27 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
বিকাল ৫:৩৯ | ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
অন্যান্য

নবায়নযোগ্য শক্তি: সৌর ও বায়ুবিদ্যুতে পরিবেশদূষণের ঝুঁকি নেই

দেশে কয়েক মাসের মধ্যেই কয়েকটি সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদন শুরু করবে। জোরেশোরে কাজ চলছে আরও কয়েকটি কেন্দ্রের। এর বাইরে একটি বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিকল্পনাও অনেক দূর এগিয়েছে। সব মিলিয়ে আগামী কয়েক বছরে বিদ্যুৎ খাতে নবায়নযোগ্য শক্তিনির্ভর বিদ্যুতের হিস্যা বাড়বে।

এখন মোট ২৩টি নবায়নযোগ্য শক্তিনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিভিন্ন পর্যায়ের কাজ চলছে। এসব কেন্দ্রের সম্মিলিত উৎপাদনক্ষমতা ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫৫০ মেগাওয়াট।

সৌর ও বায়ুবিদ্যুতে পরিবেশদূষণের ঝুঁকি নেই। সৌরবিদ্যুতের ইউনিটপ্রতি খরচও কমে আসছে। এখনই জ্বালানি তেলের চেয়ে সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কম। তাই নবায়নযোগ্য শক্তি এখন বাড়তি মনোযোগ পাচ্ছে। বিপরীতে সরকার বিপুল উৎপাদন ক্ষমতার কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা থেকে কিছুটা হলেও সরে আসার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

অবশ্য সরকারের পরিকল্পনা যথাসময়ে বাস্তবায়িত হলে এত দিনে দেশে নবায়নযোগ্য শক্তিনির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন অনেক বেশি হতো। ২০১০ সালে জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা করেছিল সরকার। ওই পরিকল্পনায় ২০২১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে দেশের মোট বিদ্যুতের ১০ শতাংশ উৎপাদনের কথা ছিল, যদিও তা হয়নি।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, সরকার নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে অনেকগুলো বেসরকারি কোম্পানিকে কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিয়েছিল। জমি নিয়ে জটিলতায় তারা যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারেনি। এখন সরকার নিজেই সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে। ভবিষ্যতে নবায়নযোগ্য শক্তিনির্ভর বড় বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র আসবে।

দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ২০ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। এ অনুপাতে নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে উৎপাদিত হওয়ার কথা ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। কিন্তু এখন সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনক্ষমতা মাত্র ৬৩ মেগাওয়াট।

এর মধ্যে টেকনাফে ২০, রাউজানে ২৫, জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ৩, পঞ্চগড়ে ৮ ও কাপ্তাইয়ে ৭ মেগাওয়াটের সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্র বিগত কয়েক বছরে উৎপাদনে এসেছে। বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র এখন একটিও নেই। জলবিদ্যুৎকেন্দ্র আছে একটি। সেটি পাকিস্তান আমলে নির্মিত কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। এর উৎপাদনক্ষমতা ২৩০ মেগাওয়াট।

২০১০ সালের পর থেকে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় নবায়নযোগ্য শক্তিনির্ভর ৪০টির বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমিত দিয়েছিল। এখন ২৩ কেন্দ্রের অনুমতি বহাল আছে। বাকিরা সময়মতো কাজ করতে না পারায় অনুমতি বাতিল করা হয়। অনুমতি থাকা ১১টি নবায়নযোগ্য শক্তিনির্ভর কেন্দ্রের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) হয়েছে।

বাসাবাড়ি ও অফিসে সোলার হোম সিস্টেম বসিয়ে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করা হয়। টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) হিসাবে, বাংলাদেশে প্রায় ৫৮ লাখ সৌরবিদ্যুৎ বা সোলার হোম সিস্টেম রয়েছে। এ থেকে প্রায় ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসে।

কাজ এগিয়েছে যেসব কেন্দ্রের
নতুন দুটি সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র এ বছরই উৎপাদনে আসবে, তা প্রায় নিশ্চিত। একটি সরকারি নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এনডব্লিউপিজিসিএল) সাড়ে ৭ মেগাওয়াটের কেন্দ্র। এটি সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর তীর ঘেঁষে নির্মাণ করা হয়েছে। আগামী মাসে কেন্দ্রটি উৎপাদনে আসতে পারে। আরেকটি ময়মনসিংহে, যার উৎপাদনক্ষমতা ৫০ মেগাওয়াট। মালয়েশিয়াভিত্তিক ডিট্রোলিক সোলারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান আইএফডিসি সোলার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করছে। এটির নির্মাণকাজও শেষ পর্যায়ে।

আগামী বছরের মধ্যে উৎপাদনে আসতে পারে বাগেরহাটের মোংলা ও ফেনীর সোনাগাজীতে নির্মাণাধীন দুটি সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র, যার উৎপাদনক্ষমতা ১০০ মেগাওয়াট করে। মোংলারটি নির্মাণ করছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের এনারগন টেকনোলজিস ও চায়না সানেরজি কোম্পানি লিমিটেড। ফেনীর সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রটি তৈরি করছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মেতিতো ইউটিলিটিস, চীনের জিনকো পাওয়ার টেকনোলজি ও সৌদি আরবের আল জোমাইয়া এনার্জি অ্যান্ড ওয়াটার কোম্পানি।

নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন ও চীনের সরকারি কোম্পানি সিএমসির যৌথ উদ্যোগে সিরাজগঞ্জে ১০০ মেগাওয়াট ও পাবনার সুজানগরের রামকান্তপুরে পদ্মা নদীর চরে ৬৫ মেগাওয়াটের দুটি সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ অনেক দূর এগিয়েছে।

এদিকে নর্থওয়েস্ট ও সিএমসি মিলে পটুয়াখালীর পায়রায় ২০০ মেগাওয়াটের একটি বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা শেষ হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য প্রতি সেকেন্ডে গড়ে বাতাসের গতিবেগ দরকার আড়াই মিটার। পায়রায় তা ৪ মিটারের বেশি পাওয়া গেছে। পায়রার বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণকাজ আগামী বছরের মধ্যে শেষ করতে চায় নর্থওয়েস্ট ও সিএমসি।  সূত্র: প্রথম আলো

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত