রাজধানীতে বেড়েই চলেছে পরিবেশ দূষণ।ময়লা আবর্জনা যেমন পরিবেশ দূষিত করছে তেমনি যত্রতত্র প্রস্রাব করার কারণেও দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।প্রস্রাবে উচ্চমাত্রায় অ্যাসিড এবং লবণ থাকায় মাটি, পার্শ্ববর্তী গাছপালাসহ সার্বিকভাবে পরিবেশকে দূষিত করছে। ব্যস্ত সড়কের বাতাসে বর্জ্যের এ উৎকট গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় মানুষের চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে।
যেখানে-সেখানে প্রস্রাব করার মাধ্যমে পরিবেশের ক্ষতির পাশাপাশি মানুষের মধ্যেও রোগব্যাধির প্রকোপ বাড়ছে। সড়কে যে স্থানে এ ধরনের কাজ হচ্ছে; সেখানে এবং পার্শ্ববর্তী এলাকা দূষিত হচ্ছে। আর সড়কের ওই স্থান পার্শ্ববর্তী সড়কের চেয়েও দ্রুত নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি গাছপালাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং অনেক গাছ মরে যেতে দেখা যাচ্ছে।
সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, তারা বিষয়টি নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন সময় কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন। কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে বিশেষ কোনো সাড়া না পেয়ে অনেকটা হতাশ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তারা।
রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ফুটপাত ধরে হাঁটার সময় দেখা গেছে, ফুটপাতের মাঝের গাছগুলোর গোড়ায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে প্রস্রাব জমে তা ফুটপাত ছাড়িয়ে রাস্তায় এসে পড়েছে। ফলে দুর্গন্ধে আশপাশ দিয়ে চলাচল করা কষ্টকর হয় উঠেছে।
এ বিষয়ে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় এই ধরনের কাজ যাতে না করে সেজন্য তাদের বুঝিয়েছি। রাস্তার পাশেই পাবলিক টয়লেট রয়েছে। তারা যেন ওটি ব্যবহার করে। কিন্তু তারা গাড়ি থেকে নেমে দ্রুত কাজ সারার চেষ্টা করেন। এ কারণে কষ্ট করে দূরে যেতে চান না। ফলে এটি বন্ধ করা যাচ্ছে না।’
নগর পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান জানান, এটি পরিবর্তন করা একদিনের বিষয় নয়। এ জন্য ফ্যাসিলিটিজ দ্বারা তাদের প্রভাইডেড করতে হবে। প্রয়োজনে ফ্যাসিলিটিজ বাড়াতে হবে। নিম্ন আয়ের মানুষ যারা এটার ব্যবহারকারী, তাদেরকে আস্থায় আনতে ৫ টাকার পরিবর্তে ২ টাকা করতে হবে। এছাড়া সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। সব ধরনের মিডিয়াকে বেশি বেশি প্রচার করতে হবে।বিকল্পভাবে সরকারের যেসব জায়গায় সম্ভাব্য সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। যেমন- শপিং সেন্টার এবং মসজিদগুলোকে এই ধরনের সেবার আওতায় এনে সরকারিভাবে বাজেটিং করে পাবলিক টয়লেটের উন্নয়ন করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা দরকার। এটাকে ব্যবহারে তাদেরকে যথাসম্ভব সামর্থের পরিমাণ বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে সরকার আয়ের উৎস হিসেবে মসজিদ কর্তৃপক্ষকে প্রণোদনা দেবে। সরকারকে এ ধরনের অল্টারনেটিভ সমাধান এক্সপোর্ট করতে হবে। অন্যথায় ঢাকা শহরের এ বিশাল সংখ্যক জনগণের জন্য অল্প সংখ্যক পাবলিক টয়লেট দিয়ে সমাধান সম্ভব নয়।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. সফিউল্লাহ বলেন, তারা যেন যেখানে-সেখানে এ কাজ না করে, সে জন্য পাবলিক টয়লেট করা হয়েছে। এর পরেও তারা সচেতন না হলে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।