বাংলাদেশ নদী মাতৃক দেশ এই কথাটি এখনো আমরা ব্যবহার করে চলেছি। জানি না আর কত দিন ব্যবহার করতে পারবো। এরই মধ্যে দেশের অরেক চিরচেনা নদী হারিয়ে গিয়েছে। নদীর সাথে সাথে খালও কিন্তু হারিয়েছে। বিভিন্ন কারণে বিলীন হয়ে গিয়েছে নদীগুলো। নদীর কান্না আমাদের কানে ভেসে আসে না। কিন্তু নদীতে পালতোলা নৌকা, খুব সকালে ট্রলার বা লঞ্চের শব্দ কানে এসে ভাসা, নদীতে বৈঠা নিয়ে নৌকা চালানো এরকম অনেক দেশ্য আমাদের চোখের সামনে ভাসে। খবরের কাগজ খুললে আজ চোখে পড়ে বিভিন্ন এলাকার নদী হারিয়ে যাওয়ার খবর। চোখে পড়ে ময়লা-আবর্জনা আর দখল দূষণে হারিয়ে যেতে বসেছে অমক এলাকার নদী। খবরের কাগজ দেখে মনে পড়ে আমাদের নদীরও আজ সেই একই অবস্থা। এক সময়কার অনেক উত্তাল নদী আজ হারেয় যাওয়ার পথে। যে নদীতে থৈ থৈ পানিতে ছোট ছোট নৌকা দেখা যেতে সেখানে আজ আর নৌকা দেখা যাচ্ছে না। নদীগুলো আজ পরিণত হয়েছে ফসলের ক্ষেতে।
আজ বলবো এমনই এক নদীর কথা যার নাম বড়াল নদী। বড়াল রাজশাহীর একটি নদীর নাম। একসময় এই নদীতে মাছ ধরে অনেকই জীবন জীবিকা নির্বাহ করতো। কিন্তু এখন নির্বাহ হচ্ছে অন্য উপায়ে। আর তা হচ্ছে ধান চাষ করে। আগে যারা নদীতে মাছ ধরতে আসতো তারা এখনো আসে কিন্তু তারা এখন আসে নদীর তীরে গড়ে ওঠা চায়ের দোকানে চা পান করতে। বড়ালের দুই পাশ দখলের কারণে বড়াল এখন পরিণত হয়েয়ে সরু নালায়। বাংলা একটা কথা আছে, নদী শুকালে খাল, আর খাল শুকালে নাল’ কিন্তু এখানে ঘটেছে বিপরীত এখানে একবারই নদী থেকে নালে পরিণত হয়েছে।
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার পদ্মার শাখা নদী বড়াল একসময় পানিতে ভরে ছিলো। আশপাশের অকেই এখানে মাছ ধরে সংসার চালাতো। আবার অনেকই মেটাতো মাছের চাহিদা। সেই বড়ালের জীবনে বিপদ নেমে আসে ১৯৮০ সালের দিকে বড়ালের মাঝে স্লুইস গেট দেওয়ার পর থেকে। প্রকৃতপক্ষে তখন থেকেই রূপ হারাতে থাকে খরস্রোতা বড়াল।
বড়ালের উপর দিয়ে কতকিছুই না হলো। বড়ালের সাথে দূর্নীতির কথা নাই বললাম। তবুও বলে রাখি বড়ালের সাথে অনেক দূর্নীতি হয়েছে। অবিচার করা হয়েছে বড়ালের সাথে। ২০১০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বড়াল নদীর উন্নয়নের জন্য অনেক প্রকল্প এসেছে কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে কাজে আসেনি কোন কিছু।
এখনই যদি বড়ালের পুনঃখনন না করা হয় তাহলে হয়তো একদিন মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে বড়াল। স্থানীয়দের দাবি সরাকরী উদ্যোগে এখনই বড়াল নদীর পুনঃখননের ব্যবস্থা করা হোক।