জলাবদ্ধতায় মৃত প্রায় ময়ূর নদ
খুলনা শহরের মিঠাপানির অন্যতম উৎস হচ্ছে ময়ূর নদ। নগরের জলাবদ্ধতা নিরসন ও নদের নাব্য ফেরাতে দুই দফা খনন করা হয়। এছাড়া বর্তমানে ৮২৩ কোটি টাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়ন নামে একটি প্রকল্পের কাজ চলমান।
নদের প্রাণ ফেরাতে ২০১৪ সালে প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এক দফা খনন করা হয়েছিল। তবে সে উদ্যোগ কাজে আসেনি। এরপর ২০২২ সালে কেসিসি ৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা প্রায় ৬ কিলোমিটার খননের আরো একটি প্রকল্প নেয়।
অপরিকল্পিত খনন, দখল, পরিবেশ বিষয়ে অসচেতনতা, অপর্যাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জবাবদিহির অভাবসহ নানা কারণে ময়ূর নদের নাব্য ফিরছে না এবং খননে সুফল পাওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে।
নদের উৎসমূল বিল ডাকাতিয়া ও ভবদহ থেকে শুরু করে ময়ূরের শেষ সীমানা আলুতলা পর্যন্ত মোট ২১ কিলোমিটার সংস্কার করার পাশাপাশি ক্ষুদের খালসহ আশপাশের নদী-খালগুলোও সংস্কার করা প্রয়োজন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুরো নদ খনন করে পানিপ্রবাহ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ময়ূর নদের খনন কোনো কাজে আসবে না। বর্ষায় ময়ূরের নদের পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণে আশির দশকে রূপসার আলুতলায় একটি জলকপাট নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
মূলত তারপর থেকেই বিপন্ন হতে থাকে ময়ূরের অস্তিত্ব। জলকপাটটি বেশির ভাগ সময় বন্ধ থাকে। ফলে পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে ময়ূরের তলদেশে পলি জমে ভরাট হতে থাকে। এ কারণে একটু বৃষ্টি হলেই নগরে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা।
নগরবাসী পরিবেশবিদ ও সংশ্লিষ্ট সবাই মনে করেন, শুধু ছয় কিলোমিটার খননের ফলে প্রতিবারের মতো পুরো অর্থই অপচয় হবে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হবে না তাই স্থায়ী সমাপেতে পুরো ২১ কিলোমিটার খননের প্রয়োজন।
নদী রক্ষা কমিশন যদি ভূমি মন্ত্রণালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিটি করপোরেশন, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দিষ্টভাবে কাজ ভাগ করে দেয় এবং কাজের সমন্বয় করে, তাহলে ভালো ফল আসতে পারে। প্রাণ ফিরে পেতে পারে নদটি।