26 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
সকাল ৮:৪৩ | ৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
জলবায়ু পরিবর্তনে পরিবেশগত ক্ষতির কারণে বাড়ছে ডেঙ্গু
পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবেশ বিশ্লেষন স্বাস্থ্য কথা

জলবায়ু পরিবর্তনে পরিবেশগত ক্ষতির কারণে বাড়ছে ডেঙ্গু

জলবায়ু পরিবর্তনে পরিবেশগত ক্ষতির কারণে বাড়ছে ডেঙ্গু

জলবায়ু পরিবর্তনে পরিবেশগত ক্ষতির কারণে এডিস মশা বেড়েছে। এতে বৃদ্ধি পাচ্ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। ডেঙ্গুজ্বরে ক্রমেই বাড়ছে মৃত্যুহার। এসব কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এডিস মশার লার্ভার ধরনে পরিবর্তন এসেছে। আগে শহরকেন্দ্রিক স্বচ্ছ পানিতে জন্মালেও এখন নোংরা ও নর্দমাতে জন্ম নিচ্ছে এডিস মশা।

এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস ও নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষমতা অর্জন করতে না পারায় কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলছে না। ফলে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ও প্রাণহানি বাড়ছে।

করোনা মহামারি শুরুর পরের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার ৪২৮। এর মধ্যে মারা যান ১০৫ জন। মৃতের হার ছিল শূন্য দশমিক ৩৭। পরের বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন। এর মধ্যে মারা যান ২৮১ জন। এ বছর আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেড়ে যায়।

একই সঙ্গে বাড়ে মৃত্যুহার। ২০২২ সালে মৃত্যুহার ছিল শূন্য দশমিক ৪৫। ২০২৩ সালে ডেঙ্গুর সব রেকর্ড ভেঙে যায়। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ৩ লাখ ২১ হাজার ২৭ জন। এর মধ্যে মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন। মৃত্যুহার বেড়ে হয় শূন্য দশমিক ৫৩ শতাংশ।

এদিকে, মানুষের সচেতনতার অভাবে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। ফুলে টব লাগিয়ে পানি জমিয়ে রাখা, শহরের পরিধি বাড়ানো এবং পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় যে ধরনের বনায়ন প্রয়োজন তা না থাকার কারণে ঘটছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়। বলছেন, কয়েক দিন আগেও জলবায়ুর ক্ষতির প্রভাবের কারণে আমরা তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা তৈরি হয়।

এখন চলছে দেশজুড়ে বর্ষা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এ দুর্যোগের ফলে জমে থাকা পানি থেকে জন্মাবে ডেঙ্গু। জমানো পানি প্রতি ৩ দিনে এক দিন না ফেললে চলতি বছরেও ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।

সম্প্রতিক পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে, দেশে প্রতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, মৃত্যুহারও বেড়ে চলেছে। মৃত্যুর এই উচ্চহার বিশ্বের আর কোথাও নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি কিছুটা জটিল হচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে, সমস্যা মোকাবিলায় যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। দেশব্যাপী জোরদার প্রতিরোধ কার্যক্রম চোখে পড়ছে না। চিকিৎসার ক্ষেত্রেও অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।



গত বছরের অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে জনস্বাস্থ্যবিদ, কীটতত্ত্ববিদ ও সরকারি কর্মকর্তারা এ বছরের শুরু থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলে আসছেন, এ বছরও ডেঙ্গু বড় আকারে দেখা দেবে।

জানুয়ারি থেকে ১০ মে পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ২৮৮ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ২৭ জন। মৃত্যুহার ১ দশমিক ১৮। এর অর্থ ১০০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তাদের মধ্যে একজন মারা যাচ্ছেন।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ডেঙ্গুর মহামারি ক্রমশ বাড়ছে। প্রতি বছর বিপুলসংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। মারাও যাচ্ছে। চলতি বছরের শুরুতে রাজধানীর সিটি করপোরেশনগুলো এডিস মশার ঘনত্ব নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছে। ওই সমীক্ষায় এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব বেশি পেয়েছে।

এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর অন্যতম কারণ অপরিকল্পিত নগরায়ণ। ধ্বংস করার জন্য উপযুক্ত রাসায়নিক প্রক্রিয়ার ব্যবহার করানো যা পরিবেশের জন্য সহায়ক তা প্রয়োগে আন্তরিকতার অভাব এবং সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে জাতীয়ভাবে উদ্যাগ গ্রহণ করায় গাফিলতি।

এ দুটির সমন্বয় না ঘটাতে পারলে এডিস মশার লার্ভার বংশবিস্তার বাড়বে এটাই স্বাভাবিক, যার প্রতিফলন আমরা ভোগ করছি। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ এডিস মশাকে নিয়ন্ত্রণ করতে দক্ষতার পরিচয় দিলেও আমরা সেখানেই ব্যর্থ। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। ফলে বাড়ছে।

জাতীয় ২৫০ শয্যার টিবি হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নতুন না। অনেক বছর আগেই রাজধানীতেই ছিল। এটা মূলত শহরকেন্দ্রিক। ২০১৭ সালের পর থেকে ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করতে থাকে। এখন উল্টো পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছি আমরা। গ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে।

এটা সহনীয় পর্যায়ে নেই। কারণ ঘনত্ব বেশি হওয়ার কারণে জেনেটিক কারণে শক্তিশালী হচ্ছে। আগে যেখানে পরিষ্কার ও স্বচ্ছ পানিতে ডেঙ্গু বিস্তার লাভ করত। এখন নর্দমা ও নোংরা পানিতেও জন্মাচ্ছে। তাহলে বুঝতে হবে ধরনে পরিবর্তন এসেছে। এখন দরকার সচেতনতা বাড়ানো। কারণ ঘর থেকেই জন্ম নিচ্ছে এডিস মশার লার্ভা থেকে ডেঙ্গু।

এ বিষয়ে সবাই উদাসীন। বিশেষ করে ঘরে রাখা ফুলের টব ও যত্রতত্র পানি জমিয়ে রাখার কারণে মহামারি রূপ নিচ্ছে। এক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনে বড় ফ্যাক্টর। তীব্র তাপপ্রবাহের পর এখন বৃষ্টির ঘনঘটা। এর নেপথ্যের কারণ গাছপালা কম লাগানো ও শহরের বিস্তৃতি বাড়ানো।

প্রতিটি হাসপাতালে ডেঙ্গুর কর্নার রয়েছে। কিন্তু রোগীর চাপ বাড়লে আইসিইউসহ আনুষঙ্গিক অনেক কিছুর প্রয়োজন হয়। এর জন্য প্রস্তুতি প্রয়োজন হয়।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত