জুলাইয়ে আমাজনে গাছ কাটার হার ৬৬-এ কমেছে
‘পৃথিবীর ফুসফুস’ খ্যাত আমাজন বনের ব্রাজিল অংশে গত জুলাই মাসে গাছ কাটার হার ৬৬-এ কমেছে। এটি ২০১৭ সাল থেকে (ছয় বছরে) আমাজন বনে সবচেয়ে কম গাছ কাটার ঘটনা। সোমবার ব্রাজিল সরকার প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য জানা গেছে।
আমাজন অঞ্চলের দেশগুলোর সম্মেলনের আগে পাওয়া এ ধরনের পরিসংখ্যান ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভার জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে তিনি সম্মেলনে তাঁর পরিবেশগত নীতিমালাগুলো কার্যকর করার ওপর জোর দিতে পারবেন।
ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা আইএনপিই প্রকাশিত উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে, গত মাসে ৫০০ বর্গকিলোমিটার পরিমাণ বন ধ্বংস হয়েছে, যা গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় ৬৬ শতাংশ কম।
আইএনপিইয়ের প্রাথমিক তথ্যে দেখা গেছে, ২০২২ সালের প্রথম সাত মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে বন উজাড়ের হার ৪২ দশমিক ৫ কমেছে।
জুন ও জুলাই মাসে বন উজাড়ের পরিমাণ কমে যাওয়াকে আশাব্যঞ্জক বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। সাধারণত বছরের এ সময়ে আমাজন বন উজাড়ের ঘটনা বাড়তে দেখা যায়।
ব্রাজিলের পরিবেশবিষয়ক মন্ত্রী জোয়াও পাউলো কাপোবিয়ানকো ব্রাসিলিয়ায় সাংবাদিকদের বলেন, বন উজাড়ের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখন বিপরীত দিকে মোড় নিয়েছে।
আগামী সপ্তাহে আমাজন অঞ্চলের দেশগুলোর নেতারা বৈঠকে বসবেন। ব্রাজিলের উত্তরাঞ্চলে অনুষ্ঠেয় এ সম্মেলনে আমাজন জঙ্গলকে সুরক্ষার উপায় নিয়ে আলোচনা করা হবে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা ওই সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন।
গত বুধবার লুলা বলেন, সম্মেলনে আমাজন অঞ্চলের সুরক্ষায় সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নির্ধারণের ওপর জোর দেওয়া হবে। এসব নীতিমালার মধ্যে থাকবে সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার এবং তিন কোটি হেক্টর জায়গায় নতুন করে বনায়নের জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে সহযোগিতা চাওয়া।
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো পরিবেশের সুরক্ষায় তৎপর ছিলেন না। তাঁর শাসনামলে আমাজন বন উজাড়ের হার অনেক বেড়ে গিয়েছিল। বামপন্থী নেতা লুলা গত জানুয়ারিতে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ২০৩০ সাল নাগাদ আমাজন বন উজাড় বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
লুলা প্রশাসনের শুরুর কয়েক মাসে বন ধ্বংসের হার কমায় বিশেষজ্ঞরাও প্রশংসা করেছেন। সামনের মাসগুলোতেও এ প্রবণতা ধরে রাখার ওপর জোর দিয়েছেন তাঁরা।
বিশ্ব বন্য প্রাণী তহবিলের ব্রাজিল শাখার ব্যবস্থাপক মারিয়ানা নাপোলিতানো বলেন, শুষ্ক মাসে বন উজাড় কমার ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণ। এর মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, জরুরি যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, বিশেষ করে পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ-সংক্রান্ত পদক্ষেপগুলো কাজ করছে।
তবে এখনো উচ্চ হারে বন উজাড় হচ্ছে। ২০৩০ সাল নাগাদ বন উজাড়ের হারকে শূন্যে নামিয়ে আনতে আরও বেশি কাঠামোগত পদক্ষেপ নিতে হবে।