পরিবেশ রক্ষায় প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের দেশে বৃক্ষ অনেক কম। তাই সচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছর সরকারি-বেসরকারিভাবে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়, যেমন- পরিবেশ মেলা, বৃক্ষমেলা, সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি, বসতবাড়ি বনায়ন কর্মসূচি, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, ফলদ-বনজ-ভেষজ বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম, ফলদ বৃক্ষমেলা প্রভৃতি।
বর্ষাকাল জুন, জুলাই ও আগস্ট মাস গাছের চারা রোপণের উৎকৃষ্ট সময়। গাছ লাগানোর জায়গা বন্যামুক্ত, সূর্যের আলো পড়ে এবং বাতাস চলাচল করতে পারে এমন হলেই ভালো। দোআঁশ, বেলে দোআঁশ, এঁটেল দোআঁশ, উর্বর, সুনিষ্কাশিত ও উঁচু স্থানে গাছ লাগানো উত্তম।
বসতবাড়ির দক্ষিণ পাশে রোদ ও আলোর জন্য ছোট এবং কম ঝোপালো গাছ যেমন- সুপারি, নারিকেল, নিম, সজনে, দেবদারু, পেঁপে, পেয়ারা, লেবু, জাম্বুরা, ডালিম গাছ লাগানো যেতে পারে। তবে উত্তরপাশে বড় ও উঁচু গাছপালা থাকলে ঝড়-তুফান প্রতিরোধ হয়। তাই এখানে আম, কাঁঠাল, জাম, মেহেগনি, সেগুন, বাঁশ ইত্যাদি গাছ রোপণ করা ভালো। আবার বসতবাড়ির পূর্ব ও পশ্চিম পাশে মাঝারি উঁচু গাছ যেমন- কুল, সফেদা, আম্রপলি, লিচু, খেজুর, তাল, আতা, বেল, পেয়ারা প্রভৃতি গাছ লাগালে সারাদিন বসতবাড়ির আঙিনায় আলো পাওয়া যায়। এছাড়াও বিভিন্ন অফিস, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের আঙিনায় শোভাবর্ধনকারী ও ছায়াপ্রদানকারী গাছ যেমন- কৃষ্ণচূড়া, শিমুল, পলাশ, সোনালু, জারুল, বকুল, নাগেশ্বর, বকফুল, নারিকেল, পাম, দেবদারু, ঝাউ, প্রভৃতি গাছ লাগানো যায়। তবে হাট-বাজারে ছায়াপ্রদানকারী গাছ যেমন- বট-পাকুড়, কৃষ্ণচূড়া প্রভৃতি লাগানো ভালো।
অনেকেই বাসার বারান্দায়, সিঁড়ির পাশে, বসার ঘরে গাছের টব রাখতে দেখা যায়। এমনকি অফিসের ডেস্কেও কেউ কেউ সাজিয়ে রাখেন- ‘ইনডোর প্ল্যান্ট’। নগরীতে বাড়ির ছাদে পরিকল্পিতভাবে ছাদবাগান করা যায়। বিভিন্ন ধরনের ফলগাছ যেমন- লেবু, পেয়ারা, কুল, জাম্বুরা, ডালিম, লিচু প্রভৃতি গাছ লাগানো যায়। এছাড়াও ঘরের ভেতরে শোভাবর্ধনকারী গাছ লাগানো যেতে পারে।
বৃক্ষরাজি আবহাওয়ার তাপমাত্রা হ্রাস করে, বাতাসে আর্দ্রতা বাড়ায় ও ভূমিক্ষয় রোধ করে। তাই পরিবেশ রক্ষায় গাছ লাগানোর কোনো বিকল্প নেই।