জলবায়ুর উষ্ণায়নের ফলে আশঙ্কাজনকহারে মারা যাচ্ছে অ্যান্টার্কটিকার পেঙ্গুইন
অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশে বসবাস করা এমপেরর পেঙ্গুইনের ছানারা মারা যাচ্ছে আশঙ্কাজনকহারে। ২০২২ সালের শেষদিকে অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের পশ্চিমে বেলিং-শউসেন সাগরের ১০ হাজার ‘এমপেরর পেঙ্গুইন’ এর ছানা মারা গেছে।
এর জন্য জলবায়ুর উষ্ণায়নের ফলে বরফ গলে যাওয়াকে দায়ী করেছেন বিজ্ঞানীরা। যা হুমকির মুখে ফেলেছে পেঙ্গুইনের জীবনচক্রকে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে, বর্তমান শতাব্দীর শেষ নাগাদ ৯০ শতাংশেরও বেশি এমপেরর পেঙ্গুইন বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ, পেঙ্গুইন প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে বড় ‘এমপেরর পেঙ্গুইনে’র আবাসস্থল। সাপ্রতিক বছরগুলোতে অ্যান্টার্কটিকায় গণহারে মারা যাচ্ছে এমপেরর পেঙ্গুইন এর ছানারা।
২০২২ সালের শেষ দিকে মহাদেশটির পশ্চিমে বেলিং-শউসেন সাগরে ১০ হাজার পেঙ্গুইন ছানা মারা গেছে। এর জন্য জলবায়ুর উষ্ণায়নকে দায়ী করেছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ২০১৬ সাল থেকে অ্যান্টার্কটিকায় আশঙ্কাজনকহারে বরফ গলছে। ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬০টিরও বেশি এমপেরর পেঙ্গুইন কলোনির এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি ছানা।
মূলত, মার্চ ও জুন মাসে সাগরের পানিতে নামে প্রাপ্তবয়স্ক এমপেরর পেঙ্গুইন। এসময়ের মধ্যে এরা ডিম পাড়ে এবং তা থেকে বাচ্চা ফুটায়। এসব ছানাদের পানি নিরোধক পালক না গজানো পর্যন্ত তাদের মুখে খাবার তোলে দেয়। পরবর্তী মৌসুমে এসব তরুণ পেঙ্গুইনরা প্রজননে অংশ নেয়।
তবে বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে অ্যান্টার্কটিকার বরফ গলে যাওয়ায় পেঙ্গুইনদের এই জীবনচক্র হুমকির মুখে পড়েছে। স্যাটেলাইট রেকর্ড থেকে জানা গেছে, ছানা পেঙ্গুইনদের শরীরের পানি নিরোধক পালক গজানোর আগেই গলে যাচ্ছে অ্যান্টার্কটিকার বরফ।
ফলে বরফজলে ডুবে বা হিমায়িত হয়ে অকালে মারা যাচ্ছে পেঙ্গুইন ছানারা। বেলিং-শউসেন সাগর সেক্টরে পাঁচটি পেঙ্গুইন কলোনি পর্যবেক্ষণ করে ‘কমিউনিকেশনস আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট জার্নালে’ এসব তথ্য প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা।
এদিকে, পৃথিবীর সবচেয়ে বিপন্ন প্রাণীদের তালিকায় এমপেরর পেঙ্গুইনকে অন্তর্ভুক্ত করেছে ‘ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার’।
তবে জলবায়ুর উষ্ণায়ন চলতে থাকলে, বর্তমান শতাব্দীর শেষ নাগাদ এমপেরর পেঙ্গুইনের ৯০ শতাংশেরও বেশি বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।