জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সামনের পথচলা আরও কঠিন: পরিবেশন্ত্রী
বর্তমান অর্থবছরে সরকার ৩৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অভিযোজনের জন্য। আজ যদি জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবিলা না করতে হতো, তাহলে আমরা তা শিক্ষা খাতে ব্যয় করতে পারতাম, স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করতে পারতাম, অবকাঠামোর উন্নয়নের জন্য ব্যয় করতে পারতাম। সুপেয় পানির ব্যবস্থা করে দিতে পারতাম।
বরাদ্দ এখন দিচ্ছি, কিন্তু আগামীতে কী করবো! ধরে নিচ্ছি তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ এর বেশি হবে না। কিন্তু যদি ২.৫ হয়ে যায় তাহলে তো এই বরাদ্দ কোনও কাজে আসবে না। আমরা শুধু ভিকটিম হয়ে থাকতে চাই না। ভবিষ্যতে এক প্লাটফর্মে ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্ট করতে চাই। আমাদের শুধু পরিকল্পনা নয় বাস্তবায়নে মনোযোগ দিতে হবে। কী পেলাম সেদিকে নজর দিতে হবে।
রবিবার ‘উইমেনস ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (ডব্লিউআইসিসি) আয়োজন জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশগত অবক্ষয়ে মহিলাদের ওপর প্রভাব এবং সামনের পথ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, ব্যবহার্য প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এর ফলে সি লেভেল বেড়ে গেছে। বাস্তবায়ন ও স্থায়িত্বের এজেন্ডা তরুণদের। এটি তরুণদের জন্য হওয়া উচিত এবং এটি তরুণদের দ্বারা হওয়া উচিত।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, এবিসি রিয়েল স্টেটের পরিচালক শ্রাবন্তী দত্ত, সামিট গ্রুপের পরিচালক আজিজা আজিজ খান, সুইডেন অ্যাম্বাসির ফার্স্ট সেক্রেটারি (হেলথ এক্সপার্ট) ড্যানিয়েল নোবাক, ফ্রেন্ডশিপের প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী পরিচালক রুনা খান, ইউএন ওম্যান ডিআরআর অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জের প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট দিলরুবা হায়দার, ইউল্যাবের সেন্টার ফর সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ডিরেক্টর অ্যান্ড প্রফেসর ড. সামিয়া সেলিম, সার্ক বিজনেস কাউন্সিল (এসবিসিবি) অব ডব্লিউআইসিসিআই এর সভাপতি ড. মানতাশা আহমেদ।
সার্ক বিজনেস কাউন্সিল বাংলাদেশে’র সদস্য ও আয়াত ফাউন্ডেশনের সিইও নুসরাত আমান সঞ্চালনায় প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এখন পানি, খরা, অগ্নি, ক্রমবর্ধমান সমুদ্রের মাত্রা, পোলার বরফ, গর্ভাশয় ঝড় এবং বায়ো-বৈচিত্র্যের পতন ঘটায়। বিশেষজ্ঞরা প্রাকৃতিক সম্পদগুলোর টেকসই ব্যবস্থাপনা, টেকসই খরচ এবং উৎপাদনে (স্প্যাক) জোর দেন।
সম্প্রতি ইউএনডিপির প্রতিবেদনে জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ এবং ধীর সূত্রপাতের ঘটনাগুলোর জন্য বাংলাদেশকে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে উল্লেখ করে সার্ক বিজনেস কাউন্সিল (এসবিসিবি) অব ডব্লিউআইসিসিআই এর সভাপতি ড. মানতাশা আহমেদ মন্ত্রীর কাছে আগামী অর্থবছরের বাজেটে নারীবান্ধব পরিবেশ নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে কোনও বিশেষ বরাদ্দ থাকছে কিনা এবং সেটা যথেষ্ট কিনা এ বিষয়ে জানতে চান। এছাড়া নারীদের নিয়ে প্রান্তিক পর্যায়ে কাজ করা বাণিজ্য সংগঠনগুলোকে সম্পৃক্ত করে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে সচেতনতা তৈরির জন্য সরকারের কোনও পরিকল্পনা আছে কিনা সে বিষয়ে জানতে চান।
এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, সরকার সবসময় এসব বিষয়ে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। আগামীতে নারীর কাজ জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হবে। মহিলারা যে কাজ করে তার স্বীকৃতি থাকা উচিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সেই পরিকল্পনা নিয়েছেন। এছাড়া প্রকৃতির সম্পদ বাড়ছে না কমছে তার তথ্য রাখা হবে।
নেচার বেজড সমাধানের জন্য এটা জরুরি। চামড়ায় পরিবেশ ধ্বংসের কারণে রফতানি করতে পারছে না। বুড়িগঙ্গা শেষ, এখন ধলেশ্বরীর পালা। জনস্বাস্থ্য নিয়ে আমাদের সংবিধানে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কিছু সময় আমরা নিজেরাও বিভিন্ন কাজ করতে পারি না। বঙ্গবন্ধুকে মুখে স্মরণ করবো, কাজে করবো না তা হয় না। সব কাজ করতে হবে।