পৃথিবীব্যাপী প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।তবুও এর ব্যবহার কিছুতেই যেন কমছে না; যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে প্লাস্টিক কণা।বিশেষ করে স্থলভাগের তুলনায় জলভাগে এর দূষণ সবচেয়ে বেশি।প্লাস্টিকদূষণ মানুষের সাথে প্রাণীদেরও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।প্লাস্টিক পচে না বিধায় তা সূর্যের তাপে ভেঙ্গে ছোট ছোট কণায় পরিনত হয়।আর এসব প্লাস্টিককণা পাখি, সমুদ্রের মাছ খেয়ে থাকে।যা পৃথিবীর বাস্তুসংস্থান নষ্ট করে দিচ্ছে।
তবে সম্প্রতি ভারতের একদল গবেষকদের মতে, তাঁরা প্লাস্টিকনাশক দুটি ব্যাকটেরিয়া স্ট্রেন খুঁজে পেয়েছেন য়ার মাধ্যমে প্লাস্টিক বিনাস করা সম্ভব।
পৃথিবীকে প্লাস্টিকমুক্ত করতে বিশ্বজুড়ে নানা প্রচার চলছে। এরই মধ্যে প্লাস্টিক বধের সুখবর দিলেন ভারতীয় গবেষকরা। তাঁদের দাবি, উত্তর প্রদেশের গ্রেটার নয়ডার জলাভূমি থেকে প্লাস্টিকনাশক দুটি ব্যাকটেরিয়া স্ট্রেন খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা, যা প্লাস্টিক বর্জ্য সাফ করার পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা হয়ে উঠতে পারে। ব্যাকটেরিয়ার স্ট্রেন দুটি পলিস্টাইরিনকে পচিয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিতে পারে। এরা হলো ‘এগজিগুয়োব্যাকটিরিয়াম সিবিরিকাম স্ট্রেন ডিআর১১’ ও ‘এগজিগুয়োব্যাকটিরিয়াম আনডি স্ট্রেন ডিআর১৪’।
ব্যাকটেরিয়ার স্ট্রেন দুটি খুঁজে পেয়েছেন গ্রেটার নয়ডার শিব নাদর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। নেতৃত্বে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্কুল অব নোচারাল সায়েন্স’-এর জীববিজ্ঞান বিভাগের গবেষক রিচা প্রিয়দর্শিনী। এসংক্রান্ত গবেষণাপত্র ‘রয়াল সোসাইটি অব কেমিস্ট্রি (আরএসসি) অ্যাডভান্সেস’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
এ সম্পর্কে রিচা প্রিয়দর্শিনী বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় পাওয়া তথ্য থেকে স্পষ্ট, প্লাস্টিকের রাসায়নিক গঠন ভাঙতে সক্ষম এগজিগুয়োব্যাকটিরিয়াম। ফলে প্লাস্টিক জাতীয় পণ্য থেকে পরিবেশদূষণ রুখতে ভবিষ্যতে এদের ব্যবহার করা যেতে পারে।’ তিনি আরো বলেন, ‘জলাজমিগুলোতে অণুজীব বৈচিত্র্য সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। যদিও ওই এলাকাগুলোকে নিয়ে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা হয়েছে সবচেয়ে কম। কিন্তু ভালো ব্যাকটেরিয়া খোঁজার জন্য এসব জলাজমিই আদর্শ জায়গা।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রূপমঞ্জরী ঘোষের কথায়, ‘ক্যাম্পাসের মধ্যেই জলাজমি থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছিল। কিন্তু তা থেকে যে তথ্য হাতে এসেছে, সেটা যুগান্তকারী আবিষ্কার। প্লাস্টিক-বধে সমাধান দিচ্ছে প্রকৃতিই।’