কপ–২৭ সম্মেলনে অগ্রগতি অতি সামান্য
জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক শীর্ষ সম্মেলন কপ–২৭ শেষ হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত অগ্রগতি হয়েছে সামান্যই। দেশগুলো এবারের সম্মেলনে একটি কার্যকর জলবায়ু চুক্তি কিংবা ঘোষণার বিষয়ে একমত হতে পারেনি। তাই দেশগুলোর কাছে দ্রুত কার্যকর ও সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা।
২০২০ সালের পরবর্তী সময়ে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে একটি ফ্রেমওয়ার্ক ঘোষণা করার চেষ্টা চলছে। এ পর্যন্ত ২২টি শর্তের মাত্র দুটির বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে দেশগুলো।
এ পরিস্থিতিতে জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা আজ একটি বিবৃতি দিয়ে দ্রুত কার্যকর ও সম্মিলিত প্রচেষ্টা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, আগামী মাসে কানাডার মন্ট্রিলে বসছে জাতিসংঘের জীববৈচিত্র্যবিষয়ক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক। ওই বৈঠকে চূড়ান্ত মতৈক্যে পৌঁছানো জরুরি।
বিবৃতিতে সই করেছেন ফ্রান্সের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরেন্ট ফ্যাবিয়াস, জাতিসংঘের সাবেক জলবায়ু প্রধান ক্রিস্টিয়ানা ফিগুয়েরেস, ফরাসি জলবায়ু দূত লরেন্স তুবিয়ানা। তাঁরা সবাই ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু চুক্তির খসড়া প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
প্যারিস চুক্তির কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘২০১৫ সালে বিশ্ব একবার এক হয়েছিল। এখন আবারও এক হওয়ার সময় এসেছে। ২০৩০ সালের আগেই বাসযোগ্য বিশ্ব গড়তে দ্রুত সম্মিলিত উদ্যোগ নিন।’
বিশ্বনেতাদের প্রতি বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা বারবার সুযোগ নষ্ট করতে পারি না, এখন সাহসী নেতৃত্ব প্রয়োজন।’
এদিকে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের ঘোষণাপত্রে দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে তাদের আগের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখা এবং ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ চালু রাখার কথা বলেছে। তবে জলবায়ু বিশ্লেষকদের দাবি, এটা পর্যাপ্ত নয়। বিশ্ববাসী এসব দেশের কাছে আরও সুনির্দিষ্ট কিছু প্রত্যাশা করে।
এ বিষয়ে কপ–২৭ সম্মেলনে ঘানার আলোচক হেনরি কোকোফু বলেন, ‘জি–২০–এর ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানাই। তবে এসব দেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যের বিষয়ে নিজেদের উদ্যোগ বাড়াতে হবে এবং তা সময় ফুরানোর আগেই করতে হবে।’
বারবাডোজের প্রধানমন্ত্রীর জলবায়ু অর্থায়নবিষয়ক বিশেষ দূত অভিনাশ প্রসাদ কপ–২৭ সম্মেলনে বলেন, ‘জি–২০ নেতারা জলবায়ু অর্থায়নের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। সময় ফুরিয়ে যাওয়ার আগে তাঁরা বড় একটি সুযোগ হাতছাড়া করেছেন।’
আমাজন বন রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন লুলা। এ বিষয়ে তিনি তাঁর পূর্বসূরি জইর বলসোনারোর বন উজাড়ের নীতি ছুড়ে ফেলবেন বলে জানিয়েছেন।
তাই মিসরে এবারের জলবায়ু সম্মেলনে লুলার অংশগ্রহণ আলাদা গুরুত্ব পেয়েছে। সম্মেলনস্থলে আলোচক ও অংশগ্রহণকারীরা তাঁকে সাদরে স্বাগত জানিয়েছেন।