22 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
ভোর ৫:২৩ | ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১লা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
অবৈধভাবে বালু তোলায় ঝুঁকিতে সুন্দরবন
জীববৈচিত্র্য

অবৈধভাবে বালু তোলায় ঝুঁকিতে সুন্দরবন

অবৈধভাবে বালু তোলায় ঝুঁকিতে সুন্দরবন

পশ্চিম সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জের শাকবাড়িয়া নদীতে কয়েকটি খননযন্ত্র দিয়ে দিনরাত অবৈধভাবে বালু তুলছে একটি চক্র। নদীর সুন্দরবনের পাশ থেকে বালু তুলে অপর প্রান্তে কয়রা উপজেলার বেড়িবাঁধের সংস্কারকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।

আবার সেই বালু বস্তায় ভরে ভাঙন ঠেকাতে নদীতীরে ফেলছেন শ্রমিকেরা। অব্যাহতভাবে বালু তোলায় একদিকে বিলীন হচ্ছে নদীপাড়ের বনের অংশ, অন্যদিকে ঝুঁকিতে পড়ছে নির্মাণাধীন বাঁধ। স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, বারবার বাধা দিয়েও বালু উত্তোলনকারী ব্যক্তিদের ঠেকানো যাচ্ছে না।

বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ অনুযায়ী সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারাজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বা আবাসিক এলাকা থেকে সর্বনিম্ন এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু তোলা যাবে না।

এ ছাড়া বালু বা মাটি উত্তোলন বা বিক্রির জন্য খননের ফলে কোনো নদীর তীর ভাঙনের শিকার হলেও বালু তোলা যাবে না। আইন অমান্যকারী দুই বছরের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।



শাকবাড়িয়া নদীর পূর্ব পাশে সুন্দরবন ও পশ্চিমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ। বন বিভাগের শাকবাড়িয়া টহল ফাঁড়ি-সংলগ্ন এলাকা থেকে সুন্দরবনের খাসিটানা বন টহল ফাঁড়ির মধ্যবর্তী শাকবাড়িয়া নদীর ছয় কিলোমিটার এলাকার মধ্যে পাঁচটি খননযন্ত্র দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। বালু তোলায় ইতিমধ্যে সুন্দরবনের গাছগাছালি ভেঙে নদীতে পড়তে শুরু করেছে। কয়েকটি স্থানে ভাঙনের পরিধি বেড়েছে।

কয়রার কাটকাটা এলাকায় দেখা যায়, নদীর অন্য প্রান্তে সুন্দরবনের গা ঘেঁষে দুটি খননযন্ত্র চলছে। সেখান থেকে বার্জে করে বালু নদীর কিনারে এনে বস্তায় ভরছেন শ্রমিকেরা। বস্তা গণনা শেষে সেখানেই ফেলা হচ্ছে। কাজ তদারকির জন্য পাউবোর কোনো কর্মকর্তাকেও দেখা যায়নি।

শ্রমিকেরা জানালেন, কয়েক দিন ধরে দিনের বেলায় বালু তোলা হচ্ছে। আগে রাতের বেলা সুন্দরবনের খাসিটানা এলাকার নদী থেকে বালু তোলা হতো। প্রতিদিন ১৫–২০ হাজার ঘনফুট বালু তুলে নদীর কিনারে এনে বস্তায় ভরা হয়। সুন্দরবনের পাশে যে খননযন্ত্র চলছে, সেটার মালিকের নাম হারুন গাজী।

পাউবোর কর্মী, শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাউবোর বাঁধ পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে কয়রার দুটি পোল্ডারে ৩২ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে।

এ কাজে বালু সরবরাহ করছেন স্থানীয় খননযন্ত্রের মালিক হারুন গাজীসহ কয়েকজন। সুন্দরবনের শাকবাড়িয়া নদী থেকে বালু উত্তোলনের বৈধ অনুমতি না থাকলেও দেদার বালু উত্তোলন ও বিক্রি করা হচ্ছে।

সুন্দরবন–সংলগ্ন কাটকাটা গ্রামের বাসিন্দা রিপন বলেন, প্রতিদিন সুন্দরবন ও নদীর ভাঙনকবলিত এলাকা থেকে বালু তোলায় ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে। অথচ বন বিভাগ কিংবা উপজেলা প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

দুই মাস আগে একবার খননযন্ত্রের মালিক হারুন গাজীসহ কয়েকজনকে জরিমানা করেছিল প্রশাসন। এর দুই দিন পর আবার বালু তোলা শুরু হয়। দিনের চেয়ে রাতের বেলা বেশি বালু তোলা হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন।

শাকবাড়িয়া নদীতীরবর্তী উত্তর বেদকাশি এলাকার আসাদুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবনের নদী থেকে অবৈধ বালু তোলার পেছনে একটি শক্তিশালী চক্র আছে। পাউবোর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো সেই চক্রের সঙ্গে চুক্তি করে বালু তুলছে।

নদীর যেখানে ভাঙনের তীব্রতা বেশি, সেখান থেকেই বালু তুলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সুন্দরবনকেও ঝুঁকিতে ফেলছে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত