‘গো গ্রিন’ প্রচারাভিযানের অংশ হিসেবে পরিচ্ছন্নতায় যোগ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মাত্র দেড় ঘণ্টায় সেন্ট মার্টিনের দেড় কিলোমিটার থেকে ১২০ কেজি (৩ মণ) প্লাস্টিক বর্জ্য পরিস্কার করলেন। এসব বর্জ্যের মধ্যে বেশি ছিল একবার ব্যবহারযোগ্য কাপ, প্লেট, চিপসের খালি প্যাকেট।
‘গো গ্রিন’ হচ্ছে প্রকৃতি সংরক্ষণের লক্ষ্যে গড়ে তোলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেচার কনজারভেশন ক্লাবের একটি কর্মসূচি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষাসফরের আওতায় এই কর্মসূচিতে অংশ নেন শিক্ষার্থীরা।
সংগৃহীত মোট ১২০ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্যের মধ্যে ৬৫ শতাংশই ছিল একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক। যার পরিমান ছিল ৭৮ কেজি। আর পুনঃপ্রক্রিয়াজাতযোগ্য প্লাস্টিক বর্জ্য পাওয়া যায় ৪২ কেজি, যা মোট বর্জ্যের ৩৫ শতাংশ। একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জ্যের মধ্যে ছিল চিপসের খালি প্যাকেট ৪৩ কেজি, প্লেট ও বক্স ২১ কেজি, কাপ ও স্ট্র ১৪ কেজি। পুনঃপ্রক্রিয়াজাতযোগ্য প্লাস্টিক বর্জ্যের মধ্যে ছিল পানি ও কোমল পানীয়ের বোতল ৩৪ কেজি এবং কারেন্ট জালের টুকরা আট কেজি।
১০ থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত তিন দিনের এই কার্যক্রমে অংশ নেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক এম নিয়ামুল নাসের, মুর্শিদা বেগম ও আমিনুল ইসলাম ভুঁইয়া। এর মধ্যে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত।এই প্রচারাভিযানে অংশ নেন ৭২ জন শিক্ষার্থী, তিনজন শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন কর্মী।
এত অল্প দূরত্বে এত পরিমাণ বর্জ্য পেয়ে হতবাক শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দ্বীপটিকে রক্ষার ব্যাপারে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। অধ্যাপক মুর্শিদা বেগম বলেন, সেন্ট মার্টিনের সামগ্রিক জীববৈচিত্র্য নানা দূষণের কারণে আজ হুমকির মুখে। তাই জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পর্যটকদের পাশাপাশি দ্বীপবাসীদেরও সচেতন হতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম নিয়ামুল নাসের জানান, দ্বীপটিকে পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়ে মানুষকে সচেতন করে তোলাই ছিল এর লক্ষ্য। যাঁরা ঘুরতে যান বা শিক্ষাসফরে যান, তাঁরা যেন দ্বীপটির যেখানে–সেখানে ময়লা ফেলে চলে না আসেন। সবাই সচেতন হলে দ্বীপটিকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে দ্বীপটির অনন্য বৈশিষ্ট্য ধরে রাখতে অবশ্যই প্লাস্টিক বর্জ্যসহ অন্যান্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় জোর দিতে হবে।