চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ভেসে উঠেছে ৩৫ কেজি ওজনের একটি মৃত ডলফিন । গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর ২০১৯) বিকাল চারটার দিকে দক্ষিণ মাদার্শা ইউনিয়ন আকবরিয়া এলাকায় নদী থেকে মৃত ডলফিনটি উদ্ধার করে স্থানীয় এলাকাবাসী।ডলফিনটি লম্বায় ছিলো সাড়ে চার ফুট। বর্তমানে এটিকে রাখা হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরির ফ্রিজে।
হালদা নদী বিষয়ক গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া জানান, মৃত ডলফিনটি নদীতে ভাসতে দেখে এলাকাবাসী হালদা রিভার রিচার্স সেন্টারের কর্মচারী মুন্নাকে মুঠোফোনে ঘটনাটি জানান। এর পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ডলফিনটিকে নদী থেকে উদ্ধার করে আনা হয় তীরে । ডলফিনটির মাথায় এসময় আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। নদীতে চলাচলরত বালুবাহী নৌযান অথবা ইঞ্জিনচালিত নৌকার প্রপেলারের আঘাতে ডলফিনটির মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মিঠাপানির স্তন্যপায়ী এই প্রাণী গেঞ্জেস বা গাঙ্গেয় ডলফিন। সাধারণত দূষণমুক্ত পরিষ্কার পানিতে এটিকে বিচরণ করতে দেখা যায়।
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ছত্তার খালের মুখ থেকে হাটহাজারী উপজেলার মদুনাঘাট পর্যন্ত নদীর প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা ডলফিনের মূল বিচরণক্ষেত্র। যে জায়গায় ডলফিনটি ভেসে ওঠে তা মদুনাঘাট থেকে এক-দুই কিলোমিটার পশ্চিমে হবে।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে আজ পর্যন্ত ২২টি ডলফিন মারা গেছে। এর মধ্যে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে মারা গিয়েছিল একটি ।
মনজুরুল কিবরিয়া আরো জানান, আগের মৃত ২১টি ডলফিন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায় নৌযানের আঘাতে এগুলোর মৃত্যু কারণ।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) ডলফিনের এই প্রজাতিটিকে অতি বিপন্ন (লাল তালিকাভুক্ত) হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
হালদা দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র। সরকার ২০১০ সালে চট্টগ্রামের নাজিরহাট থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত নদীর প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকাকে জলজ প্রাণীর অভয়ারণ্য ঘোষণা করে।