আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে পরিবেশ দূষণ রোধ করবে সরকার
বর্তমান সরকার বিশেষ করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় বায়ুদূষণসহ সার্বিক পরিবেশ দূষণ রোধে ব্যাপক কাজ করছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তানভীর শাকিল জয়।
তিনি বলেন, আগামী ৫ বছরের মধ্যে সরকার পরিবেশ দূষণ ও বায়ুদূষণ রোধে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনবে। শুধুমাত্র পানি ছিটিয়ে বায়ুদূষণ রোধ করা সম্ভব নয়। এটি সাময়িক সমাধান, আমাদের দীর্ঘ মেয়াদি কার্যকরী সমাধানের জন্য কাজ করতে হবে।
আমাদের বায়ুদূষণের উৎসগুলোকে বন্ধ করতে হবে। বর্জ্য পুড়িয়ে যেন বায়ুদূষণ না হয় সেজন্য বর্জকে সম্পদের পরিণত করতে হবে। যার আর্থিক মূল্য থাকবে, ফলে মূল্যবান বর্জ্য কেউ পুড়িয়ে লোকসান করবে না।
রবিবার প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের সেমিনার কক্ষে শিশু ও যুব ফোরাম আয়োজিত ‘শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য প্রয়োজন বিশুদ্ধ বাতাস’ শীর্ষক অংশীজন শুনানিতে তিনি এসব কথা বলেন। এটি আয়োজনে সহযোগিতা করেছে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, এটি কেউ চাইলে সহজে নিরসন করতে পারবে না। বায়ু প্রবাহ কোন বাধা মানে না, এটি প্রাকৃতিক নিয়মে চলে। জিওপলিটিক্যাল দূষণগুলো নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে।
পরিবহনের বায়ুদূষণ কমানোতে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক পরিবহন পরিহার করে পরিবেশ বান্ধব ইলেকট্রিক ভেহিকল ব্যবহার করতে হবে। বর্তমান সরকার ইলেকট্রিক ভেহিকল নিয়ে কাজ শুরু করেছে, এই খাতে ভ্যাট ট্যাক্স কমিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পরিবহন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দার আলী (যুগ্ম সচিব) বলেন, আমি বিশ্বাস করি বায়ুদূষণ রোধে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ আরও জোরালো করা উচিত। বায়ুদূষণ রোধের জন্য প্রাপ্ত বরাদ্দসমূহ সঠিকভাবে তদারকি করতে হবে এবং তার যথাযথ ব্যবহার ও নিশ্চিত করতে হবে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, আমাদের ব্যক্তিগত পর্যায়েও বায়ু দূষণ রোধে কাজ করতে হবে। বসতবাড়ি ও কর্মস্থলের বর্জ্য সঠিক স্থানে এবং সঠিকভাবে নিষ্কাশন করতে হবে। ব্যক্তিগত পর্যায়ের উদ্যোগসমূহ সরকারি কাজকে ত্বরান্বিত করতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করবে। আমরা সবাই কাজ করব কিন্তু নেতৃত্ব দেবে সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, নির্মল বায়ু মানুষের অধিকার কিন্তু ঢাকা শহরের অধিবাসীরা এ অধিকার থেকে বঞ্চিত।
জৈব জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বায়ুতে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হচ্ছে যা বায়ুর গুণগত মান নষ্ট করছে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করা গেলে সবার জন্য নির্মল বায়ু এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
এ সময় বক্তব্য রাখেন টুরিস্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাদিয়া ফারজানা, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এর আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাশেদুজ্জামান মজুমদার, পরিবেশ উদ্যোগের গবেষণা সমন্বয়ক ইঞ্জি. মো. নাছির আহম্মেদ পাটোয়ারী, ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের ডেপুটি ডিরেক্টর (ফিল্ড প্রোগ্রাম অপারেশন) মঞ্জু মারীয়া পালমা, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহমুদা পারভীন প্রমুখ।