জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দ্বিগুণ গতিতে উষ্ণ হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য
বিশ্বে উষ্ণতা বৃদ্ধির গড় হারের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ গতিতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় উষ্ণতা বাড়ছে। এতে অঞ্চলটির জনগণ ও অর্থনীতির ওপর ভয়াবহ প্রভাব পড়ার হুমকি তৈরি হয়েছে। মিসরে জাতিসংঘের কপ২৭ জলবায়ু সম্মেলনকে সামনে রেখে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন আভাস দেওয়া হয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, মধ্যপ্রাচ্য ও পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে প্রতি দশকে গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার শূন্য দশমিক ৪৫ ডিগ্রি। আর এ সময়ের মধ্যে প্রতি দশকে বিশ্বে গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার শূন্য দশমিক ২৭ ডিগ্রি। ১৯৮১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ পরিসংখ্যান উপস্থাপন করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অবিলম্বে পরিস্থিতির পরিবর্তন না ঘটলে শতাব্দীর শেষ নাগাদ মধ্যপ্রাচ্যের উষ্ণতা পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। তা কিছু দেশের মানুষের ন্যূনতম অভিযোজন সক্ষমতার মাপকাঠিকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ যে মাত্রার উষ্ণতায় মানুষ অভিযোজন করতে পারে, তার চেয়ে বেশি উষ্ণ হবে দেশগুলো।
জার্মানিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর কেমিস্ট্রি এবং সাইপ্রাসভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সাইপ্রাস ইনস্টিটিউট তথ্য দিয়ে এ গবেষণায় সহযোগিতা করেছে। ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটের গবেষক জোস লেলিভেলদ মনে করেন, উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে জনগণকে স্বাস্থ্যগতভাবে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে হবে।
তাদের জীবনযাত্রা ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। বিশেষ করে, সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী, বয়স্ক মানুষ, শিশু ও অন্তঃসত্ত্বারা হুমকিতে পড়বেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, মধ্যপ্রাচ্য যে শুধু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা–ই নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও অঞ্চলটির বড় ধরনের দায়ও আছে। তেলসমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্য বিশ্বে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের অন্যতম একটি উৎসে পরিণত হওয়ার পথে আছে।
গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণের দিক থেকে কয়েক বছরে অঞ্চলটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্থান দখল করে নেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।