আগামীতে গ্রীষ্মে বরফশূন্য হতে পারে আর্কটিক মহাসাগর
সমন্বিত প্রচেষ্টা এবং আন্তর্জাতিক তৎপরতা সত্ত্বেও জলবায়ু পরিবর্তন এরই মধ্যে বিশ্বের বাস্তুতন্ত্রের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রীষ্মে বরফশূন্য হতে পারে আর্কটিক মহাসাগর। সম্প্রতি বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী ন্যাচার কমিউনিকেশনসে একটি গবেষণায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয় , প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে আটকে রাখার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, তা হলেও উত্তর মেরুর বরফ গলা কমবে না।
এ নিয়ে গবেষণার সহ-লেখক জার্মানির হামবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ডার্ক নোটজ বলেন, আমরা যা করছি, তাতে খুব দ্রুতই গ্রীষ্মে আমরা আর্কটিকে বরফ দেখতে পারব না। এটি হবে আমাদের জলবায়ু ব্যবস্থার প্রথম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা আমরা গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের কারণে হারাচ্ছি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বরফ কমে গেলে এর প্রভাব পুরো বিশ্বের আবহাওয়া, জলবায়, মানুষ ও ইকোসিস্টেমের ওপর পড়বে। গবেষণার প্রধান লেখক দক্ষিণ কোরিয়ার পোহাং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির গবেষক সিউং কি মিন বলেন, গ্রিনহাউস গ্যাসের কারণে গ্রিনল্যান্ডের বরফ ও পারমাফ্রস্ট ( মাটি, শিলা এবং বালির সংমিশ্রণে তৈরি হওয়া বরফ) গলে গিয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়াতে পারে। এর পাশাপাশি বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়তে পারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আর্কটিকের বরফ গলে গেলে মহাসাগরে জলের পরিমাণ বাড়বে। ফলে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল বাড়বে। তেল ও গ্যাস খোঁজার ক্ষেত্রে সুবিধা পাবে হাতে গোনা কয়েকটি দেশ। ফলে বাড়বে গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমন। জলবায়ু পরিবর্তন আরও ত্বরান্বিত হবে।
আর্কটিকের সাত শতাংশ অঞ্চলে যদি বরফ না থাকে, তাহলে সে অঞ্চলকে বরফমুক্ত হিসেবে বিবেচনা করে বিজ্ঞানীরা।