টেকনাফ সংলগ্ন নাফ মোহনা হলো সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা
জীববৈচিত্র্য রক্ষা, মৎস্য সম্পদ আহরণ, সুনীল অর্থনীতি সমৃদ্ধ করাসহ বেশ কয়েকটি লক্ষ্য সামনে রেখে টেকনাফ সংলগ্ন নাফ মোহনার জলভাগের একটি এলাকাকে ‘নাফ সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা’ ঘোষণা করেছে সরকার।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জারি করা এ সংক্রান্ত গেজেটে বলা হয়েছে, টেকনাফ সংলগ্ন সাগরের ৪৬ মিটার পর্যন্ত গভীরতায় ৭৩৪ দশমিক ১৭ বর্গকিলোমিটার এলাকা সংরক্ষণের আওতায় থাকবে।
এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর বলেন, ‘নাফ মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া ঘোষণার ফলে বৈশ্বিকভাবে হুমকির সম্মুখীন গোলাপী ডলফিন, হাঙ্গর, রে মাছ, সামুদ্রিক কাছিম, সামুদ্রিক পাখি, প্রবাল, সামুদ্রিক ঘাস, শৈবালসহ সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ও তাদের আবাসস্থল সংরক্ষণে সহায়ক হবে।
পাশাপাশি সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের টেকসই আহরণের মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবিকার মানোন্নয়ন, জাতীয় সুনীল অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করা এবং সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণার আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনেও এই ঘোষণা কাজে আসবে।’
মন্ত্রণালয়ের ব্লু-ইকোনমি অনুবিভাগের যুগ্মসচিব আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুরের সই করা গেজেটটি প্রকাশ করা হয়।
গেজেটে সংরক্ষিত এলাকার সীমানা এভাবে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে- দেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থিত সামুদ্রিক মৎস্য জলসীমা ও তৎসংলগ্ন নাফ নদীর মোহনা।
এর চৌহদ্দি হল- উত্তরে বঙ্গোপসাগর ও টেকনাফ উপদ্বীপ (পেনিনসুলা), দক্ষিণ ও পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর এবং পূর্বে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যবর্তী নাফ নদীর মধ্যরেখা ও টেকনাফ উপদ্বীপ।
সচিব বেলাল হায়দর জানান, দেশে এখন সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা চারটি– ‘সেন্টমার্টিন মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া’, ‘নিঝুম দ্বীপ মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া’ এবং ‘সোয়াচ অব নো-গ্রাউন্ড মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া’। এছাড়া কক্সবাজার পশ্চিমে একটি মেরিন রিজার্ভ রয়েছে।
২০২২ সালে সমুদ্র সম্পদের টেকসই আহরণের লক্ষ্যে বঙ্গোপসাগরের ১ হাজার ৭৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে ‘সেন্ট মার্টিন মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া’ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। সেন্ট মার্টিন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ৭০ মিটার পর্যন্ত গভীরে ওই এলাকার সীমানা চিহ্নিত করা হয়।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে হুমকির মুখে থাকা প্রবাল, গোলাপী ডলফিন, হাঙ্গর, রে মাছ, সামুদ্রিক কাছিম, সামুদ্রিক পাখি, সামুদ্রিক ঘাস, সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য এবং এদের আবাসস্থল সংরক্ষণ, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের টেকসই আহরণের মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবিকার মানোন্নয়ন, ব্লু ইকোনমি সমৃদ্ধকরণ ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি-১৪) অর্জনের লক্ষ্যে এই সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে।