কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে হঠাৎ করে ভেসে আসছে অসংখ্য বর্জ্য। কলাতলী সায়মন পয়েন্ট থেকে দরিয়া নগর পর্যন্ত বেশ কয়েকটি পয়েন্ট সয়লাব হয়ে গেছে এসব বর্জ্যে।
প্লাস্টিকের ঝুঁড়ি, প্লাস্টিক ও কাঁচের বোতল, ছোট ছোট পরিত্যক্ত ড্রাম, দড়ি, নসাইলনের জালসহ এসব বর্জ্যে আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে সামুদ্রিক কচ্ছপসহ প্রাণী।
তবে পরিবেশবাদের ধারনা করছেন, মানুষের ফেলা এসব বর্জ্য দীর্ঘদিন সমুদ্রের তলদেশে জমা ছিল। হয়তো ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে ঢেউয়ের আঘাতে এসব এখন ভেসে উপরে ওঠে যাচ্ছে।
জালের সাথে আসা কাছিমগুলো অবমুক্ত করার জন্য কাজ করেছন সেভ দ্যা ন্যাচার অব বাংলাদেশ’ কক্সবাজার জেলা কমিটির সদস্যরা।
সেভ দ্যা ন্যাচার অব বাংলাদেশের তথ্য সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১১ জুলাই ২০২০) বিকাল থেকেই কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের দিকে ভেসে আসতে থাকে সেই প্লাস্টিক বর্জ্য আর ছেঁড়া জালগুলো।
রাত বাড়ার সাথে সাথে তীরে ভেসে আসতে থাকে শত শত মন প্লাস্টিক বর্জ্যসহ ছেঁড়া জাল। ভেসে আসা সেই জালে পেঁচানো অবস্থায় সামুদ্রিক কাছিমও ভেসে আসে সৈকতে। এরইমধ্যে দশটির বেশি সামুদ্রিক কাছিম উদ্ধার করে সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে।
উদ্ধার কাজে থাকা সেভ দ্যা ন্যাচর অব বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পারভেজ আহমেদ জানান, দড়িয়া নগর পার্ক থেকে হিমছড়ি পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে শত শত টন হবে প্লাস্টিক বর্জ্য।
যদিও এটা শধু ধারণা করে বলা। শত শত মানুষ প্ল্যাস্টিক সংগ্রহ করছে। সঙ্গে আছে জাল, গাছের গুড়িসহ নানা বর্জ্য। আমরা কাছিমগুলোকে অবমুক্ত করছি। মূলত এদের রক্ষা করার জন্য আমরা স্পটে আছি। তবে প্রশাসনের কেউ নেই।
সেভ দ্যা ন্যাচার অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আ ন ম মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, এত বর্জ্য কোথা থেকে এসেছে তা আমাদের জানা নেই।
আমাদের সংগঠনের সদস্যরা এসব বর্জ্যের সঙ্গে বিশেষ করে জালের সঙ্গে আটকা পড়া কাছিম উদ্ধার করে অবমুক্ত করছে। প্রচুর মানুষ এসব বর্জ্যের মধ্যে মূল্যবান বা প্রয়োজনীয় জিনিস খুঁজতে ভিড় করছে। অনেকে তা সংগ্রহ করছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ২০০ নটিক্যাল সমুদ্র সীমায় পর্যাপ্ত নজরদারি নেই। বিদেশি জাহাজ থেকে আমাদের জলসীমায় বর্জ্য ফেলার অভিযোগ থাকলেও সরকার কখনও তাদের শনাক্ত বা শাস্তির আওতায় আনতে পারেনি।
সমুদ্র দূষণ ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) কনভেনশনের লঙ্ঘন। তাই আমাদের এখন সমুদ্র কমিশন গঠন করে সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য ও পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা উচিৎ। সূত্র: জাগো নিউজ