ক্ষতিকর জ্বালানি ব্যবহার বন্ধের দাবিতে জলবায়ু ধর্মঘট
ক্ষতিকর জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির দাবিতে বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘট পালন করেছেন জলবায়ুবিষয়ক তরুণ কর্মীরা। শুক্রবার এ উপলক্ষে রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় তরুণ কর্মীরা সমবেত হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পদযাত্রা করেন।
সুইডেনের জলবায়ুবিষয়ক কর্মী গ্রেটা থুনবার্গের গড়ে তোলা স্কুলশিক্ষার্থীদের পরিচালিত আন্দোলন ‘ফ্রাইডেস ফর ফিউচার’ আহ্বানে এই জলবায়ু ধর্মঘট পালিত হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। আজ রাজধানীতে ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস এবং বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) যৌথভাবে এর আয়োজন করে।
ক্যাপসের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য বায়ুদূষণ হ্রাস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলার জন্য এখনই জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন। আমাদের মনে রাখতে হবে, জলবায়ু সংকট আর বায়ুদূষণ একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।’
অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জমান আরো বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এই সংকট মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত ও গোষ্ঠীগত সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি। তিনি জোরালোভাবে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের আহ্বান জানান।
ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান বলেন, ‘জীবাশ্ম জ্বালানিতে আমাদের নির্ভরতা কমানো যে কত জরুরি, সেটা বোঝার জন্য দীর্ঘকাল অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই। জলবায়ু দুর্যোগজনিত ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় কাজ করার এখনই সময়। আমাদের অবশ্যই নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে উল্লেখযোগ্যভাবে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।’
জলবায়ু ধর্মঘটে জলবায়ুবিষয়ক তরুণ কর্মীরা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়, বাড়তি বিদ্যুৎ বিল ও ঘন ঘন লোডশেডিং এবং মুদ্রাস্ফীতির কারণে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলোও তুলে ধরেন। তরুণেরা বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের আসন্ন বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনায় নবায়নযোগ্য শক্তির অনুপাত উল্লেখযোগ্যহারে বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।
বিশিষ্ট জলবায়ুবিজ্ঞানী ও ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক সালিমুল হক তরুণদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে এক বার্তায় বলেন, ‘জলবায়ু সংকট একটি স্পষ্ট এবং বর্তমান বিপর্যয়, যা দ্রুত কার্যক্রমের দাবি রাখে।
এই সংকটের বোঝা অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে দরিদ্র মানুষদের ওপর পড়লেও, ধনীরা এর জন্য মূলত দায়ী। জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর আমাদের নির্ভরতা কমাতে। আরও টেকসই এবং ন্যায়সংগত নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসগুলোতে রূপান্তর করার জন্য আমাদের অবশ্যই দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।’