ক্ষুদ্র প্রাণীদের দল রয়েছে অ্যান্টার্কটিকার তলদেশে
শুভ্র বরফের নিচে মস্ত বড় এক মহাদেশ। রূপকথার মতো মনে হলেও বিষয়টা আসলে তেমনই রহস্যে ঘেরা। এখন পর্যন্ত যার পুরোপুরি কুল-কিনারা পারেনি আধুনিক বিজ্ঞান।
তবে প্রচলিত অনুসন্ধানমুখী জ্ঞান থেকে এ বিষয়ে জানার চেষ্টা করা হয়। অ্যান্টার্কটিকার বরফের নিচে কী রয়েছে তা জানতে বিমান থেকে পাঠানো হয় বেতার তরঙ্গ।
তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের প্রতিধ্বনি বিশ্লেষণ করে অনেক বিষয়েই ধারণা পাওয়া যায়। বরফের নিচে কেমন দুনিয়া অপেক্ষা করছে, সেটা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা করেন বিজ্ঞানী, গবেষকরা।
অ্যান্টার্কটিকার বরফ ৪.৭ কিলোমিটার পুরু। সেখানে পানির গভীরতা এতই বেশি, ৫টি বুর্জ খলিফা একটির পর একটি বসালে এর সমান হবে।
বরফের নিচে লুকিয়ে আছে লাখ লাখ বছরের পুরোনো রহস্য। যার নিচে রয়েছে প্রাণ ও জীবনের অস্তিত্বও। ২০২২ সালে স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে দেখা যায়, অ্যান্টার্কটির একটি অংশে ফাটল দেখা গেছে। সেই ফাটলের ৫০০ মিটার গভীরে বিজ্ঞানীরা ক্যামেরা স্থাপন করেন।
যেখানে অস্বাভাবিক নড়াচড়া করছে, এমন অবজেক্ট ধরা পড়ে। পরে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন, বরফের নিচে ক্ষুদ্র প্রাণীদের দল রয়েছে। সেখানে সুরঙ্গের মতো গোপন নদীর সন্ধানও পাওয়া গেছে।
চিংড়ির মতো বিশেষ প্রাণের সন্ধান পান তারা। ৫০০ মিটার গভীরে এই প্রাণীগুলো কী খেয়ে বাঁচে, তাও একটি বড় রহস্যের বিষয়। ধারণা করা হয়, একটা সময় এখানে গাছপালা ছিল। ২০২২ সালে এখানকার একজন নাবিক দৈত্যাকৃতির জেলিফিশ দেখতে পেয়েছিলেন। যা লম্বায় ৩৩ ফুট।
এ ধরনের জেলিফিশ সাধারণত সমুদ্রের তিন হাজার পাঁচশ ফুট গভীরে দেখা যায়। কিন্তু অ্যান্টার্কটির সমুদ্র তলদেশে বিষয়টি রহস্য হিসেবেই রয়ে গেছে। সবচেয়ে সাড়া জাগানো বিষয় হচ্ছে, সেখানে নতুন এক ভূ-খণ্ডের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
অ্যান্টার্কটিকার বরফের নিচে কয়েক লাখ বছর ধরে ঢাকা পড়ে আছে সেই রহস্যময় গুপ্তধন। নতুন ভূ-খণ্ডটি বরফের দুই কিলোমিটার গভীরে অবস্থিত। যার আয়তন ৩২ হাজার বর্গ কিলোমিটারের মতো।
অর্থাৎ আকারে এটি বেজিয়ামের চেয়েও বড়। সময়ের আবর্তনে বরফের নিচে ঢাকা পড়ে যায় ভূখণ্ডটি। বলা হচ্ছে, এ সম্পর্কে জানতে আরও বিস্তর গবেষণার প্রয়োজন।