টিলা ও ছড়া থেকে অবাধে চলছে সিলিকা বালু উত্তোলন
হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটের পানছড়ি পাহাড়ি এলাকার টিলা ও ছড়া থেকে অবাধে চলছে সিলিকা বালু উত্তোলন। ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে ট্রাক্টরে ভরে বিক্রি করা হচ্ছে। দিনের পর দিন অবৈধভাবে বালু তোলার ফলে বেহাল হয়েছে ওই এলাকার রাস্তাঘাট।
শুধু তাই নয়, বালু তোলায় হুমকির মুখে পড়েছে পানছড়ি আশ্রয়ণ এলাকাসহ আশপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশ। পানছড়ি জেলার চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা ইউনিয়নের রঘুনন্দন পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত।
জানা গেছে, পানছড়ি মৌজার ৮নং বস্তি এলাকার গাঁধাছড়ায় ও খাসবাড়ি টিলায় বিকট শব্দে চলছে অর্ধডজন ড্রেজার মেশিন। প্রায় বিশ একর জায়গাজুড়ে চলছে ড্রেজার মেশিনের এই তা-বলীলা।
ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেছে পুরো এলাকা। ভাঙন দেখা দিয়েছে পার্শ্ববর্তী একাধিক টিলায়। এতে করে আশপাশের বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন অতিবাহিত করছেন।
বালু উত্তোলনের পরে একের পর এক ট্রাক্টর বোঝাই করে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০ গাড়ি বালু বিক্রি করে প্রায় দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বালু খেকোরা। তারা স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করতে পারছে না। অবাধে বালু উত্তোলন করায় পানছড়ি পাহাড়ে কাঁপছে টিলা।
একইভাবে লালচান্দ বাগান এলাকার ছড়া ও টিলা থেকে ড্রেজারে বালু তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। আর এতে করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বালুখেকো ওই চক্রটি। বালুদস্যুরা খুবই প্রভাবশালী।
তাদের প্রভাবের কাছে এখানকার সবাই দুর্বল। নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয়রা বলেন, ২০০০ সালে প্রায় ৫০ একর জমিতে এই আশ্রয়ণ কেন্দ্রটি ৫০০ পরিবার নিয়ে যাত্রা করে। টিলায় টিলায় তাদের বসবাস।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, চুনারুঘাটসহ কয়েকটি উপজেলায় পাহাড়-টিলা কেটে পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যক্রম চলছে বহু বছর ধরে। এতে সার্বিক পরিবেশ-প্রতিবেশ ও প্রকৃতির ওপর যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে সেটা অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, উচ্চ আদালত কর্তৃক পাহাড়-টিলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু এগুলো রক্ষায় কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
যার ফলে পাহাড় ও টিলা কাটা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে আর ধ্বংস হচ্ছে আমাদের প্রাণ-প্রকৃতি। দায়ীদের চিহ্নিত করে আইন প্রয়োগের মাধ্যমে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থাসহ পাহাড়-টিলাকে সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
এ ব্যাপারে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আয়েশা আক্তার জানান, অবৈধ বালু তোলা বন্ধে প্রশাসন কঠোর ভূমিকা পালন করছে। এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। পানছড়িতে কারা বালু উত্তোলন করছে আমাকে জানান। আমি কঠোর পদক্ষেপ নেব।