জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে ঢাকায় মানব বন্ধন এবং সাইকেল র্যালী অনুষ্ঠিত
”পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তণ রোধে সমন্বয়বিহীন জি-২০ এর উন্নয়ন পরিকল্পনা বুমেরাং হয়ে দেখা দেব।”
জি-২০ ভূক্ত দেশগুলোর জলবায়ু ন্যায্যতা বিহীন উন্নয়ন পরিকল্পনা আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনার অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা)‘র সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল।
তিনি বলেছেন, ”এই অঞ্চলের মানুষের মনের অভিব্যক্তি ও অভিজ্ঞতা তারা যদি আমলে না নেয়, তাহলে অনেক ভুল করবে। তাদের সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা বুমেরাং হয়ে দেখা দেবে।”
আজ শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩) রাজধানী ঢাকার শাহবাগে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে শরীফ জামিল এসব কথা বলেন। জি-২০ জোটের নেতাদের ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এই কর্মসূচির আয়োজন করে আসিয়ান পিপলস মুভমেন্ট অন ডেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এপিএমডিডি)এবং সহআয়োজক ছিল ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, ইকুইটি বিডি, ইয়ুথ নেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস, সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ব্রতী, গ্লোবাল ল’থিংকার্স সোসাইটি, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন এবং বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ।
শরীফ জামিল বলেন, ”তারা নিজেদের দেশে পরিবেশ দূষণকারী শিল্প কারখানা বন্ধ করে সেগুলো আমাদের দেশে চালিয়ে পণ্য কিনে নিবে, এটা আর হতে দেওয়া যাবে না।
আমরা ঋণ চাই না, আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিপূরণ চাই। জলবায়ু পরিবর্তণের জন্য আমাদের যে পরিবেশ জনিত বিপর্যয় ঘটছে, পূণঃপূণিক বন্যা, জ্বলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিজড়, ভূমি ধ্বস জীবন ও সম্পদের ক্ষয় হচ্ছে – এর জন্য শিল্পোন্নত দেশগুলোর যে দায়, আমরা তার ন্যয্য ক্ষতিপূরণ চাচ্ছি।”
অনুষ্ঠানে বক্তাগণ বলেন যে, অপর্যাপ্ত তৎপরতার কারণে জি-২০ জোট তাদের প্রতিশ্রুত ইতিবাচক পরিবর্তন সাধনে বার বার ব্যর্থ হচ্ছে।
ক্রমাগতভাবে বিভিন্ন ধরণের দুর্বল নীতি গ্রহণের মাধ্যমে ঋণ সহায়তা, শুল্কনীতি, জ্বালানি-উৎস পরিবর্তন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার মতো বিষয়গুলোতে প্রত্যাশিত অবদান রাখতে জোটের ব্যর্থতা লক্ষ্য করা গেছে।
‘এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’ স্লোগানে বিশ্বের শক্তিশালী অর্থনীতির ১৯টি দেশ ও ইইউ সমন্বয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরাম জি-২০ বার্ষিক সম্মেলন ৯-১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, তারিখে ভারতের রাজধানী দিল্লীতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তারই প্রাক্কালে বাংলাদেশসহ এশিয়ার দেশে দেশে জলবায়ুর ন্যয্যতার দাবীতে এরূপ কর্মসূচী পালিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু ক্ষতিপূরণ আদায়ে সম্মেলণে যোগদান করবেন। বক্তাগণ জি-২০ দেশের ফোরামে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেন আমাদের জলবায়ুর ন্যয্যতা সঠিকভাবে তুলে ধরে ন্যয্য ক্ষতিপূরণ আদায় করতে পারেন সে জন্য সাফল্য কামনা করে।
অনুষ্ঠানে মানববন্ধন ও সাইকেল র্যালীর পাশাপাশি ঢাকা ইউনিভার্সিটি অব মাইম অ্যাকশন পরিবেশ বিষয়ক মূকাভিনয় প্রদর্শন করে। বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ এবং কেরানীগঞ্জ সাইক্লিং এর প্রায় শতাধিক সাইকেলিস্ট র্যালিতে অংশ গ্রহণ করে।
সাইকেল র্যালীটি রাজধানীর শাহবাগ হতে শুরু করে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ, শিল্পকলা একাডেমী, হাইকোর্ট, টি এসসি প্রদক্ষিণ করে পূনরায় শাহবাগ্েসে শেষ হয়।
ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমিন মুরশিদের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এ এস এম বদরুল আলম, কোস্ট ফাউন্ডেশনের উপ-নির্বাহী পরিচালক সনৎ কুমার ভৌমিক, সিপিআরডি-এর প্রধান নির্বাহী মো.শামসুদ্দোহা, বাংলাদেশ প্রতিগযোগিতা কমিশনের সদস্য এম এস সিদ্দিকী, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি মো: আমিনুল ইসলাম টুববুস প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে ধানমন্ডি টুরিষ্ট সাইক্লিস্ট এর সভাপতি মোছ তাহাজ্জত হোসেন, গ্রীন পেজের উপদেষ্টা পরিবেশবিদ প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমানসহ বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জলবায়ু কর্মী উপস্থিত ছিল।
সভার সভাপতি জলবায়ু ন্যায্যতার দাবীতে ভবিষ্যতে সখল স্তরের অংশগ্রহন ও দাবী আদায়ের সফলতা কামনা করে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করেন।