উজানের ঢলে জুলাইয়ে বন্যার শঙ্কা, হুমকির মুখে পরিবেশ
আগামী সপ্তাহে দেশের উজানে ভারি বৃষ্টির আভাস রয়েছে। যার প্রভাবে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা অববাহিকায় পানি অনেক বাড়তে পারে। এমন পরিস্থিতিতে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে অল্প মেয়াদী বন্যার আভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, চলতি সপ্তাহে দেশের উজানের অববাহিকার অনেক স্থানে মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে সামগ্রিকভাবে সাতদিন বাড়তে পারে দেশের প্রধান সব নদ-নদীর পানি।
জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহের মাঝামাঝির দিকে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে বিভিন্ন জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যার শঙ্কা রয়েছে।
দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-মধ্যাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, মধ্যাঞ্চলের বহ্মপুত্র-যমুনা ও পদ্মা অববাহিকার লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, পাবনা, নওগাঁ এবং নাটোর জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যার শঙ্কা রয়েছে।
উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে ভারি বর্ষণে আকস্মিক বন্যা হতে পারে। বন্যা পূর্বাভাস সংক্রান্ত সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদনে আগামী ৭ দিনের আভাস জানায় বন্যা পূর্বাভাস এবং সতর্কীকরণ কেন্দ্র। ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার পানি স্থিতিশীল রয়েছে এবং বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।
বাংলাদেশ ও উজানের অববাহিকায় ভারতে অরুনাচল, আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের উপর আগামী ২৪ ঘণ্টায় মৌসুমী বায়ু সক্রিয় হতে পারে। যার ফলে চলতি সপ্তাহে অনেক স্থানে মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রভাবে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি সামগ্রিকভাবে ৭ দিন বাড়তে পারে ও জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহের মাঝামাঝি পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
এ সময় কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, পাবনা, নওগাঁ ও নাটোর জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থতির সৃষ্টি হতে পারে।
একই সময়ে উত্তরাঞ্চলের তিস্তা ও ধরলার পানি বাড়তে পারে। তাতে লালমনিরহাট, নীলফামারী এবং রংপুর জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্প মেয়াদী বন্যার সৃষ্টি হতে পারে।
দেশের উজানে ভারতের বিহার এবং উত্তর প্রদেশে মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণের আভাস রয়েছে। এ সময় গঙ্গা-পদ্মা অববাহিকায় পদ্মা নদীর কিছু স্থানে পানি বিপদসীমার উপরে যেতে পারে।
এ সময় মধ্যাঞ্চলের রাজবাড়ি, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও চাঁদপুর জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
তবে দেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে গঙ্গা অবাহিকার জেলাগুলোয় বন্যা সৃষ্টির শঙ্কা নেই বলে উল্লেখ করেন মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া।
আসাম-মেঘালয়ে ভারি বর্ষণের আভাস রয়েছে। এতে সুরমা, কুশিয়ারা ও মেঘনা অববাহিকায় কিছু স্থানে পানি বিপদসীমার উপরে অতিক্রম করলে আকস্মিক বন্যার শঙ্কা রয়েছে।
মাঝ আষাঢ়ে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় হতে পারে। আগামী সপ্তাহে দক্ষিণ পূর্ব পার্বত্য অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলায় ভারি বর্ষণে কিছু কিছু স্থানে ভূমিধসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে।