বরগুনায় অবিরাম অতিবর্ষণ আর পূর্ণিমার প্রভাবে জোয়ারের পানির চাপ বৃদ্ধি পেয়ে জেলার ৬ টি উপজেলায় ৯০টি গ্রামের লক্ষাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে আছে। এসব পরিবারের রান্না বন্ধ হয়ে পড়ায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। একই সাথে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটও সৃষ্টি হয়েছে পানিবন্দী পরিবারে। বরগুনার বদরখালী ইউনিয়নের গুলিশাখালী, মাঝের চর, ড্যামা, পাতাকাটা,ঢলুয়া ইউনিয়নের, ডালভাঙা, মোল্লার হোড়া, নলটোনা ইউনিয়নের, নলটোনা, সোনাতলা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, একটানা বর্ষন আর জোয়ারের পানিতে বসতঘর -রান্নাঘর তলিয়ে দুর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছে নারী-শিশুসহ পরিবারের সদস্যরা।
বদরখালী ইউপি সদস্য আ. রশিদ হাওলাদার ও বাচ্চু মিয়া বলেন, মাঝের চরে আমরা বেড়িবাঁধের দাবি করছি সিডরের আগে থেকেই। বেড়িবাঁধ না থাকায় সামান্য জোয়ারের পানিতে আবাসনের বসতঘর -ফসলী জমি তলিয়ে যায়। এখানের ৪-৫ শ’ পরিবার ২০- ২২ দিন পানিবন্দী হয়ে আছে। এই সকল পরিবারের রান্নাকরে খাবার অবস্থা নেই।
আমতলীর গুলিশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জানান, তার ইউনিয়নের, আঙ্গুলকাটা, খেকুয়ানী, কলাগাছিয়া, কালীবাড়ি, উত্তর কালিবাড়ী ৫টি স্লুইসগেটের ঢাকনা না থাকায় জোয়ারের পানিতে দেড় সহস্রাধিক বাড়ির বাসিন্দারা পানিবন্দী হয়ে আছে।
তালতলীর নিশানবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজি জানান, বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার তার ইউনিয়নের, জোয়ালভাঙ্গা, খুট্টারচরের বসতঘর ও ফসলী জমি তলিয়ে আছে।
বরগুনার নলটোনা ইউপি চেয়ারম্যান হুমাউন কবির জানান, বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানিতে প্রতিবছর ইউনিয়নের ৪টি গ্রামের হাজার হাজার পরিবারকে পানিবন্দী হয়ে মানবতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।
বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ পানিবন্দী বিভিন্ন বসতবাড়ী ও আবাসন পরিদর্শন করে বলেন, ইতোমধ্যে পানিবন্দী মানুষের জন্য শুকনা খাবার আর জি.আর চাউল সরবারহ করা হয়েছে। মাঝের চরের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেড়িবাঁধ দেয়ার আলাদা প্রকল্প জমা দেয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
বরগুনা সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান এমরান হোসেন রাসেল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা আক্তার প্রায় ১৫ শ’ পরিবারের সদস্যর মধ্য চিড়া, মুড়ি, গুড়সহ শুকনা খাবার বিতরণ করেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অতিদপ্তরের তথ্য অনুসারে ১ আগষ্ট থেকে ২৩ আগষ্ট সকাল ৬টা পর্যন্ত ৬৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।