গভীর রাতে পরিবেশ ধ্বংসকারি ব্যাটারি পুড়িয়ে সিসা তৈরি
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদীঘি এলাকার গভীর বনে প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংসকারি ব্যাটারি পুড়িয়ে সিসা তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে। এর বিষাক্ত ধোঁয়ায় বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে আশে পাশের প্রাণীকূল।
শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। প্রতিকার চেয়েও কোন ফল পাচ্ছেন এলাকাবাসী। এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত হয়েছেন অনেকে।
সাগরদীঘি ইউনিয়নের মালির চালা ও কামালপুর এলাকায় বনের ভেতর ব্যাটারি পুড়িয়ে দু’টি কারখানায় তৈরি করা হচ্ছে সিসা। গভীর রাতে শুরু হয় ব্যাটারি পুড়ানোর কাজ। ভোর হওয়ার আগেই বন্ধ করে দেয়া হয়।
কয়লা পুড়িয়ে একটি আগুনের কুন্ডলি সৃষ্টি হয়ে সিসা তরল হয়ে মিশ্রিত এ্যাসিড, প্লাস্টিকসহ অন্যান্য ডাস্ট পুড়ে ধোঁয়া উড়ে গিয়ে সিসা পরিশোধিত হয়। এ সময় বিষাক্ত ধোঁয়া আশেপাশের গ্রাম গুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। ধোঁয়ার কারণে মানুষের শ্বাস বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম হয়।
ইতিমধ্যে অসংখ্য গবাদি পশু মারা গেছে। বনের জীববৈচিত্রের উপরও প্রভাব ফেলছে এই ধোঁয়া। বন্যপ্রাণি গুলোও হুমকির মধ্যে রয়েছে। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে সরকারি বন।
স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু লোকজনের প্রত্যক্ষ ইন্দনে বহিরাগতরা এখানে দিনের পর দিন পরিবেশ দূষণ করে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এলাকার হায়দার আলী বলেন, রাতের বেলা যখন ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে তখন শ্বাস নেয়া যায় না। দম বন্ধ হয়ে আসে। আমি শ্বাস কষ্টের রোগী।
একই এলাকার কামাল খান বলেন, কোথায় থেকে কে এসে সিসা তৈরি কারখানা করেছে জানি না। তবে এটা বন্ধ করা না হলে মানুষের বসবাসের অনুপযোগি হয়ে যাবে।
সাগরদীঘি এলাকার যুবক মামুন বলেন, আমি এলাকাবাসীর পক্ষে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন করেছি এই পরিবেশ ধ্বংসকারী অবৈধ কারখানা উচ্ছেদ করার জন্য।
এ ব্যাপারে সাগরদীঘি ইউনিযন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফেজ মওলানা মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ বাহার বলেন, এসব বিষয়ে আমাদের সরাসরি ব্যবস্থা নেয়ার কোন এখতিয়ার নেই। তবে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক বলেন, এ ব্যাপারে আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।