বিশ্বকে বাঁচিয়ে রাখতে বিশ্বনেতাদের ৪ পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কার্বন নিঃসরণ কমানো, জলবায়ুর ক্ষতি প্রশমন ও পুনর্বাসনে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার ফান্ড নিশ্চিত করা, এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির দিকে বেশি মনোযোগী হওয়াসহ চারটি পরামর্শ বিশ্বনেতাদের সামনে উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মার্কিন সদ্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত জলবায়ু বিষয়ক দুদিনব্যাপী ‘লিডারস সামিটের’ উদ্বোধনী সেশনে ভিডিও বার্তায় এসব পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪০ জন বিশ্বনেতাকে এ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানান জো বাইডেন।
বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম রাখতে এবং কার্বন নিঃসরণ কমাতে উন্নত দেশগুলোকে তাৎক্ষণিক ও উচ্চাভিলাষী অ্যাকশন প্ল্যান গ্রহণ করতে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে প্রশমন ব্যবস্থার দিকে মনোযোগী হতে বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিতীয় পরামর্শটি হলো—বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা ১০০ মার্কিন ডলার তহবিল নিশ্চিত করা, এবং জলবায়ু পরিবর্তনে সকল ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের প্রতি বিশেষ মনোযোগ প্রদানের মাধ্যমে এই তহবিলের ৫০ শতাংশ অভিযোজন এবং বাকি ৫০ শতাংশ প্রশমনের জন্য কাজে লাগানো।
উদ্ভাবন ও জলবায়ুর অর্থায়নে বড় অর্থনীতির দেশ, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি সেক্টরগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
চতুর্থ পরামর্শ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবুজ অর্থনীতি ও কার্বন নিরপেক্ষ প্রযুক্তিতে ট্রান্সফার হওয়া প্রয়োজন।’
শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারি আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয়—বৈশ্বিক সংকট গুলো শুধু সবার সম্মিলিত দৃঢ় পদক্ষেপের মাধ্যমেই মোকাবিলা করা যেতে পারে।’
সম্মেলন আয়োজনের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফিরে আসা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এর সাথে সম্পৃক্ত করার আগ্রহকে বাংলাদেশ প্রশংসা করে।’
সম্পদের সীমাবদ্ধতার সঙ্গে জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ অভিযোজন এবং প্রশমনে বিশ্বে বাংলাদেশের সফলতার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘প্রতি বছর বাংলাদেশে জলবায়ু অভিযোজন এবং টেকসই অবকাঠামো নির্মাণে পাঁচ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে, যা আমাদের জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশ।’
মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত করা ১ দশমিক ১ মিলিয়ন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশে আশ্রয় এবং এর ফলে বাংলাদেশ পরিবেশের ক্ষতির কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ মুজিববর্ষ উদযাপন করছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষে সারা দেশে ৩০ মিলিয়ন গাছ লাগানোর উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
