জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাব পড়ছে শ্রমিকদের উপর
বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ার কারণে বছরে বিশ্বে ২৩ হাজার কোটি শ্রমঘণ্টা নষ্ট। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ১০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ।
জলবায়ু পরিবর্তন, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে ভুক্তভোগী। বৈশ্বিক উষ্ণতা শ্রমজীবী মানুষের ওপর কী প্রভাব ফেলছে, তা নিয়ে গত ডিসেম্বরে একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করেছে সুপরিচিত বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার কমিউনিকেশনস।
‘ইনক্রিজড লেবার লসেস অ্যান্ড ডিক্রিজড অ্যাডাপটেশন পটেনশিয়াল ইন আ ওয়ার্মার ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক যৌথ গবেষণাটি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ডিউক ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনসহ স্বনামধন্য কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।
নিবন্ধটিতে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দিন দিন বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে আর্দ্রতাও। পরিবেশে একই সঙ্গে উষ্ণতা ও আর্দ্রতা বেশি থাকা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এমন গরম আবহাওয়ায় শরীরে ঘাম হয়। ঘাম শুকিয়ে শরীর দ্রুত শীতল হওয়ার সুযোগ কমে যায়।
অতি উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় খোলা আকাশের নিচে কাজ করা কৃষক ও শ্রমিকদের শরীরে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেয়। তাঁদের উৎপাদনক্ষমতা কমে যায়। তাঁরা বারবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থতা মৃত্যুঝুঁকিও তৈরি করে।
নিবন্ধে অতি উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে কর্মঘণ্টার ক্ষতির হিসাবও তুলে ধরা হয়। জানানো হয়, বেশি গরমের কারণে বিশ্বে প্রতিবছর গড়ে ২২ হাজার ৮০০ কোটি শ্রমঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। এর আর্থিক মূল্য ২৮ থেকে ৩১ হাজার ১০০ কোটি মার্কিন ডলার। বাংলাদেশে বছরে ক্ষতির পরিমাণ ১ হাজার ৪০০ কোটি শ্রমঘণ্টা।
মাথাপিছু হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ২৫৪ শ্রমঘণ্টা। ২০২০ সাল পর্যন্ত আগের দুই দশকের তথ্য বিশ্লেষণ করে এই হিসাব করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশে যে শ্রমঘণ্টার ক্ষতি হয়, তার আর্থিক মূল্য কত, তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।
শুধু বলা হয়েছে, বৈশ্বিক আর্থিক ক্ষতির বড় অংশই হয় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে, যেখানে শারীরিক পরিশ্রম বেশি করতে হয়। বিশেষ করে কৃষি ও নির্মাণ খাতে ক্ষতি বেশি। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিতে পারলে আগামী দিনগুলোতে শ্রমঘণ্টার ক্ষতি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন গবেষকেরা।