24 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ১২:৪০ | ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষ স্থানগুলো ঘুরেফিরে ঢাকা-দিল্লি-লাহোর
পরিবেশ দূষণ

দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষ স্থানগুলো ঘুরেফিরে ঢাকা-দিল্লি-লাহোর

দেখা যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষ স্থানটি ছয়টি শহরের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। কখনো ঢাকা, আবার কখনো দিল্লি।পিছিয়ে নেই করাচি, কলকাতা, লাহোরও । দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে এসব শহরের নাম ওঠানামা করছে। শীর্ষ ১০ দূষিত বায়ুর শহরের তালিকা করলে চীনের বেইজিং, মঙ্গোলিয়ার উলানবাটর, উজবেকিস্তানের তাসখন্দ ও ভিয়েতনামের হ্যানয় শহরের নাম আসবে। বিশ্বের বায়ুদূষণ পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়ালের পর্যবেক্ষণে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

ঢাকা শহরের বায়ুর মান এক মাস ধরেই অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে। তবে তা আবার সময়ে সময়ে বদলাচ্ছে। কখনো অস্বাস্থ্যকর, কখনোবা খুবই অস্বাস্থ্যকর, আবার কখনো মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে উঠছে এই শহরের বায়ু। তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে শহরের বাতাসে ভাসমান ভারী বস্তুকণা পিএম ২.৫ ও পিএম ১০-এর পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। শহরের চারপাশের ইটভাটাগুলোর ধোঁয়া, শহরজুড়ে নির্মাণকাজের খোঁড়াখুঁড়ি আর যানবাহনের কালো ধোঁয়া এসব দূষণ ঘটাচ্ছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্বের যেসব শহরে বায়ুদূষণ কমানো হয়েছে, সেখানে কঠোর আইন করা হয়েছে। আর তা বাস্তবায়নে সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় আনা হয়েছে। আমাদের এখানে এখনো বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ আইনটাই হয়নি। আর ঢাকাসহ দেশের বেশির ভাগ শহরের বায়ুদূষণের উৎসগুলো আমরা জানি। স্বল্পমেয়াদি উদ্যোগে তা দূর করা সম্ভব। যেমন—শীতকালে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নির্মাণকাজের ধুলা বেড়ে যায়। এমনকি মেট্রো রেলের মতো সরকারের বড় প্রকল্পগুলো থেকেও প্রচুর ধুলা বের হচ্ছে। কিন্তু তাদের নিয়ন্ত্রণে কোনো সরকারি দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখি না।’ যানবাহন থেকে কালো ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণেও কাউকে মাঠে দেখা যায় না। তাহলে বায়ুদূষণ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ হবে? সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি।

শতভাগ দূষিত বায়ুর শীর্ষ পাঁচে বাংলাদেশ

বৈশ্বিক বায়ুদূষণের ঝুঁকিবিষয়ক ‘দ্য স্টেট অব গ্লোবাল এয়ার-২০১৯’ শীর্ষক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বিশ্বের যে পাঁচটি দেশের শতভাগ মানুষ দূষিত বায়ুর মধ্যে বসবাস করে, তার একটি বাংলাদেশ। আর বায়ুদূষণজনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ পঞ্চম। এ কারণে ২০১৭ সালে দেশে মারা গেছে ১ লাখ ২৩ হাজার মানুষ। বিশ্বে বায়ুদূষণের কারণে হৃদরোগ, শ্বাসকষ্টজনিত জটিল সমস্যা, ফুসফুসে সংক্রমণ ও ক্যানসারের মতো রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষত শিশু ও গর্ভবতী নারীরা বায়ুদূষণের সবচেয়ে বেশি শিকার হচ্ছেন। ইটভাটা, অবকাঠামো নির্মাণ ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়া ধোঁয়া ও ধুলার কারণে ওই দূষণ ঘটছে।

এয়ার ভিস্যুয়াল নামের সংস্থাটি ঢাকার মোট ছয়টি স্থানের বায়ুর মান পর্যবেক্ষণ করে থাকে। গুলশান, মিরপুরের রোকেয়া সরণি, বারিধারা, উত্তরা ও নর্দ্দা এলাকায় বাংলাদেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে স্থাপন করা যন্ত্র থেকে তারা ঢাকার বায়ুর মান পর্যবেক্ষণ করে থাকে। এসব স্থানে স্থাপন করা যন্ত্র থেকে প্রতি ঘণ্টায় পাওয়া তথ্য তারা তাদের ওয়েবসাইট ও অ্যাপসের মাধ্যমে তুলে ধরে। ওই পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, সকাল থেকে আজ বেলা একটা পর্যন্ত সময়ে রাজধানীর সবচেয়ে দূষিত বায়ু ছিল গুলশান এলাকায়। সেখানকার বায়ুর মানের সূচক ছিল ২৪০ থেকে ১৮০ পর্যন্ত। অর্থাৎ, তা খুবই অস্বাস্থ্যকর। এর পর পর্যায়ক্রমে খারাপ ছিল মিরপুরের রোকেয়া সরণি, বারিধারা ও উত্তরা এলাকার বায়ুর মান। তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে কম দূষিত ছিল নর্দ্দা এলাকার বায়ুর মান।

এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ুর মান বিভাগের পরিচালক জিয়াউল হক প্রথম আলোকে বলেন, তাপমাত্রা কমতে থাকলে বাতাসে ভারী বস্তুকণার পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে বাতাস দূষিত হতে শুরু করে। কোনো একটি একক সংস্থা বা উৎস থেকে রাজধানীর বায়ুদূষণ হচ্ছে না। নানা উৎস থেকে দূষণকারী পদার্থ বের হয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরের বায়ুতে মিশছে। ফলে পরিবেশ অধিদপ্তরের একার পক্ষে এসব উৎস বন্ধ করা সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, ‘আমরা ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি। তবে সরকারের অন্য বিভাগগুলোকে যুক্ত করে তাদের দূষণ কমানোর উদ্যোগে যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছি।’

১১ জেলার ১০টির বায়ুর মান খারাপ

পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ুর মান পর্যবেক্ষণের জন্য দেশের ১১টি জেলায় পর্যবেক্ষণযন্ত্র বসানো হয়েছে। ওই যন্ত্রের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী গত অক্টোবর থেকে রাজধানী, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদীর বায়ুর মান অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, সাভারের বায়ু ছিল খুবই অস্বাস্থ্যকর। আর কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, রাজশাহীর বায়ু ছিল অস্বাস্থ্যকর। মাঝারি মানের বায়ুর মান ছিল সিলেট, চট্টগ্রাম শহরে। খুলনা শহরের বায়ুর সাবধান থাকার মতো।

পরিবেশ অধিদপ্তরের বাতাসের মান পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত বছর ১৯৭ দিন রাজধানীবাসী দূষিত বাতাসে ডুবে ছিল। আগের বছরগুলোতে রাজধানীর বাতাস বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে ১২০ থেকে ১৬০ দিন দূষিত থাকত। অর্থাৎ ঢাকার বায়ুদূষণ সময়ের বিবেচনায়ও বিপজ্জনক হারে বাড়ছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জানায়, সরকারি সংস্থাগুলোকে এখনো বায়ুদূষণ রোধে কোনো উদ্যোগ কার্যকর উদ্যোগ নিতে দেখা যাচ্ছে না। বায়ুদূষণের কারণে দেশের মানুষের মধ্যে রোগবালাই বাড়ছে। বিশেষ করে গরিব পরিবারগুলো এবং শিশু ও বৃদ্ধরা এসব বায়ুদূষণের সবচেয়ে বড় শিকারে পরিণত হচ্ছে, যা দেশে ক্রমশ বায়ুদূষণজনিত একটি মানবিক বিপর্যয় তৈরি করছে। সূত্র: প্রথম আলো

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত