গ্রেটা থুনবার্গ নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য আবার মনোনীত হয়েছেন
নোবেল শান্তি পুরষ্কারের (Nobel Peace Price) জন্য মনোনীত হলেন পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ (Greta Thunberg)। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনিই এখনও বিশ্বের মধ্যে অন্যতম মুখ। মনোনয়নের তালিকায় রয়েছে রাশিয়ার পুতিন–বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ আলেক্সি নাভালনি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও সহ আরও অনেকে। এই নামগুলি তাঁরাই মনোনীত করেছেন যাঁদের আগেও নোবেল বিজয়ীদের মনোনীত করার ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে।
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: বড়দের নির্বুদ্ধিতায় বিষিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী। প্রতি শুক্রবার স্কুল না গিয়ে প্রতিবাদ শুরু করেছিল। বয়স তখন মধ্য কৈশোরে। ওই বয়সেই সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে বিশ্বের তাবড় ধনকুবেরকে। বর্তমানে অষ্টাদশী অভিনব ভাবনায় স্কুলের সহপাঠীদের নিয়ে পরিবেশ বাঁচানোর লক্ষ্যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি গ্রেটা থুনবার্গ (Greta Thunberg)। যিনি শুধু পরিবেশ (Environment) রক্ষার প্রচার করে উঠে এসেছে লাইমলাইটে। এবার তাঁকেই নোবেল শান্তি পুরষ্কারের (Nobel Peace Prize) জন্য মনোনীত করা হল।
এর আগেও ২০১৯ সালে জলবায়ু পরিবর্তনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকার জন্য গ্রেটা থুনবার্গকে শান্তি পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করা হয়। সুইডিশ পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে ‘স্কুল স্ট্রাইক’ আন্দোলনের মুখ ছিলেন তিনি।
বিশ্বব্যাপী সংসদ সদস্যদের থেকে শুরু করে প্রাক্তন বিজয়ী এবং হাজার হাজার মানুষ নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য প্রার্থীদের নাম প্রস্তাব করতে পারেন। রবিবারই মনোনয়নের বিষয়টি বন্ধ হয়ে গিয়েছে তাই আর কারোর নাম পাঠানো যাবে না।
পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট অসলো এর পরিচালক হেনরিক উর্দাল বলেছেন, ‘নরওয়ের আইন প্রণেতারা ২০১৯ বাদে, ২০১৪ থেকে প্রতি বছর এই ইভেন্টের বিজয়ী মনোনীত করেছেন। এ বছর যদিও একটু আলাদা ধরনের ইভেন্ট হবে।’ তবে নরওয়ে নোবেল কমিটি, যাঁরা বেছে নেন কে বিজয়ী হবেন, মনোনয়ন নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
তবে এক সূত্রের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, নরওয়ে আইন প্রণেতারা থুনবার্গ, নাভালনি ও হু ছাড়াও মনোনীত করেছেন আরও অনেককেই। এই নোবেলের জন্য বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ মনোনীত হয়েছে।
এছাড়াও ২০২১ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মনোনীত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ, বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, গণমাধ্যম অধিকারের সংস্থা আরএসএফ ও বেলারুশের বিরোধী দলের নেতারা যাদের দলের নাম এসভেৎলানা তিখানোভস্কায়া।
অন্যদিকে, রাশিয়ায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নাভালনির ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিতে চেয়ে তাঁর নাম মনোনয়ন করেছেন নরওয়ে পার্লামেন্টের সদস্যরা। যদিও আগে নাভালনির নাম প্রস্তাব করেছিলেন রাশিয়ার শিক্ষাবিদরা। তাতেই সিলমোহর দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া আরও নাম আছে এই তালিকায়। জানা গিয়েছে, কোভিড পরিস্থিতিতে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার যেসব কর্মীরা দরিদ্র দেশগুলিতে কাজ করেছেন, তাঁরা নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছেন। নিজের কৃতিত্বের জন্য গ্রেটা থুনবার্গ আগেও নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন।
তবে শেষপর্যন্ত পুরস্কার প্রাপ্তি হয়নি। ২০২১-এ গ্রেটা নোবেল পেলে সাম্প্রতিক সময়ে তা হবে দ্বিতীয় কিশোরীর নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্তি। এর আগে ২০১৪ সালে শিশুদের শিক্ষার অধিকার নিয়ে কাজ করে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেছিল পাকিস্তানি কিশোরী মালালা ইউসুফজাই (Malala Yusafzai)। সে বছর ভারতের সমাজকর্মী কৈলাস সত্যার্থীর সঙ্গে মালালা এই বিরল কৃতিত্বের অধিকারী হয়েছিল। এবার হয়ত গ্রেটা থুনবার্গের পালা।
আগামী অক্টোবরের শুরুতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হবে। গত বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।