‘দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে সুশাসন, নিশ্চিত করবে টেকসই উন্নয়ন’ স্লোগানে আজ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও উদ্যাপিত হবে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস। সকাল ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দিবসের অনুষ্ঠান শুরু হবে। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে গৃহহীন মানুষের জন্য ১৭ হাজার পাঁচটি ঘর এবং ১৭ হাজার সদস্যের নারী স্বেচ্ছাসেবক ইউনিট উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দিবসটি উপলক্ষে রাস্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২০’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির প্রতিপাদ্য বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও সময়োপযোগী হয়েছে। তিনি বলেন, সততা এবং দক্ষতার সঙ্গে জনগণের প্রয়োজন মেটানোই সুশাসনের ভিত্তি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বপ্রথম জানমালের ক্ষয়ক্ষতি রক্ষায় জনগণকে সম্পৃক্ত করে জনবান্ধব দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসমূলক কর্মসূচির প্রচলন করেছিলেন।
শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় আমাদের প্রচেষ্টাকে সার্থক করতে হলে দুর্যোগ মোকাবেলা বিষয়ে সবার সচেতনতা প্রয়োজন। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কর্মসূচি প্রণয়নের পথিকৃৎ। স্বাধীন বাংলাদেশে তিনিই প্রথম ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে জনগণের জানমাল রক্ষায় ‘মুজিব কিল্লা’ নির্মাণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পূর্বপ্রস্তুতি নিশ্চিত করার কারণে আজ প্রাকৃতিক দুর্যোগে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি ন্যূনতম পর্যায়ে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি, সম্পদ, সম্ভাবনাকে বিবেচনায় নিয়ে প্রণীত ১০০ বছরের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ‘ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’-এ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। দেশের জনগণকে উন্নয়নের অংশীদার করে তাদের জীবনমানের উন্নতির জন্য সরকার কাজ করছে। প্রতিটি গৃহহীন মানুষকে দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে। গ্রাম শহরের সুবিধা পৌঁছানোর লক্ষ্যে গ্রামীণ অবকাঠামো টেকসইভাবে নির্মাণের জন্য সম্প্রতি ৫৭৮৫ কিলোমিটার হেরিংবোন বন্ড রাস্তা, ২৬,৩৩১টি সেতু-কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে ২৩০টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র ও ৩২০টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। ৪২৩টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র, ৬৪ জেলায় ৬৬টি জেলা ত্রাণ গুদাম কাম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্র স্থাপন এবং ৫৫০টি মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ কর্মসূচি চালু করেছি। এ জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।