জলাধার ভরাট করে ধ্বংস করা হচ্ছে হাতিরঝিলের পরিবেশ
রাজধানীর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে হাতিরঝিলের জলাধার ভরাট করে পরিবেশ ধ্বংস করা হয়েছে। ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) বুধবার ‘হাতিরঝিল, পান্থকুঞ্জ পার্ক এবং সংলগ্ন এলাকার ওপর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পরিকল্পনাগত প্রভাব : আইপিডির পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনায় এসব কথা বলেন আলোচকরা।
আলোচকরা বলেন, ‘পরিকল্পনাগত প্রভাব বিশ্লেষণ ছাড়া নতুন করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য পলাশী পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা হাতিরঝিল প্রকল্পের উপযোগিতাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করবে।
এই প্রক্রিয়া না থামালে পান্থকুঞ্জ পার্ক নষ্ট করার পাশাপাশি পলাশী পর্যন্ত রাস্তার উপযোগিতাও নষ্ট হবে। ওই এলাকার মানুষজনের জীবনযাত্রাও ব্যাহত হবে। অনতিবিলম্বে এ উদ্যোগ বন্ধ করা উচিত।
অনলাইন অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইপিডির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান। তিনি বলেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট অন্য সংস্থার সঙ্গে আলোচনা না করেই এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন র্যাম্প নির্মাণ ও সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে।
কোনো ধরনের পরিকল্পনাগত প্রভাব বিশ্লেষণ ছাড়া নতুন করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি হাতিরঝিল প্রকল্পকে ধ্বংস করবে।
আইপিডির পক্ষ থেকে বলা হয়, পরিবহন অবকাঠামো সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে জনগণের মতামত গ্রহণ, গণশুনানি আয়োজন করার প্রয়াস অনুপস্থিত।
ট্রাফিক সমস্যা সমাধানে অর্থনৈতিক ও পরিকল্পনাগত প্রভাব যথাযথ বিবেচনায় না নিয়ে মেগাপ্রকল্পে অতি আগ্রহ। ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া এ ধরনের পরিকল্পনা জনগণের চাহিদাভিত্তিক সমাধানের সঙ্গে সম্পর্কহীন।
অনুষ্ঠানে আইপিডির উপদেষ্টা অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বলেন, ‘বিশদ সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়াই হাতিরঝিলের জলাধার ভরাট ও পান্থকুঞ্জ পার্কের মধ্য দিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে সম্প্রসারণ সঠিক সিদ্ধান্ত নয়।’
আইপিডির পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যক্তিগত গাড়িতে যে ৫ শতাংশ মানুষ চলাচল করে, তাদের জন্য বড় বড় মেগা প্রজেক্ট নেওয়া হয়, অথচ এর কুফল ভোগ করেন বাকি ৯৫ শতাংশ মানুষ।’