কক্সবাজারে ধ্বংস হওয়া হাতির অভয়ারণ্যে দিনভর অভিযানে দখলমুক্ত
কক্সবাজারের রামু উপজেলায় হাতির অভয়ারণ্য ধ্বংস করে গড়ে তোলা বাণিজ্যিক খামার ও বাগান উচ্ছেদ করেছে বন বিভাগ। শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ির চেইন্দা এলাকার গহিন অরণ্যে অভিযান চালায় কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগ।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সরওয়ার আলমের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২৫ একর বনভূমি দখলমুক্ত করা হয়। এ সময় বনভূমিতে গড়ে তোলা পানের বরজ, গভীর নলকূপ, বৈদ্যুতিক সংযোগ, পাম্প মেশিন, বৈদ্যুতিক তার, ১ হাজার ফুট লম্বা পাইপসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
অভিযানে অবৈধভাবে নির্মিত কাঁটাতারের বেড়াসহ অন্যান্য স্থাপনা সরিয়ে নিতে দুই দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ওই এলাকায় ৫০ হেক্টর নতুন বাগান সৃজনে সাইনবোর্ড ও নার্সারি স্থাপন করেছে বন বিভাগ। তবে দখলদারদের কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
পাহাড়ে আনুমানিক ৭০ একর বনভূমি দখল করে বাণিজ্যিক খামার ও বাগান গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন স্থানীয় আবদুল আজিজ, আবু তাহের ও সাইদুলের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট। এরপর উচ্চ মহলের নির্দেশে বনে অভিযান চালায় বন বিভাগ।
দিনব্যাপী অভিযানে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শ্যামল কুমার ঘোষ, কক্সবাজার সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা সমীর রঞ্জন সাহাসহ বন বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশ নেন।
অভিযান শেষে সমীর রঞ্জন সাহা বলেন, অভিযানের সময় ঘটনাস্থলে দখলদারদের কাউকে পাওয়া যায়নি। তাই কেউ আটক হননি। তবে দখলদারদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। দখলমুক্ত করা ২৫ একর বনভূমিতে বনায়ন করা হচ্ছে। চারা রোপণ কর্মসূচিও শুরু হয়েছে। উদ্ধার বনভূমি কেউ যেন আবার দখল করতে না পারেন, সে ব্যাপারে বন বিভাগ সজাগ আছে।
পরিবেশবিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এনভায়রনমেন্ট পিপল’-এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, কারা বনভূমি দখল করে ফলের বাগান করেছিলেন, তাঁদের সবাই এলাকার পরিচিত মুখ।
গণমাধ্যমে তাঁদের নাম-পরিচয় প্রকাশিত হয়েছে। মামলায় তাঁদের আসামি না করলে বন বিভাগকে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। তা ছাড়া বনভূমি রক্ষায় নিয়মিত টহল জোরদারের পাশাপাশি বন বিভাগকে পুরো এলাকায় দ্রুত বনায়ন করতে হবে। অন্যথায় আবার এসব বনভূমি বেদখল হয়ে যেতে পারে।