32 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
দুপুর ১:৪০ | ২২শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে নানা আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের
জলবায়ু

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে নানা আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে নানা আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের

বলুন তো পেঙ্গুইন আগে অফিসে পৌঁছাবে, নাকি আপনি? গেনটু প্রজাতির পেঙ্গুইন সবচেয়ে দ্রুতগতির সাতারু পেঙ্গুইন, ঘণ্টায় ৩৬ কিলোমিটার গতিতে সাঁতরাতে পারে।

তাদের চেয়ে কম গতিতে ছোটে রাজধানীর মিরপুর থেকে মতিঝিল অফিস যাওয়ার বাস। সেই হিসাবে আপনার আগেই পেঙ্গুইনরা অফিসে পৌঁছাবে।



পেঙ্গুইনদের বাস পৃথিবীর সর্ব দক্ষিণের মহাদেশ অ্যান্টার্কটিকায়। অ্যান্টার্কটিকার কথা আমরা জানি দক্ষিণ মেরু হিসেবে। অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের প্রায় দ্বিগুণ আয়তনের এই মহাদেশের বেশির ভাগ অংশই বরফে আবৃত।

মেরু মরুভূমি হিসেবে এই মহাদেশ সাউদার্ন ওশেন বা দক্ষিণ মহাসাগরবেষ্টিত। অ্যান্টার্কটিকা মহাসাগর হিসেবেও ডাকা হয় এই গুরুত্বপূর্ণ জলাধারকে।

সাউদার্ন ওশেনের বরফ গলে যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন একদল বিজ্ঞানী। এমনিতেই জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে নানা আশঙ্কা করছেন তাঁরা। নতুন সমস্যায় পড়েছেন গবেষকেরা।

বরফ গলে যাওয়ার খবর দেরিতে পাওয়ার কারণে বিপদে পড়েছেন তাঁরা। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়াসহ তাপমাত্রা–সংশ্লিষ্ট নানা তথ্য বেশ দেরিতে সংগ্রহ করতে হচ্ছে।

স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত (ডেটা), বিভিন্ন সেন্সরের দূরবর্তী অবস্থানের কারণে এই সময় এসেও অনেক তথ্য বেশ দেরিতে হাতে আসে।

অ্যান্টার্কটিকা এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি কার্বন ডাই–অক্সাইড শোষণ করে, একই সঙ্গে তাপমাত্রা। এত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার পরও ধীরগতিতে তথ্য পাওয়া নতুন সমস্যা তৈরি করছে।

অস্ট্রেলিয়ার হোবার্টে ২৫ দেশের ৩০০ বিজ্ঞানী এক সম্মেলনে এই সমস্যার কথা জানিয়েছেন। সাউদার্ন ওশেন অবজার্ভিং সিস্টেম এই সম্মেলন আয়োজন করে।



শুধু আবহাওয়ার তথ্য নয়, পেঙ্গুইন কলোনির আবাস পরিবর্তনের তথ্যাদিও দেরিতে হাতে পাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। সম্মেলনে তাঁরা জানিয়েছেন, ‘নিয়মিত পর্যবেক্ষণের অভাবে অ্যান্টার্কটিকা–সংক্রান্ত নানা বিষয় আমাদের নজরে পড়ছে না।’

গত কয়েক বছরে হুট করেই গ্রীষ্মের সময় দক্ষিণ মেরুর বরফ সবচেয়ে বেশি গলেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, গত কয়েক শীতেও বরফ গলতে দেখা যাচ্ছে।

ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভের সমুদ্রবিজ্ঞানী অ্যান্ড্রিউ মেইজার্স বলেন, ‘আমরা আসলে খুবই অপ্রস্তুত অবস্থায় আছি। আমাদের পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিতে সংকট থাকার কারণেই এমনটা হয়েছে। এত দিন পর্যন্ত চালু থাকা বৈশ্বিক জলবায়ু মডেলগুলো সাউদার্ন ওশেনের এই পরিবর্তন সম্পর্কে ধারণা দিতে পারেনি।

তথ্যের অভাবে আসলে এই পরিবর্তন সম্পর্কে আমরা টের পাইনি। স্যাটেলাইট থেকে অনেক তথ্য পাওয়া গেলেও বরফের পুরুত্ব কতটুকু কমল, তা নিয়ে ধারণা পাওয়া কঠিন। জলবায়ুর উষ্ণায়ন আসলে সমুদ্রের উষ্ণায়ন।

সাউদার্ন ওশেনের কিন্তু অ্যান্টার্কটিকার বরফের আস্তরের পুরুত্বের ওপর প্রভাব রাখে। সমুদ্রের বরফের কারণে অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চলের ফাইটোপ্লাঙ্কটন ও অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণের চক্রের ওপর প্রভাব পড়ে।’

এ মাসের শুরুতেই অ্যান্টার্কটিক গবেষক ও বিজ্ঞানীরা অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে শঙ্কার কথা প্রকাশ করেছেন। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এ বছর অ্যান্টার্কটিক সাগরের স্রোতের গতি ৩০ ভাগ কমে গেছে। এই স্রোতে অ্যান্টার্কটিকা থেকে নানা সামুদ্রিক কণা ও প্রাণ নানা সমুদ্রে ছড়িয়ে পড়ে।

১৯৯০ সালের পর এই প্রথম এতটা কমে যেতে দেখেছেন গবেষকেরা। শুধু ডেটার অভাবই নয়, এরই মধ্যে বাজেট নিয়ে সংশয় দেখা গেছে। অস্ট্রেলিয়া এরই মধ্যে গবেষণার জন্য বাজেট সংকোচন করেছে।

এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞানী ড. সিয়ান হেনলি বলেন, ‘সাগর-মহাসাগরগুলো পৃথিবীর অতিরিক্ত ৯০ ভাগ তাপমাত্রা শোষণ করে।



যেখানে সাউদার্ন ওশেন প্রায় ৭৫ শতাংশ তাপ শোষণ করে। সাগরগুলো কার্বন ডাই–অক্সাইড শোষণ করে প্রায় ৩০ শতাংশ। সাউদার্ন ওশেন সেখানে ৪০ ভাগ কার্বন ডাই-অক্সাইড ধারণ করে।

আমরা বিশ্বের অন্যান্য সাগর-মহাসাগর নিয়ে যত তথ্য পাই, সাউদার্ন ওশেন নিয়ে তেমন তথ্য পাই না। এটা যেন তথ্যের মরুভূমি। তথ্যের অভাবে অনেক প্রশ্নের উত্তর নেই আমাদের কাছে।

আমরা স্পষ্ট জানি, অ্যান্টার্কটিকার বরফ গলছে, যে কারণে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে, কিন্তু আমরা কিছুই বলতে পারছি না।’

মনোযোগ কমের কারণে জলবায়ু সংকট আরও বাড়ছে বলে গবেষকেরা জানিয়েছেন। মনটেরে বে অ্যাকুয়ারিয়াম রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষক ড. কেন জনসন সমুদ্রে হাজারো সেন্সর স্থাপন ও গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি সমুদ্রের তাপমাত্রা, লবণাক্ত অবস্থাসহ নানা বিষয় নিয়ে কাজ করেন।

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর জলবায়ুর জন্য সাউদার্ন ওশেন ইঞ্জিনের মতো কাজ করে। আমাদের এই সাগর নিয়ে যত কাজ করার কথা, আমরা তত কম মনোযোগ দিচ্ছি।

আমরা সেন্সর থেকে যে তথ্য পাই, তা সংগ্রহ করতে দেরি করছি, আর তাতে প্রকৃত অবস্থা জানতে আমাদের জন্য দেরি হয়ে যাচ্ছে। এখন সমন্বিতভাবে তথ্য সংগ্রহে গতিশীলতা আনার মাধ্যমে এই সংকট দূর করা যাবে বলে আমরা বিশ্বাস করছি।’

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত