আমাদের দু:সাহসিক জলবায়ুর লক্ষ্যের বিষয়ে করুণ সত্যটি
( Vox news এ প্রকাশিত লেখক David Roberts এর প্রবন্ধের বাংলারূপ)
বাংলা রূপ দিয়েছে: সাদিয়া নূর পর্সিয়া(৭ম সেমিষ্টার স্টুডেন্ট,
ইংরেজী বিভাগ, আইইউবি, ঢাকা)
“এটি প্রায় নিশ্চিত যে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধকরণ কখনোই ঘটবে না। এটা স্বীকার করতে গিয়ে আশাহত হওয়া চলবে না।” - ডেভিড রবার্টস, ৩ জানুয়ারী, ২০২০,
২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে, জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত কাঠামো সম্মেলনে ইউএনএফসিসিসি (United Nations Framework Convention on Climate Change – UNCCC) অংশ নেওয়া দেশগুলি একটি সাধারণ লক্ষ্যে সম্মত হয়েছিল: বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে “প্রাক-শিল্প( ১৭৫০ সালের পূর্ব) স্তরের উপরে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে ধরে রাখা এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করার প্রচেষ্টাকে অনুসরণ করা।” এ পরিসরের নিম্ন সীমা, ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড, জলবায়ু কর্মীদের কাছে একটি বিশেষ ব্যাপার হয়ে উঠেছে।
এখনও কি সে লক্ষ্য পূরণ করা যাবে? কার্বন সংক্ষেপন থেকে এই অ্যানিমেশনটি একবার দেখা যাক:
UNEP: 1.5C climate target ‘slipping out of reach’ | @hausfath @robbie_andrew https://t.co/dGUfgnegzf pic.twitter.com/iYhyjRpRiM
— Carbon Brief (@CarbonBrief) January 10, 2020
মানবজাতির আবহাওয়া পরিস্থিতি এমনভাবে ধরতে পারে এর চেয়ে ভাল চিত্রলেখ আমি আর কখনও দেখেনি। যদি আমরা ২০ বছর আগে নির্গমনকে একটি স্থির গতিতে হ্রাস করতে শুরু করতাম, তবে হ্রাসের প্রয়োজনীয় গতি বছরে প্রায় ৩ শতাংশ হত, যা ভাল হত … আসলেই শক্তিশালী “বাস্তবধর্মী” হত – ইহা এখনও জরুরীভাবে দ্রুততার সাথে প্রয়োজন, এরূপ সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন ছিল যা মানব ইতিহাসে এর আগে কখনও দেখা যায় নি – তবে এটি অন্তত:পক্ষে কল্পনা করা সম্ভব ছিল।
যদিও আমরা তা করিনি। আমরা জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে জানতাম, বিজ্ঞানীরা চিৎকার করে জানিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু আমরা কর্ণপাতও করিনি। তখন থেকেই বৈশ্বিক নির্গমন বেড়েছে। মানুষ ১৯৮৮ সাল থেকে বায়ুমণ্ডলে আরও কার্বনডাইঅক্সাইড নিঃসরণ করেছে যখন জলবায়ু বিজ্ঞানী জেমস হ্যানসেন পূর্বের তুলনায় জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি সম্পর্কে কংগ্রেসে প্রথম সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।
এখন, ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে হ্রাস করার জন্য, কার্বণ নিঃসরণকে অনেক উঁচু থেকে ঝাঁপ দিতে হবে, ২০২০ সাল থেকে শুরু করে, নেট শূন্যতে পৌঁছানোর আগে পর্যন্ত প্রতি বছর ১৫ শতাংশ হারে হ্রাস করতে হবে।
এটি সম্ভবত ঘটবে না। তাপমাত্রা প্রায় নিশ্চিতভাবে ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডেরও বেশি করে বাড়তে থাকবে।
অনেক জলবায়ু কর্মী এ কথার চরম বিরুদ্ধে। প্রকৃতপক্ষে, তাদের মধ্যে অনেকেই আমার এ কথা বলায় ক্ষুব্ধ হবেন, কারণ তারা বিশ্বাস করেন যে এ আসন্ন সম্ভাবনার বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়া হলে এর উপর বিভিন্ন প্রকারের মারাত্মক পরিণতি ও প্রভাব দেখা দিবে। জলবায়ু বিশ্বের প্রচুর মানুষ – কেবল কর্মী এবং রাজনীতিবিদই নয়, বিজ্ঞানী, সাংবাদিক এবং দৈনন্দিন সংশ্লিষ্ট নাগরিকরা – তারা নিজেরাই তাদের ব্যক্তিগত চিন্তাধারার অবনতির আশঙ্কা সত্বেও জনসাধারণের অংশগ্রহণ ও সমর্থণকে তাদের আশাবাদকে প্রাধান্য দেন বলে ব্যক্ত করেছেন। তারা বিশ্বাস করেন যে জনসাধারণের অংশগ্রহণ ও সমর্থণ ব্যতীত জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ভঙ্গুর প্রচেষ্টা সম্পূর্ণরূপে ধসে পড়বে।
আমি মনে করি না এটি সত্যি, তবে আমি এটিও দাবি করতে পারি না যে এটি সত্যি নয়। জলবায়ু পরিবর্তনে জনগণকে কাজ করানোর জন্য কোন পদ্ধতি কাজে আসবে তা আসলে কেউ জানে না। সম্ভবত সমর্থণকারীদের একটি আনন্দজনক চেতনা বজায় রাখা প্রয়োজন; সম্ভবত কার্বণ নির্গমনের শেষ পরিণতির কথা জনসাধারনেরকে তাদের কার্বণ নির্গমণ সংশ্লিষ্ট কাজ ফিরিয়ে আনবে।
তবে আমরা যারা পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণের কাজ করি জনগণকে এমনটা বুঝানো আমাদের কাজ নয়। নেতাকর্মীরাই এটা করে। পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের সর্বোত্তম অভিমত জনগনের কাছে তুলে ধরতে আমরা বাধ্য, যদিও তা তাদের বিমর্ষ করে তুলতে পারে, এবং আমার অবস্থান থেকে, দেখে মনে হচ্ছে ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের লক্ষ্যটি সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ। দেখে মনে হচ্ছে আমরা ইতিমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের স্তরে আটকে পড়েছি যা বিজ্ঞানীরা ধ্বংসাত্মক হবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। আমি এটি পছন্দ করি না, আমি এটি “গ্রহণ করি” না, কিন্তু আমি এটি দেখতে পাচ্ছি এবং জনসাধারণের উদ্দেশ্যে আমার এ সম্পর্কে চুপ থাকা উচিত এ ধারণাটি আমি প্রত্যাখ্যান করি।
এ পোস্টে, আমি যে ১.৫ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড কীভাবে নতুন কর্ম পরিকল্পনা হয়ে দাঁড়াল এবং এটি ইতিমধ্যে নাগালের বাহিরে চলে গেছে – এটি বিশ্বাস করার কিছু কারণ দ্রুত পর্যালোচনা করব। তারপরে আমি ভেবে দেখবো এটি স্বীকার করলে কী হবে, এটি থেকে কী অনুসৃত হবে এবং লড়াইয়ের দিকে অগ্রসর হওয়ার অর্থ কী দাঁড়াবে।
১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড কীভাবে “শেষ সুযোগ” হয়ে উঠল
প্যারিসে গৃহীত নতুন লক্ষ্যটি বিজ্ঞানীদের এবং কর্মীদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিশ্বাসকে প্রতিফলিত করে যে ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের যে লক্ষ্যটি বছরের পর বছর ধরে একধরনের পূর্বনির্ধারিতভাবে কাজ করেছিল, তা কোনোভাবেই “নিরাপদ” ছিল না। এমন পর্যায়ে জলবায়ু পরিবর্তন অত্যন্ত বিপজ্জনক হবে। এ ভাবে ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড করার “প্রচেষ্টা” যুক্ত হয়।
তবে গত বছর পর্যন্তও বিশ্ব স্পষ্টভাবে ধারণা করতে পারছিলনা যে ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (২.৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট) এর চেয়ে ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (৩.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট) কতটা খারাপ হতে পারে। তবে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত আইপিসিসি (Intergovernmental Panel on Climate Change – IPCC) একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশের পরে এটি বুঝতে পারে। এর অনুসন্ধানগুলি ছিল মারাত্মক। এমনকি ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড “ছোট ছোট দ্বীপপুঞ্জ এবং স্বল্পোন্নত উন্নত দেশগুলিসহ কিছু সংবেদনশীল অঞ্চল” এর জন্য “উচ্চ আন্তঃসম্পর্কিত জলবায়ু ঝুঁকি” সৃষ্টি করতে পারে।
এ সমস্ত প্রভাবগুলি ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে আরো খারাপ হয়ে যায়। (বিশ্ব সাহায্য সংস্থার একটি কার্যকর তালিকা রয়েছে; কার্বন সংক্ষেপন থেকে এ চিত্রলেখটিও দেখুন) । অনেক উত্তাপের ঘটনা ২.৬ গুণ খারাপ হয়ে দাঁড়াবে, উদ্ভিদ ও মেরুদণ্ডী প্রজাতির বিলুপ্তি ২ গুণ বাড়বে, কীটপতঙ্গ প্রজাতির বিলুপ্তি ৩ গুণ বাড়বে এবং সামুদ্রিক মৎস্য ২ গুণ হারে হ্রাস পাবে।
প্রবালপ্রাচীর ( Coral Reef) এর ৭০ থেকে ৯০ শতাংশের মৃত্যু তখন ৯৯ শতাংশে গিয়ে পৌঁছবে। অনেক অরক্ষিত ও নিম্ন-অঞ্চল এলাকা বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে এবং শরণার্থীদের প্রবাহ আমূলভাবে বৃদ্ধি পাবে। ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে, জলবায়ু পরিবর্তন পৃথিবীর বিশাল অংশগুলির জন্য ধ্বংসাত্মক হবে।
সংক্ষেপে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কোনো “নিরাপদ” স্তর নেই। জলবায়ু পরিবর্তন এমন খারাপ কিছু নয় যা ঘটতে পারে, এটি হল এমন খারাপ কিছু যা ঘটছে। প্রাক-শিল্প স্তরগুলি থেকে বিশ্ব গড় তাপমাত্রা প্রায় ১.৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বেড়েছে এবং ক্যালিফোর্নিয়া এবং অস্ট্রেলিয়া ইতিমধ্যে জ্বলছে।
তবুও, উষ্ণায়ণের প্রতিটি অতিরিক্ত বৃদ্ধি, এক ডিগ্রির প্রতিটি ভগ্নাংশ, বিষয়টিকে আরও খারাপ করে তুলবে। বিশেষত, ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড, ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের থেকে অনেক খারাপ হবে এবং ২.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড, ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের থেকে অনেক খারাপ হবে। এভাবে এটি আরো উষ্ণ হবে।
পূর্বোক্ত আইপিসিসির প্রতিবেদনটি বহুল উদ্ধৃত ধারণাটির উৎস যে বিপর্যয়পূর্ণ জলবায়ু পরিবর্তন এড়াতে “আমাদের কেবল ১১ বছর বাকি” (যা আমি মনে করি এখন “মাত্র ১০ বছর”) । প্রতিবেদনের সিদ্ধান্তে এ স্লোগানটি নেওয়া হয়েছে যে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা থাকার জন্য, ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক নির্গমন কমপক্ষে ৫০ শতাংশ হ্রাস করতে হবে।
এ লক্ষ্যটি, বিশ্বব্যাপী নির্গমনকে অর্ধেকে কমাতে ১০ বছরের সংগহতি, বিশ্ব জলবায়ু আন্দোলনের রণ হুংকারে এবং সবুজ নতুন চুক্তির সাংগঠনিক নীতিতে পরিণত হয়েছে।
একটি সমাবেশে সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থানবার্গ এবং অন্যরা। সারাহ সিলবিগার / গেটি ইমেজেস
সত্যিকারে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড নামিয়ে আনার সম্ভাবতা
সাম্প্রতিক বহু বৈজ্ঞানিক ও অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের সাথে (আইপিসিসিসহ) জলবায়ুতে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি সম্পন্ন ব্যক্তিরাও জোর দিয়ে বলেছেন যে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা এখনও সম্ভব – আমাদের যে প্রযুক্তি এবং সম্পদের সংস্থান আছে – এসবের দ্বারা বাস্তবিক ও অর্থনৈতিকভাবে সম্ভব।
এটা সত্য। আইপিসিসি যেমনটা দেখিয়েছে, জলবায়ু-অর্থনৈতিক মডেলগুলি পর্যাপ্তভাবে অনুসরণ করলে, এখনও এমন একটি পথ তৈরি করা সম্ভব যার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় হারে নির্গমন হ্রাস পাবে। এ জাতীয় পরিস্থিতিগুলিতে সাধারণত অন্তর্ভুক্ত থাকে সবকিছু ঠিকঠাকভাবে হচ্ছে কিনা: প্রতিটি নীতি যেন প্রতিটি বিভাগে স্বীকৃত হয়, প্রতিটি প্রযুক্তি বিস্তৃত হয়, আমরা কোনও ভুল পদক্ষেপ না নিই এবং কোনও অচল অবস্থার মুখোমুখি না হই, এবং জলবায়ু সংবেদনশীলতা (গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রতিক্রিয়ায় তাপমাত্রা পরিবর্তনের পরিমাণ) বৈজ্ঞানিক অনুমানের নিম্ন প্রান্তে থাকে। আমরা যদি চেষ্টা করি আমরা এটা করতে পারবো।
এ পরিস্থিতিটির সংক্ষিপ্তসার বোঝাতে এ স্লোগানটি কয়েক দশক ধরে বিভিন্ন বৈচিত্র্যের সাথে ছিল: “আমাদের প্রয়োজনীয় সমস্ত সরঞ্জাম রয়েছে, আমাদের যে অভাব রয়েছে তা হল রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি।”
তবে রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি (তা যাই হোক) মুদি তালিকার শেষ দ্রব্যটি নয় – যা সমস্ত কিছু কিনার পর দেখতে হবে প্রয়োজন কিনা। এটাই আসল। এটি ছাড়া বাকী উপলদ্ধ নীতি এবং প্রযুক্তি কোনটিরই কোনো মানে হয়না। এটি এড়ানো যায় না, হ্রাস করা যায় না বা বন্ধ করা যায় না।
সর্বোপরি, এক দশক বা তারও কম সময়ে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যের অবসান ঘটানো সম্ভব। তা করার প্রযুক্তি আমাদের রয়েছে; তা হচ্ছে টাকা। যে সমস্ত লোকের অধিক রয়েছে তারা যাদের কম আছে তাদের যথেষ্ট পরিমাণে দিতে পারে যাতে প্রত্যেকেই সুন্দর জীবনযাপন করতে পারে। একইভাবে, বৈশ্বিক গৃহহীনতা, আবাসস্থল ধ্বংস, ক্ষুধা এবং যুদ্ধের অবসান ঘটানো সম্ভব। সম্পদ বিদ্যমান। আমাদের অভাব শুধু রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তির।
তবে আমরা এ জিনিসগুলি শেষ করিনি। দুর্ভোগ হ্রাস করার প্রচুর উপায় আছে যা দীর্ঘকাল ধরেই সম্ভব কিন্তু এখনও আমরা এগুলি করি না। আমরা তাৎক্ষণিক, দৃশ্যমান দুর্ভোগ কমাতে যা করতে পারি তার ভগ্নাংশ পরিমাণও করিনা, ভবিষ্যত প্রজন্মের ও সুদূর জনগোষ্ঠীর দুর্দশা কমানো তো দূরের কথা। প্রয়োজনীয় নীতিগুলি সুরক্ষিত করার জন্য প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক শক্তি সৃষ্টি করা এবং সাফল্যের সাথে বিস্তার করা (এবং সময়ের সাথে এগুলিকে ধরে রাখা) অসম্ভব কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ব্যাপারটা এমন নয় যে বড় আকারের সমস্যার বিরুদ্ধে অগ্রগতি হয়নি। বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য ও ক্ষুধা হ্রাস পাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এলজিবিটিকিউ (Lesbian, Gay, Bisexual, and Transgender – LGBT) বিবাহ ও মাদক নীতি সম্পর্কিত বিষয়গুলিতে রাজনীতি আমূল পরিবর্তন করেছে। বিষয়গুলি দ্রুত পরিবর্তন হতে পারে।
তবে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা আবার কোনো ছোট অংশে বাড়তে শুরু করেছে। দুটি কারণে জলবায়ু পরিবর্তনগুলি অন্যান্য বৃহৎ সমস্যাগুলির চেয়ে পৃথক।
প্রথমত, এটি এমন নয় যে অগ্রগতি খুব ধীরে ধীরে ঘুরে বেড়াচ্ছে, আসলে খুব কম অগ্রগতি হচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে নবায়নযোগ্য শক্তির চারপাশের সমস্ত উন্মত্ততার জন্য, আমরা যা করতে পেরেছি তা হল বৈশ্বিক নির্গমন বৃদ্ধিতে কিছুটা ধীরগতি আনয়ন। আমরা এখনও কয়েক শতাব্দীর গতিবেগ নিয়ে ভুল পথে অগ্রসর হচ্ছি।
দ্বিতীয়ত এবং ফলস্বরূপ, বিশ্ব উষ্ণায়ন ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এবং সমন্বয় করা হয়েছে – তা মানুষের সম্মুখে আসা যেকোন বৃহৎ আকারের সমস্যার জন্য নেয়া পদক্ষেপকে ক্ষুদ্র প্রতীয়মান করে। একমাত্র সাদৃশ্য যা একমাত্র ধরতে পেরেছে যে যা প্রয়োজন তা হল “যুদ্ধকালীন সংহতি”, কিন্তু এর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন প্রতিটি বৃহৎ অর্থনীতিতে এক দশকেরও কম সময়ে যে বিশাল সংঘবদ্ধতা অর্জন করেছিল তা ভাবতে হবে এবং শতাব্দীর অবশিষ্টাংশের জন্য এটিকে টিকিয়ে রাখতে হবে।
নির্গমন কখনই কোথাও বার্ষিক ১৫ শতাংশে নেমে আসেনি, সর্বত্রতো প্রশ্নই উঠেনা এবং আমাদের কী পার্থিব কারণ আছে যে বিশ্বাস করতে হবে যে এ বছর থেকে নির্গমন কমতে শুরু করবে? চারপাশে তাকান! গণতান্ত্রিক বিশ্ব এমন এক জনপ্রেমী কর্তৃত্ববাদী প্রতিক্রিয়ার খপ্পরে আছে যার শীঘ্রই নিজেকে সমাধানের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। একটি তীব্র গতিতে তেল ও গ্যাস অবকাঠামো নির্মিত হচ্ছে; কয়েকশো নতুন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র চলছে।
কোনও দেশই ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড নির্গমনের পথ স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় নীতিগুলির ধারেকাছেও কিছু বাস্তবায়ন করতে পারেনি; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রাজিলসহ অনেক দেশই উল্টোদিকে ছুঁটে যাচ্ছে।
কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে বলা যায়, ২০২০ সালেও রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচিত হওয়ার ৫০/৫০ এর বেশি সম্ভাবনা রয়েছে, এক্ষেত্রে আমরা সবাই চাপে আছি, ধ্বংস অবধারিত। এমনকি ডেমস যদি রাষ্ট্রপতি হন, তাকে কংগ্রেসের সভা, গুরুতর কেন্দ্রীয় কার্যকলাপ উভয়েরই সাথে লড়াই করতে হবে, লড়াই করতে হবে দুর্ধর্ষ লোকদের সাথে, তারপরে মধ্যবর্তী সময়ের প্রতিক্রিয়া, তারপরের পরবর্তী নির্বাচন এবং আরও বিস্তৃতভাবে ক্রমবর্ধমান রক্ষণশীল কেন্দ্রীয় আদালত এবং সুপ্রিম কোর্ট, নির্বাচনী কলেজ, রাজনীতিতে অর্থের বন্যা, এবং মার্কিন ব্যবস্থাপক সভায় গ্রামীণ রাজ্যগুলির অতিরিক্ত বিবরণ ইত্যাদি নিয়ে।
অন্যান্য অনেক দেশের মতোই আমেরিকা, সূক্ষ্ম প্রান্তবিশিষ্ট পক্ষপাতিত্বে ভারসাম্যপূর্ণ, এর কাঠামোগত বাধা দ্বারা প্রত্যাহত হওয়া জনসংখ্যা, এর গতিপথের অনিশ্চিতা এবং এর নীতি ও সংস্থাগুলির ক্রমশ ঠুনকো হয়ে ওঠা। সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অনুশীলনে কি হঠাৎ এমন কিছু মনে হচ্ছে যা এ বছরের শুরুতে হয়েছে? এটি আমার কাছে মনে হয় না।
এ জাতীয় বিষয়টি কল্পনা করার অসুবিধাই আল গোরের মতো জলবায়ু সম্পর্কে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি সম্পন্ন ব্যাক্তিদেরকে অপ্রত্যাশিত সামাজিক “সন্ধিক্ষণ”, অদৃশ্য সূত্রপাতের উপর আশা স্থাপন করতে পরিচালিত করেছে, যেগুলি একবার লঙ্ঘিত হলে, আমূল পরিবর্তন ঘটবে। (২০১২ সালের দিকে, গোর আমাকে বলেছিলেন, “আমরা সন্ধিক্ষণে নেই, তবে আমরা এর খুব কাছাকাছিই আছি।”)
যতদূর আমি মনে করতে পারি, লোকেরা রাস্তার বিক্ষোভের সংখ্যা বা টেলিভিশন সংবাদ পাঠকদের “জলবায়ু” শব্দটি বলা বা ২০৩০ সালের লক্ষ্যটিকে সমর্থন করা নগর কর্মকর্তাদের সংখ্যা গণনা করে লক্ষণগুলি নির্দেশ করে যাচ্ছিল যে, এ জাতীয় সন্ধিক্ষণ কার্যকর রয়েছে, কিন্তু বৈশ্বিক নির্গমন কেবল বেড়েই চলেছে।
আমি আগে যেমন লিখেছি এমন সন্ধিক্ষণ অবশ্যই সম্ভব। তাদের যে সত্তা, তাদের কারো অধীনে চালনা করা যায় না। যত দূর পর্যন্ত আমাদের দ্রুত পদক্ষেপের কোন আশা থাকে, তারা সেখানে অবস্থান করে।
তবে মানব ইতিহাসে আমূল, অভূতপূর্ব সুযোগের প্রত্যাশা, এমন কিছু হওয়ার যুক্তিযুক্ত প্রত্যাশা থেকে অনেকটাই আলাদা। একই জায়গায় ১০০ বার বজ্রপাত হওয়া সম্ভব। রুমভর্তি বানরসহ মুদ্রলেখকদের শেক্সপিয়ারের নাটক তৈরি করা সম্ভব। মানুষের তাদের বিশ্ব সভ্যতার গতিপথকে অসারে পরিণত করা সম্ভব। তবে সম্ভবত এটি ঘটবে না।
আমরা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেছি। কার্যকরীভাবে বলতে গেলে, আমরা কথা বলার সাথে সাথে ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডকে এমনকি ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডকে অতিক্রম করে যাচ্ছি। জলবায়ু বিজ্ঞান যেভাবে একটি ব্যাপারকে মোকাবেলা করে, এটি তেমন “ব্যাপার” নয় – প্রাণি পদার্থবিদ্যার চক্রের মতো যৌথ মানবিক আচরণ নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা এত সহজ নয় – তবে মানব ইতিহাস, সমাজবিজ্ঞান, বা রাজনীতি সম্পর্কে আমাদের কিছুই না জানার ইঙ্গিত দেয় যে সম্মিলিত দিকে বিশাল, কঠোর পরিবর্তন সম্ভাব্য।
জলবায়ু পরিবর্তনের করুণ অবস্থাটির মোকাবেলা করা
জোরপূর্বক আশাবাদ যা জলবায়ু চক্রে প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে , এ ব্যাপারে যা আমাকে বিরক্ত করে তা হল এটি জলবায়ু পরিবর্তনের করুণ মাত্রাকে বাদ দেয় এবং এটির প্রাপ্য পরিস্থিতির গুরুত্বকে হরণ করে।
এটাই হচ্ছে কাহিনী: জলবায়ু পরিবর্তনের গল্পটি ইতিমধ্যে একটি শোকাবহ ঘটনা। এটা দুঃখজনক। সত্যিই দুঃখজনক। মানুষ ভুগছে, প্রজাতিগুলি মরে যাচ্ছে, পুরো বাস্তুতন্ত্র হারিয়ে যাচ্ছে এবং এটি অবশ্যম্ভাবী আরও খারাপ হতে চলেছে। আমরা পৃথিবীটিকে একটি তুচ্ছ, স্থুল, কম অতিথিসেবক স্থান হিসাবে গড়ে তুলার মাঝে আছি, কেবল নিজেদের জন্যই নয়, বরং সমস্ত বিচিত্র প্রজাতির জীবনযাত্রার জন্য যারা এখানে অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল জলবায়ুতে বিকশিত হয়েছিল। সবচেয়ে জটিল এবং স্বকীয় রূপের জীবনগুলো সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে; মশা এবং জেলিফিশ সমৃদ্ধ হবে।
এটি এখন কেবল একটি প্রজাতি হিসাবে আমাদের অস্তিত্বের পটভূমি অবস্থা, এমনকি যদি আমরা সবচেয়ে খারাপ ফলাফল এড়াতে সমাবেশ করি।
অবশ্যই শোকাহত গল্পটিই একমাত্র গল্প নয়, এবং এটি অপরিহার্য না যে এটিকেই গুরুত্ব দিতে হবে। করণীয় উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি রয়েছে, আছে নায্যতা এবং ভালো কাজ, আছে জাতীয় সুরক্ষা, বায়ু এবং জল দূষণ হ্রাস – জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই সম্পর্কে বলার মতো প্রচুর ইতিবাচক গল্প রয়েছে।
তবে এ প্রকাশিত শোকাবহ ঘটনাকে অস্বীকার করা হবে অগভীর এবং মানবেতার চেয়ে কম, যা এখন আমাদের সমস্ত সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গ সরবরাহ করে।
আমি বছরের পর বছর ধরে কথোপকথনগুলি থেকে জানি যে অনেকে এ শোকাবহ ঘটনাটি দেখে এবং তা অনুভব করে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের চারপাশে স্থায়ীভাবে তীব্র পক্ষপাতী উত্তেজনা থাকার ফলে তারা এটিকে প্রকাশ করতে সতর্ক থাকে। তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে যে, এটি অস্বীকার ও বিলম্বের শক্তিগুলিকে জ্বালানী দেবে, তারা নৈতিকভাবে উৎসাহ প্রদান করতে বাধ্য।
আমি এটাকে ঠিক বলে মনে করি না। জলবায়ু পরিবর্তনে লড়াই করার জন্য আমাদের এটিকে বুঝতে হবে এবং এর চেয়েও বেশি, এটিকে সংবেদনশীলভাবে নিতে হবে। এটি একটি অস্বস্তিকর এমনকি নির্মম প্রক্রিয়াও হতে পারে। কারণ, সত্যটি হল আমরা শেষ হয়ে গেছি এবং দিনদিন আরো হচ্ছি এবং প্রতিটি দিন অতিবাহিত করার সাথে আমরা আরও অপরিবর্তনীয় পরিবর্তনে আটকে যাচ্ছি এবং আরও ভুক্তভোগী হচ্ছি। পরিণতিগুলি গণনা করা কঠিন এবং নৈতিক দায়িত্ব বহন করা ভয়ানক, তবে আমরা কখনোই আমাদের আবেগ এবং প্রতিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কাজ করব না যদি আমরা এ ব্যাপারে কথা বলতে না পারি, যদি আমাদের জলবায়ু মডেলগুলিতে কী কী সম্ভব তা নিয়ে শুধু মিষ্টি কথা বলার অনুমতি থাকে।
শোকের মধ্যে আশার আলো
আমরা ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের লক্ষ্যমাত্রাকে হাতছাড়া করতে পারি – এটি বলা জলবায়ু সম্প্রদায়ের একটি অপ্রিয় পদক্ষেপ। এটি উত্থাপন করে “পরাজয়বাদের” অভিযোগ – এবং আরো একটি শব্দ যা আমি বহুবার শুনেছি – “অকেজো।”
এ ধরনের অভিযোগগুলি এ ধারণাটির ভিত্তিতে তৈরি হয়েছিল যে, আমাদের সম্ভাবনার একটি মূল্যায়ন অনুপ্রেরণাকে ধ্বংস করবে যে, এটি শ্রোতাদেরকে অভিভূত, নিরাশ এবং হতাশাগ্রস্ত করে দেবে।
তবে এ ধারণাটি যার বাঁচা মরার আশা নির্ভর করে ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের লক্ষ্যে পোঁছানোর উপর দীর্ঘমেয়াদে তা বিষাক্ত। পছন্দটিকে “একটি অলৌকিক ঘটনা বা বিলুপ্তি” হিসাবে চিহ্নিত করা কেবল সকলকে বিশাল হতাশার জন্য প্রস্তুত করে, যেহেতু এর কোনোটিরই শীঘ্রই কোন উদ্ভবের সম্ভাবনা নেই।
জলবায়ু বিজ্ঞানী কেট মার্ভেল এটিকে এভাবে বলেছিলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন কোন খাঁড়া বাঁধ নয় যে আমরা লাফিয়ে নামবো, বরং একটি ঢাল যাতে আমরা মসৃণভাবে নামবো।” প্রতিটি পদক্ষেপ অবস্থাটির অবনতি ঘটায়। আমরা ঢালটির যত নিচেই যাই না কেন, লড়াই ছেড়ে দেওয়ার কোনও কারণ নেই। আমরা আমাদের ঢালটিকে সর্বদা আঁকড়ে ধরে রাখার আশা করতে পারি।
১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মাত্রা অতিক্ৰম করা, যা সম্ভবত আমাদের জীবনকালের মধ্যে ঘটতে পারে, এর অর্থ এ নয়, যে কারও উদাসীনতা বা পক্ষাঘাত অনুভব করা উচিত। এতে করে কী বুঝা যায়? এমন কোন জাদুকরী চাবি নেই যা ১.৫ বা ১.৭ বা ২.৩ বা ২.৮ বা ৩.৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে উল্টে দিতে পারে। সবশেষে এগুলি সবই, অবাধ সূত্রপাত। একটিকে অতিক্রম করা কোনওভাবেই পরেরটির নীচে থাকায় নৈতিক ও রাজনৈতিক অপরিহার্যতা হ্রাস করে না। যদি কিছু হয় তবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে একত্রিত হওয়ার প্রয়োজন কেবল উষ্ণয়নের প্রতিটি নতুন বৃদ্ধির সাথে আরও বেড়ে যায়, কারণ সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো বেড়ে যায়।
চ্যালেঞ্জের পাল্লা এবং সংকুচিত সময়ে কাজের জন্য বেচে নেওয়া, কারো জন্যই, কোন স্তরের জন্যই কার্যকরভাবে কোন বিপদ হবে না। বর্তমানে এ পৃথিবীতে বসবাসকারী প্রত্যেকের জীবনের জন্য নৈতিক আবশ্যকতাটি হল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কার্বনমুক্ত করা; তাপমাত্রা নির্বিশেষে এটি সত্য।
অবস্থা যত খারাপই হোক না কেন কেউ যেন কখনো থেমে না যায় বা হাল ছাড়ার চেষ্টা না করে। (আপনার যদি এই বিষয়টি জানার প্রয়োজন হয় তবে মেরি হিগলারের প্রবন্ধটি পড়ুন।)
It’s not about Meatloaf.
It’s not about me.
It’s not about what some people call me.
It’s not about left or right.It’s all about scientific facts.
And that we’re not aware of the situation.
Unless we start to focus everything on this, our targets will soon be out of reach. https://t.co/UwyoSnLiK2— Greta Thunberg (@GretaThunberg) January 6, 2020
বিশ্বকে এগিয়ে আসার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে
একটি চূড়ান্ত, ব্যবহারিক বিষয় হিসাবে, ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে থামিয়ে যাওয়ার চূড়ান্ত সম্ভাবনা (এবং ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে থামানোর ক্রমবর্ধমান সম্ভাবনা) সম্পর্কে খোলামেলাভাবে কথা বললে আমরা যেভাবে জলবায়ু নীতির দিকে অগ্রসর হচ্ছি তার উপর প্রভাব পড়তে পারে।
স্পষ্টতই, আমাদের প্রশমন নীতিগুলিতে এর কোনো প্রভাব থাকা উচিত নয়। সে ক্ষেত্রে, “যত তাড়াতাড়ি সম্ভব” হল একমাত্র নিয়ম যা গুরুত্বপূর্ণ।
তবে এর অর্থ হওয়া উচিত অভিযোজন (Adaptation) এ গুরুত্ব দেওয়া, অর্থাৎ সম্প্রদায়কে প্রস্তুত করা এবং তাদের সাহায্য করা, পরিবর্তনগুলি এখন যে অনিবার্য। জলবায়ু নীতিতে যেমন পুরানো প্রবাদ আছে, ৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের পরিকল্পনা করা এবং ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের লক্ষ্য থাকা উচিত। আমরা যা করছি তার পরিবর্তে, যা মূলত বিপরীত, পৃথিবীকে ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের (এবং বর্তমানে ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) গল্প বলতে বলতে ৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের দিকে এগিয়ে যাওয়া।
এখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, আমাদের কীভাবে ক্যালিফোর্নিয়ানদের বনে আগুনের মোকাবেলা, মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষকদের বন্যার মোকাবেলা এবং উপকূলীয় বাড়ির মালিকদের বীমা সংকট মোকাবেলা করতে সহায়তা করা যায় সে সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করা উচিত।
এ সমস্ত সমস্যা আরও খারাপ হতে চলেছে। আমাদের সর্বদিক থেকে এটির সাথে সংগ্রাম করতে হবে, কারণ আসল হুমকি হল এ ক্রমবর্ধমান প্রভাবগুলি আমাদের সক্ষমতাকে চাপা দেয়, কেবলমাত্র গ্রীণ হাউজ গ্যাসের নির্গমণ হ্রাস করার জন্য নয়, এমনকি অন্য কোথাও ঘটা বিপর্যয়গুলির প্রতি যত্নশীল বা প্রতিক্রিয়া দেখানোর জন্য নয়। এ মুহূর্তে, অস্ট্রেলিয়ার বেশিরভাগ অংশ আগুনে পুড়ছে – সেপ্টেম্বরের পর থেকে প্রায় অর্ধ বিলিয়ন প্রাণী মারা গেছে – এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটি কোনোমতে সংবাদ চক্রে দেখানো হয়েছে। লেখক ডেভিড ওয়ালেস সাম্প্রতিক যেমন লিখেছেন, বিশ্ব ইতিমধ্যে “সহানুভূতির ছোট্ট চক্রের পরিবর্তে উদাসীন প্রক্রিয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।”
এ সহানুভূতি সংকুচিত হওয়া যুক্তিযুক্তভাবে মানব প্রজাতির মুখোমুখি সবচেয়ে বড় বিপদ, যা নিজেকে বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনীয় সম্মিলিত পদক্ষেপের সবচেয়ে বড় বাধা। আমি এটি না ভেবে থাকতে পারছি না যে এ সহানুভূতির প্রতিরক্ষা এবং প্রসারণের প্রথম পদক্ষেপটি হচ্ছে সর্বদিক থেকে গণনা করা এটাসহ যে আমরা ইতিমধ্যে কতটা ক্ষতি করেছি এবং আরো করতে পারি, দোষ ও শোকের মধ্য দিয়ে কাজ করা এবং আসন্ন দুর্দশা কমাতে সমাধান নির্ণয় করা।
Source: vox