22 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
ভোর ৫:১৪ | ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১লা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধের দাবি
জলবায়ু

জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধের দাবি

জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধের দাবি

জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় গ্লোবাল সাউথের দেশগুলো যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ পাচ্ছে, তার ২০ গুণ বেশি অর্থায়ন জীবাশ্ম জ্বালানি ও বাণিজ্যিক কৃষিতে করছে বিশ্বের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক।

২০১৬ সালে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি গৃহীত হওয়ার পর থেকে ব্যাংকগুলো জীবাশ্ম জ্বালানির সম্প্রসারণের জন্য ৩ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান কারণ। তাই জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন বক্তারা।



সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার একটি কনভেনশন সেন্টারে একশন এইড বাংলাদেশ আয়োজিত ‘ফান্ড আওয়ার ফিউচার’ ক্যাম্পেইনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

একশনএইডের পরিচালিত সমীক্ষার তথ্য বলছে, বাণিজ্যিক কৃষিতে ব্যাংকগুলো ব্যয় করেছে ৩৭০ বিলিয়ন ডলার, এটিও জলবায়ু পরিবর্তনের দ্বিতীয় প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত হয় ৷

জলবায়ু সংকট সৃষ্টির পেছনে অর্থায়নকারী শীর্ষ ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে এইচএসবিসি, সিটিগ্রুপ, জেপি মর্গান চেসসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ব্যাংক।

সমীক্ষায় দেখা যায়, বিশ্বের প্রতিটি অঞ্চলের শীর্ষ ব্যাংকগুলো জীবাশ্ম জ্বালানি ও বাণিজ্যিক কৃষিতে অর্থায়ন করছে। এর মধ্যে রয়েছে ইউরোপে এইচএসবিসি, বিএনপি পারিবাস, সোসাইটি জেনারেল, বার্কলেস, আমেরিকায় সিটি ব্যাংক, জেপি মরগান চেজ, ব্যাংক অব আমেরিকা, এশিয়ায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়না, চায়না সিআইটিআইসি ব্যাংক, ব্যাংক অব চায়না এবং মিতসুবিশি ইউএফজে ফিন্যান্সিয়াল।

সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে যে গ্লোবাল সাউথের বাণিজ্যিক কৃষির অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠান বায়ের ২০১৬ সাল থেকে ২০ দশমিক ৬ বিলিয়ন অর্থায়ন পেয়েছে।



‘ফান্ড আওয়ার ফিউচার’ ক্যাম্পেইন উদ্বোধনের সময় আয়োজিত এক প্যানেল আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, জলবায়ু সংকটের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সমাধানের চেয়ে আমরা দ্রুত সমস্যা তৈরি করছি।

সমস্যা সমাধান ও নীতি কার্যকর করতে আমাদের একটি সামগ্রিক কাঠামো তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশের কোনও সুস্পষ্ট নেট শূন্য গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন লক্ষ্যমাত্রা নেই, যেটি স্থাপন করা প্রয়োজন এবং টেকসই সমাধানের জন্য মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে বৃহত্তর সমন্বয় প্রয়োজন। আমাদের সমাধানের জন্য অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীল হলে চলবে না, আমাদেরই সঠিক পথ খুঁজে বের করতে হবে।

আইসিসিসিএডির পরিচালক ড. সালেমুল হক বলেন, ‘সরকারকে আমাদের বিশ্বের দূষণকারীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। বিশ্বে কিছু সরকার আছে, যারা দূষণকারীদের পক্ষে কথা বলে।

ধনী ব্যক্তিরা সমস্যা তৈরি করছে এবং দরিদ্র মানুষ তার পরিণাম ভোগ করছে। জলবায়ু অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমাদের প্রত্যেককে সোচ্চার হতে হবে।’

একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে যে কীভাবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের জলবায়ু সংকটের মূল চালক।



আমাদের লক্ষ্য নির্ধারণ, জবাবদিহি ও পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। আমরা সুন্দর পৃথীবির জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের দায়িত্বের সঙ্গে অর্থায়ন করতে বলি। আমাদের অবশ্যই ন্যায়বিচার চাইতে হবে এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানি ভর্তুকি থেকে সরে এসে বিকল্প টেকসই রুটের জন্য তা কাজে লাগাতে পদক্ষেপ নিতে হবে।

এটা ভালো যে সরকার নবায়নযোগ্য শক্তির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করছে, কিন্তু আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য যদি হয় জীবাশ্ম জ্বালানি হ্রাস, তাহলে আমাদেরও একটি হ্রাস লক্ষ্যমাত্রা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের সাবেক পরিচালক খন্দকার মোর্শেদ মিল্লাত বলেন, আমাদের বাসযোগ্য ভবিষ্যতের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ওয়াচডগের ভূমিকা পালন করতে হবে।

ব্যাংকগুলো টেকসই রেটিং পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন ৷ অর্থ যেমন জলবায়ু সংকটে ইন্ধন জোগাচ্ছে, তেমনি নিয়ন্ত্রকদের উচিত টেকসই ও নবায়নযোগ্য বিনিয়োগের দিকে ব্যাংকগুলোকে ধাবিত করা।

প্রতিবেদনে ব্যাংকগুলোকে অবিলম্বে জীবাশ্ম জ্বালানি সম্প্রসারণ কার্যক্রমের জন্য প্রকল্প এবং করপোরেট অর্থায়ন বন্ধ করার এবং অন্যান্য সব জীবাশ্ম জ্বালানি এবং ক্ষতিকারক বাণিজ্যিক কৃষি কার্যক্রমের অর্থায়ন দ্রুত বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়।

এতে আরও সুপারিশ করা হয় যে ব্যাংকগুলোকে অবশ্যই কমিউনিটির অধিকার রক্ষার জন্য উপযোগী পলিসি গ্রহণ করতে হবে।

প্রতিবেদনে জীবাশ্ম জ্বালানি সম্প্রসারণে অর্থায়ন বন্ধ করতে জাতীয় ও আঞ্চলিক সরকারকে অবশ্যই ব্যাংকিং এবং আর্থিক খাতগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার কথা বলা হয়। পাশাপাশি নবায়নযোগ্য শক্তি ও জলবায়ু সহনশীল কৃষিতে অধিক বিনিয়োগ ও গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত