জীববৈচিত্র্য ও নদীদূষণের আশঙ্কায় কর্ণফুলী চরে বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর চর বাকলিয়ায় বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রস্তাবিত প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং নদীদূষণের আশঙ্কায় এই প্রকল্প বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে চেয়েছিল। এ জন্য ৩৫ একর জমি বরাদ্দ চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু ভূমি মন্ত্রণালয় আবেদনটি নামঞ্জুর করেছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন বোয়ালখালী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) মঙ্গলবার চিঠি দিয়ে প্রস্তাব নামঞ্জুর হওয়ার বিষয়টি জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছে।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর নির্মিত শাহ আমানত সেতু থেকে আনুমানিক দেড় কিলোমিটার উজানে নদীর মাঝখানে জেগে ওঠা সেই চরের নাম চর বাকলিয়া। চরের মোট আয়তন প্রায় ১০৫ একর। চরটি সরকারি ১ নম্বর খাস খতিয়ানে ভুক্ত।
এই চরে বর্জ্য শোধনাগার করতে ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অনুকূলে খাসজমি দীর্ঘ মেয়াদে বন্দোবস্ত দিতে ভূমি মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন করা হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে চলতি বছরের মার্চে প্রকল্পটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে ছয়টি সংগঠনের মোর্চা ‘কর্ণফুলী রক্ষায় জনগণের প্রতিবাদ মঞ্চ’।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাজিব হোসেন বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে প্রকল্প প্রস্তাবটি নামঞ্জুর করার বিষয়ে জানানো হয়েছে। এটি মূলত মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদারকি করে সিদ্ধান্তটি জানানো হয় সংশ্লিষ্টদের।
ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘কর্ণফুলী নদীর চরে বর্জ্য শোধনাগার স্থাপন করা হলে নদীর পানি দূষিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং জীববৈচিত্র্যসহ পরিবেশ-প্রতিবেশগত ভারসাম্য মারাত্মকভাবে বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তাই চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলার চর বাকলিয়া মৌজার বিএস ১ নম্বর খতিয়ানভুক্ত ৫৪৪ নম্বর দাগের ৩৫ একর জমিতে বর্জ্য শোধনাগার স্থাপনের প্রস্তাবটি নামঞ্জুর করা হয়েছে।’