স্নেইল ফিশ নামে এক প্রজাতির (Pseudoliparis swirei) মাছের বিচরণক্ষেত্র সমুদ্রপৃষ্ঠের ২৭ হাজার ফুট গভীরে! ‘গভীর জলের মাছ’ বলতে বাংলায় আমরা অন্যরকম অর্থ জানলও আক্ষরিক অর্থেই এক আজানা আবিস্কার এই গভীর জলের মাছটি।
বিজ্ঞানীদের বেশ অবাক করেছে এই মাছটি। কেননা জলের অত্যধিক চাপের কারণে এমন গভীরতায় যে কোনো প্রাণীর পক্ষে বেঁচে থাকা স্বভাবিক ভাবে প্রায় অসম্ভব। অথচ প্রশান্ত মহাসাগরের মারিয়ানা খাদে দিব্যি বাস করছে এ মাছ। যে কিনা ১৬০০ টি হাতির ভরের সমান চাপ বহন করে চলেছে সবসময়!
স্কটল্যান্ডের এবারডিন ইউনিভার্সিটি এবং যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা যৌথভাবে স্নেইল ফিশের আবিষ্কারক। ০.৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্নেইল ফিশের মাথাটা বেশ বড়সড় হলেও দেখতে ব্যাঙাচির মতো এ মাছের দেহে কোনো আঁশ নেই আর চোখটি খুব ছোট।
সর্বাধিক গভীরতায় বসবাসরত প্রাণীদের নতুন প্রজাতি খোঁজার সময় এগুলোর দেখা পান অভিযাত্রীরা। এর আগে সবচেয়ে গভীরে বসবাসকারী মাছ মাত্র ১৬০০ ফুট অর্থাৎ ৫০০ মিটার তলদেশে পাওয়া গিয়েছিল।
১০৫ ঘণ্টা ধরে ক্যামেরায় এর গতিবিধি লক্ষ্য করেন গবেষকরা। হ্যাডাল ল্যান্ডার নামে বিশেষ এ ক্যামেরাটি এবারডিনে তৈরি। এ জন্য ফ্যালকর নামক জাহাজে ১মাস ঘোরেন তারা। প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বদিকের ফিলিপাইন থেকে দক্ষিণের জাপান পর্যন্ত ৯২ স্থানে ডুবুরি নামানো হয়। এ সময় ১৬ হাজার থেকে ৩৪ হাজার ফুট পর্যন্ত গভীরে তল্লাশি চালান ডুবুরিরা।
অভিযাত্রী দলেরই একজন ড. অ্যালেন জেমিসন বলেন, গভীরের এ মাছটির আকার খুবই অদ্ভুত। আগে কখনও এমন প্রাণী আমরা দেখিনি। কার্টুনের কুকুরের মতো মাথাওয়ালা স্নেইলের পাখনাগুলো অনেক লম্বা।
আগেও ১৩ বার এবারডিন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা খাদের প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা করেছেন। তবে এবারই প্রথম ৩৪ হাজার ফুট গভীরে পৌছাতে পারেন তারা, যা ব্রিটেনের ইতিহাসে সর্বাধিক।