ক্রমশ পৃথিবীকে গিলে খেতে আসছে সূর্য
যে গনগনে, ফুটন্ত আগুনের গোলায় ভরপুর প্রাণশক্তি, যে নক্ষত্রের জন্য প্রাণবন্ত এই পৃথিবী, সেই প্রাণদায়ী সূর্যই কিন্তু পৃথিবীকে গিলে খেতে আসছে! শুনে অবাক হচ্ছেন?
কিন্তু জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে আসছে তেমনই আশঙ্কার কথা। নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের জটিল থিওরি প্রয়োগ করে এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তাঁরা। তা অবশ্য সাধারণ মানুষের বোধের বাইরে নয়।
ব্যাখ্যায় বরং পরে আসা যাক। রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল জার্নালের রিপোর্ট দেখে কিন্তু চিন্তায় মাথায় হাত সকলের। তবে কি পৃথিবীর ধ্বংস আসন্ন? সেই উত্তরও দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
ব্যাপারটা ঠিক কী? নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, সূর্য তো বিপুল হাইড্রোজেনের ভাণ্ডার। যা তার জীবনীশক্তি, জ্বালানিশক্তি। তাই তো আগুনের বিশাল বলয় হয়ে ধিকিধিকি তাপ ছড়ায় মহাবিশ্বে।
আর সেই তাপশক্তি আর আলোকশক্তি থেকেই পৃথিবীতে প্রাণের স্ফূরণ। রুক্ষ মাটিতে সবুজের ছোঁয়া, হৃদস্পন্দনের ধুকপুকানি। কিন্তু সব রসদই তো ফুরোয় একদিন।
সেভাবেই সূর্যের অভ্যন্তরের জ্বালানি হাইড্রোজেনে ভান্ডার ফুরিয়ে আসছে ক্রমশ। আর তা শেষ হয়ে গেলেই ক্ষুধার্ত হয়ে পড়বে সূর্য। তারপরই নেমে আসতে পারে মহাজাগতিক বিপর্যয়।
রাক্ষুসে খিদে নিয়ে দৈত্যাকার সূর্য এবার নিজস্ব জ্বালানি সংগ্রহে ছুটে যাবে তার নিকটবর্তী গ্রহগুলির দিকে। সূর্যের সবচেয়ে কাছের তিনটি গ্রহ – বুধ, শুক্র, পৃথিবী।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের হিসেব বলছে, ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হবে সৌরজগতে। ঠিক সৃষ্টির সময় যেমন তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল। একের পর এক নিকটবর্তী গ্রহকে গিলে যেমন ঔজ্জ্বল্য ফিরেছিল মহাকাশের নক্ষত্রদের।
আবার সেই মহাজাগতিক পরিবর্তনের সাক্ষী থাকবে অনন্ত। আনুমানিক ৪৬০ কোটি বছর আগে যে পরিস্থিতি হয়েছিল, সেই অতীতের দিন ফিরে আসবে।
তবে সেই দিন এখনও অনেক দূরে। ততদিনে মানবসভ্যতা টিকে থাকবে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ী বিজ্ঞানীরা। এই মুহূর্তে সূর্য মধ্যবয়সী। তার অভ্যন্তরের হাইড্রোজেন, হিলিয়াম গ্যাসের ভাণ্ডার স্থিতিশীল।
ফিউশন পদ্ধতিতে বিকিরণ চলছে। এরপর তা একসময়ে তা শীতল হয়ে পরিণত হবে এক রাক্ষুসে নক্ষত্রে। পৃথিবী বেঁচে গেলেও বুধ, শুক্রের হয়ত ঠাঁই হবে সূর্যের উদরে।