জাতিসংঘ রিপোর্টে পরিবেশ দূষণে ধনীরাই শীর্ষে
সম্প্রতি জাতিসংঘ একটি রিপোর্ট প্রকাশিত করেছে। যাতে বলা হয়েছে, বিশ্বের ধনীদের মধ্যে প্রতি ১ শতাংশ মানুষ বিশ্বের দরিদ্রদের প্রতি ৫০ শতাংশ মানুষের তুলনায় দ্বিগুণ বা ক্ষেত্র বিশেষ আরো বেশী কার্বন নিঃসরণ করে।
যদি পরিবেশ দূষণ রোধে ধনীরা ন্যূনতম ভূমিকা রাখতে চান, তবে তাদের জীবনযাপনের ধরনে পরিবর্তন আনা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এ বিষয়ে এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ১৯৯০-২০১৫ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ধনী ৫ শতাংশ মানুষ ৩৭ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ করেছে আর বর্তমানে তার হার আরো অনেক বেশী।
জাতিসংঘ এ বিষয়ের সকল তথ্য সংগ্রহ করেছে ব্রিটেনের কেমব্রিজ সাসটেইনেবল কমিশন থেকে। সেখানে দেখা গেছে, বিশ্বের ধনী ব্যক্তিরা যাতায়াতে বিমান বা একাধিক বিলাসবহুল গাড়ী ব্যবহার, প্রয়োজনের থেকে বেশী বা বড় বড় এসি ব্যাবহার করে, আর তাদের দৈনন্দিন জীবনে কার্বণ নিঃসরনের উচ্চমাত্রা সম্পন্ন পণ্য ব্যবহারের প্রবনতাও বেশী।
অন্যদিকে তারা সোলার প্যানেল ব্যবহার করে না। দরিদ্রদের তুলনায় কার্বণ নিঃসরণে তাই ধনীদের ভূমিকাই অনেক বেশি।
রিপোর্টে বলা হয়, ধনীরা যদি খাবারের অপচয় কমায়, বেশি করে গাছ লাগায়, সোলার প্যানেল ব্যবহার করে, তবে তাদের কার্বন নিঃসরণের হার টা কিছুটা কমবে।
তারা যদি বিমান আর নিজস্ব গাড়ি যথেচ্ছা ব্যবহারে নিয়ন্ত্রন করে যাতায়াত করে, তাহলেও অনেকাংশে কমবে কার্বন নিঃসরণ। ধনীদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা খুবই কম এবং তাদের পরিবেশবান্ধব পণ্য ব্যবহারেও আগ্রহ খুবই কম দেখা যায়।
বাংলাদেশের মতো তুলনামূলক দরিদ্র দেশগুলোতে দিন দিনই গড় হারে প্রকৃতিক দূষণের পরিমাণ বাড়ছে। কিন্তু তবুও এ হার একই দেশের একজন ধনী ব্যক্তির গরিবের তুলনায় অনেক বেশী।
ধনী ব্যক্তিরা আবার শিল্পকারখানায় বিনিয়োগ করেন অনেক বেশি। ধনীদের কার্বন নিঃসরণ বছরে কোটি টনে পৌঁছায়, যেখানে দরিদ্রদের তা খুব নগণ্য।
অর্থনৈতিক নয় এমনকি রাজনৈতিক অনেক সিদ্ধান্ত নিতে পারে ধনী ব্যক্তিরা। কোটিপতিরাই যদি নিজেদের জীবনযাপনে পরিবর্তন এনে পরিবেশ রক্ষায় বিনিয়োগ শুরু করে, তাহলে অনেকাংশেই কমবে পরিবেশ দূষণ অথবা বলা যায় পরিবেশ স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসা সম্ভব হবে।