জীববৈচিত্র্য ও নদীর পরিবেশের চেয়ে পানিবণ্টনই বেশি গুরুত্ব পায়
গঙ্গা নদীকে বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সেচের পানির উৎস হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ নদী অববাহিকা নিয়ে আলোচনায় পানিবণ্টন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে।
কিন্তু নদীকেন্দ্রিক মানুষের জীবন, জীববৈচিত্র্য ও নদীর পরিবেশ কম গুরুত্ব পেয়েছে। এ নদী অববাহিকাকেন্দ্রিক মানুষের জীবন ও জীবিকার উন্নয়ন করতে হলে শুধু রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আলোচনা হলে হবে না, এ দেশগুলোর নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের মধ্যে সম্পর্ক বাড়াতে হবে।
প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএন আয়োজিত ‘গঙ্গা অববাহিকার টেকসই উন্নয়নে অংশীদারত্ব নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বৃহস্পতিবার বক্তারা এসব কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক সংস্থা এশিয়া ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এ সভায় বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। তাঁরা পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তি আরও শক্তিশালী করার পক্ষে মত দেন।
সভার শুরুতে আইইউসিএন, বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রাকিবুল আমিন বলেন, পৃথিবীর অন্যতম বড় এ নদীর অববাহিকায় দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের প্রাচীন সভ্যতার সূত্রপাত হয়েছে।
প্রাচীনকাল থেকে কৃষিকাজে সেচের পানি ও নৌপথ হিসেবে এ অববাহিকা গুরুত্ব পেয়েছে। কিন্তু অর্ধশতাব্দী ধরে এ অববাহিকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সেচের পানি ধরে রাখার জন্য বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, উন্নয়নের জন্য করা এসব অবকাঠামো যাতে এ অববাহিকার জীববৈচিত্র্য ও মানুষের জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে, তা খেয়াল রাখতে হবে। এ জন্য এ অঞ্চলের নাগরিক সংগঠন ও গণমাধ্যমের মধ্যে সম্পর্ক বাড়াতে হবে।
এশিয়া ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ বলেন, গঙ্গা অববাহিকায় বসবাস করা মানুষের জীবিকার উন্নয়ন ও চাহিদাকে গুরুত্ব দিতে হবে। এ বিষয়গুলো নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমকে তুলে ধরতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা স্টিম্পসন সেন্টারের উপপরিচালক কার্টনি হুইটহার্বি ও গবেষক ফারোয়া আমির নদীর পানিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহারের সাম্প্রতিক প্রবণতাগুলো তুলে ধরেন।
তাঁরা বলেন, নদীর পানিকে ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম ব্যয়বহুল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে এভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে আসছে। কারণ, এতে নদীর ক্ষতি হয়। বিপরীতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎসগুলো জনপ্রিয় হচ্ছে।