31 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ১০:০১ | ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
গত ২৭ বছরে ঢাকার তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস
জলবায়ু বাংলাদেশ পরিবেশ

গত ২৭ বছরে ঢাকার তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস

গত ২৭ বছরে ঢাকার তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস

রাজধানী ঢাকার স্থলভাগের গড় তাপমাত্রা প্রতিবছর বেড়েছে। ২৭ বছরে এ তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৪৩ ডিগ্রি। হিসাব অনুযায়ী প্রতিবছরের গড় দাঁড়ায় শূন্য দশমিক ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল রেনেসাঁয় তাপপ্রবাহ নিয়ে এক সেমিনারে এ গবেষণা তথ্য জানানো হয়েছে। সেমিনারে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে চলতি মৌসুমের তাপপ্রবাহের প্রভাব নিয়ে ব্র‍্যাকের জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচি, নগর উন্নয়ন কর্মসূচি ও দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির পরিচালক ড. মো. লিয়াকত আলী এই গবেষণা তথ্য জানান।

ব্র্যাকের জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারের উদ্দেশ্য ছিল তাপপ্রবাহের বিজ্ঞান-নীতি অনুশীলন। সমন্বয় সম্পর্কে নীতিনির্ধারক, শিক্ষাবিদ, গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজকে অবগত ও সচেতন করা।

লিয়াকত আলী বলেন, ‘১৯৯৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ঢাকার তাপমাত্রা বেড়েছে ৬ দশমিক ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর প্রতিবছরে বেড়েছে শূন্য দশমিক ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এ ছাড়া ঢাকায় এই সময়ে অবকাঠামোগতভাবে বেড়েছে ৬৭ শতাংশ এলাকা। ১৯৮৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সবুজায়ন ১৭ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ২ শতাংশ।’

তিনি আরো বলেন, ‘বস্তিতে মানুষেরা টিনের ঘরে বসবাস করছে, যেখানে প্রচণ্ড গরম থাকছে। অন্যদিকে সন্ধ্যার পর ইটের ঘরগুলো গরম হয়ে উঠছে।’

গবেষণায় বলা হয়, ঢাকা প্রতিবছর ছয় বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের শ্রমমূল্য হারাচ্ছে। এমন চলতে থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ পাঁচ শতাংশ কর্ম ঘণ্টা হারাতে পারে। যা ৩০ লাখ ৮৩ হাজার পূর্ণ দিবস চাকরির সমান। সেই সঙ্গে জিডিপি হারাবে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ।

সেমিনারে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। এপ্রিলের শুরু থেকেই এখানে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ দেখা যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলছেন, শিগগিরই এ থেকে পরিত্রাণ নেই।



বাংলাদেশ ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে ৭৬ বছরের মধ্যে দীর্ঘতম তাপপ্রবাহের রেকর্ড ভেঙেছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঘটনার কারণে জলবায়ু বিপন্ন অঞ্চলের জনগোষ্ঠী বরাবরই ভুক্তভোগী। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে অধিকাংশ মানুষ হিট স্ট্রোকের মতো নানা রকমের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন।

গবেষণায় বলা হয়, চলতি বছর এপ্রিলের তাপপ্রবাহের কারণে ২০ শতাংশ বোরো ধানের উৎপাদন হুমকির মুখে ছিল। ৩০ শতাংশ আমের মুকুল নষ্ট হয়েছে। পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রি দুই সপ্তাহে ২০০ কোটি টাকার লোকসান গুনেছে।

আরও বলা হয়, তাপপ্রবাহে ক্ষতি হয়েছে সাতক্ষীরা ও যশোর জেলা। এই দুই জেলায় চিংড়ি চাষ, ধান চাষ, আম, গবাদিপশুর ক্ষতি হয়েছে। এই দুই জেলায় শ্রমজীবী মানুষের কর্মঘণ্টা পরিবর্তন হয়েছে।

ভোর ৫টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত কাজের পর আবার সন্ধ্যায় কাজ করতে হয়েছে। এতে করে প্রতিদিন শ্রমিকেরা ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কম পেয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলে পানির লিটারপ্রতি দাম বেড়েছে ১ টাকা করে।

সেমিনারে ঢাকা-উত্তর সিটি করপোরেশনের চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন বলেন, ‘আমাদের এটা বিশ্বাস করতে হবে যে ঢাকা কখনোই জলবায়ু সহনশীল করে তৈরি করা হয়নি। এটা কখনোই চিন্তা করা হয়নি যে এর ফলে নারী ও শিশুদের জন্য কী পরিমাণ ক্ষতিকর পরিবেশ তৈরি হবে।’

বুশরা বলেন, সেই অনুযায়ী তিনি এই সময়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেননি। কিন্তু যতটুকু সম্ভব ছিল, সেটাই তিনি করেছেন। এখানে অনেকগুলো বিষয় থাকে। ঢাকা শুধু সিটি করপোরেশন নিয়ন্ত্রণ করে না। আরও কয়েকটি সেবা সংস্থা এখানে কাজ করে।

তিনি বলেন, শহরে কাজ করা চ্যালেঞ্জিং থাকে। কারণ, অনেক কর্তৃপক্ষ পৃথকভাবে শহর পরিচালনা করে এবং চরম আবহাওয়ার সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য সুশাসন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজন।

তিনি উল্লেখ করেন, কাচের ফ্যাসাড বা কাচের দেয়ালযুক্ত ভবনগুলো ভবনের পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তোলে। তাই বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কাচের ব্যবহারের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের প্রয়োজনীয়তায় জোর দিয়েছেন তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে, এমন আবহাওয়া মোকাবিলা করার জন্য।

আমাদের স্বাস্থ্যগত বিষয়ে নজর রাখতে হবে। আমাদের সেই রকম সক্ষমতা নেই। সেটি আমাদের তৈরি করতে হবে। বিভিন্ন বয়সের মানুষের তাপপ্রবাহ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত করতে হবে। আমাদের মন্ত্রণালয় এসব বিষয়ে কাজ করছে।’

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন। তাপপ্রবাহের কারণ ও পূর্বাভাস নিয়ে বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) অধ্যাপক এলফাতিহ এ বি এলতাহির ও গবেষক ইয়েওন উ চোই।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত